গাইবান্ধায় ডিসিকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ
স্টাফ রিপোর্টার, গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় সাংবাদিকসহ সবার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী নাহিদ রসুলকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার বেলা ১২টা থেকে দুপুর একটা পযর্ন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী শহরের ডিবি রোডের নাট্য সংস্থার সামনে গাইবান্ধা সচেতন নাগরিক ও সুশীল সমাজের ব্যানারে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পরে আন্দোলনকারীরা শহরের প্রধান সড়ক ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে কিছু সময়ের জন্য সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় কিছুক্ষণের জন্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। মানববন্ধনে আইনজীবী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের দেড় শতাধিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।এতে সভাপতিত্ব করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক দৈনিক যুগান্তর ও মাছরাঙা টেলিভিশনের গাইবান্ধা প্রতিনিধি সিদ্দিক আলম দয়াল। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আমিনুল ইসলাম গোলাপ, জাতীয় শ্রমিক জোটের গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ বাবু, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন, আইনজীবী সালাউদ্দিন কাশেম, মানবাধিকার কর্মী দিবা বেগম, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সৈয়দ নুরুল আলম জাহাঙ্গীর, শামীম আল সাম্য, কায়ছার প্লাবন, ওমর ফারুক রনি, বিপ্লব ইসলাম, জাভেদ হোসেন, ডিপটি প্রধান, মিলন মণ্ডল, ফারহান শেখ, মানিক সাহা, রফিক খন্দকার, ইমরান মাসুদসহ আরও অনেকে।জেলা প্রশাসকের বদলির দাবি তুলে বক্তারা উল্লেখ করেন, গাইবান্ধায় যোগদানের পর থেকে জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল স্থানীয় সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ সবার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন তিনি। বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে তার কক্ষে দেখা করতে গেলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দর্শনার্থীরা তার নিয়োগ করা সহকারী কমিশনার (এপিএস) কাছে স্লিপের মাধ্যমে সাক্ষাতের কারণ উল্লেখ করতে হয়। স্লিপ পাঠিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও তার সঙ্গে স্বাক্ষাতের অনুমতি পাওয়া যায় না। সপ্তাহে একদিন গণশুনানি করা বাধ্যতামূলক থাকলেও যোগদানের পর থেকেই তা অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন তিনি।জেলায় বর্তমানে শতাধিক অবৈধ ইটভাটা পরিচালিত হলেও অজ্ঞাত কারণে দুই-চারটি ছাড়া বেশির ভাগ ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। জেলার সর্বত্র অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধেও কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি তিনি।এদিকে জেলা প্রশাসকের আচরণে তার কার্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীও তার প্রতি মনক্ষুণ্ন। জেলা প্রশাসকের আচরণে সরকার ও জনপ্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাই তাকে বদলি করা গাইবান্ধাবাসীর সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘বিগত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগেও জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের নির্বাচনী তথ্য প্রদানে অসহযোগিতা করেন। এসব ঘটনায় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুলকে বদলির দাবি জানিয়ে দেশের প্রথম সারির জাতীয় পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল, স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন গণমাধ্যমের ২১ সাংবাদিক সিইসিকে আবেদন জানান। যা প্রতিবেদন আকারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এছাড়া একই দাবিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী, ১১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং জনপ্রশাসন সচিব বরাবর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের ৪২ নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র পাঠানো হয়। তাতেও কোনো কাজ হয়নি।মানববন্ধন থেকে সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের খবর প্রকাশ না করার ঘোষণা দেন। তারা জানান, জেলা প্রশাসকের বদলি না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এছাড়া অনতিবিলম্বে জেলা প্রশাসককে বদলি করা না হলে আরও বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।