ফতুল্লায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের ওপর হেলমেট বাহিনীর হামলা
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় শ্রমিকদের অনুপস্থিতির বিষয় মালিকপক্ষ জানতে চাওয়ায় পৃথক দুটি রপ্তানিমুখী পোষাক কারখানায় শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এসময় আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে সাধারণ শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে কয়েকটি কারখানার গ্লাস ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তখন অন্যান্য গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয় এবং সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি গিয়ে শ্রমিকদের শান্ত করেন।১৯ জানুয়ারি রোববার দুপুরে ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় টাগারপাড় এলাকায় অবস্থিত আরএন টেক্স ও শাসনগাঁও এলাকায় মাদার কালার গার্মেন্টসে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে শ্রমিক আন্দোলন ঠেকাতে শ্রমিকদের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হেলমেট বাহিনীকে হামলা করতে দেখা গেছে। গার্মেন্টসের একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে প্রায় ১০-১২ জন হেলমেট পরহিত যুবককে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর হামলা করতে দেখা যায়। শ্রমিকদের উপর হামলাকারী এই এই হেলমেটধারী কে বা কারা তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। শ্রমিকদের উপর হেলমেট বাহিনীর হামলার সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্য ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শিল্পাঞ্চলের ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।জানা যায়, ফতুল্লার মাদার কালার গার্মেন্টসে রিপন নামের একজন অপারেটর চারদিন অনুপস্থিত থাকার কারণে শনিবার লাইন সুপারভাইজার মিজান তাকে ধমক দিয়েছিল। এতে মিজান ও রিপনের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এনিয়ে মাদার কালারের শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে পাশের বেস্ট স্টাইল গার্মেন্টসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে শ্রমিকদের বের করে বাহিরে নিয়ে যায়। তখন পাশের আরএস নামে আরেকটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা আন্দোলনকারীদের সাথে যোগ না দিয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে দুই পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ, সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।মাদার কালার গার্মেন্টসের অ্যাসিস্ট্যান্ট এডমিন ম্যানেজার শাহনেওয়াজ জানান, মাদার কালার গার্মেন্টসের গেটে ছুটির নোটিশ টানানো হয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে আসলে গার্মেন্টস খোলা হবে।অপরদিকে টাগারপাড় এলাকায় অবস্থিত আরএন টেক্স গার্মেন্টসে একজন আয়রনম্যান কাজে অনুপস্থিত থাকায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। এতে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ম্যানেজার এডমিনকে লাঞ্ছিত করে। এনিয়ে মালিকপক্ষ ৫৭ জন শ্রমিক ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে শ্রমিকরা প্রতিবাদ জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় পুলিশ, সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশের এসপি আসাদুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করা হবে।