• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১লা আশ্বিন ১৪৩১ রাত ০১:৫৩:৫৮ (17-Sep-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১লা আশ্বিন ১৪৩১ রাত ০১:৫৩:৫৮ (17-Sep-2024)
  • - ৩৩° সে:

হারিয়ে যাচ্ছে খাগড়াছড়ির ঐতিহ্য বাঁশ ও বেত শিল্প

বিপ্লব তালুকদার, খাগড়াছড়ি: বাড়ির পাশে বাঁশঝাড় কিংবা বেতবনের ঐতিহ্য গ্রামবাংলার চিরায়ত রূপ। কিন্তু বনাঞ্চলের বাইরেও এখন যেভাবে গ্রামীণ বৃক্ষরাজি উজাড় হচ্ছে তাতে হারিয়ে যাচ্ছে এ জাতীয় গাছপালা।এক সময় এ দেশেরই বিস্তীর্ণ জনপদে বাঁশ-বেতে তৈরি হতো হাজারো পণ্য। ঘরের কাছের ঝাড় থেকে তরতাজা বাঁশ-বেত কেটে গৃহিণীরা তৈরি করতেন হরেক রকমের জিনিস। এখন সেই বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্যের আর কদর নেই বললেই চলে।ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এই শিল্পটি। এক সময় গ্রামীণ জনপদের মানুষ গৃহস্থালি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে বেত ও বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করত। বাসা বাড়ি কিংবা অফিস-আদালত সব খানেই ব্যবহার করা হতো বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবপত্র। এখন সময়ের বিবর্তনে বদলে গেছে সবকিছুই। এর ব্যতিক্রম নয় খাগড়াছড়ি জেলাও। তারপরও খাগড়াছড়ি জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার গুটি কয়েক মানুষ জীবন ও জীবিকার তাগিদে বাঁশ আর বেতের শিল্পকে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন।বর্তমান প্রযুক্তির যুগে চাঁদপুরে বাঁশ ও বেত শিল্পের তৈরি মনকারা বিভিন্ন জিনিসের জায়গা করে নিয়েছে স্বল্প দামের প্লাস্টিক ও লোহার তৈরি পণ্য। তাই বাঁশ ও বেতের তৈরি মনকারা সেই পণ্যগুলো এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। কদর না থাকায় গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় আকর্ষণীয় আসবাবপত্র।অভাবের তাড়নায় এই শিল্পের কারিগররা দীর্ঘদিনের বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে আজ অনেকে অন্য পেশার দিকে ছুটছে। শত অভাব অনটনের মাঝেও জেলায় হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার আজও পৈতৃক এই পেশাটি ধরে রেখেছেন।জেলার বিভিন্ন এলাকায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সময় এ অঞ্চলের অনেক মানুষ বাঁশ-বেত দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু বর্তমানে বাঁশ-বেত নেই বললেই চলে।এছাড়া তৈরি পণ্যের ন্যায্য মজুরিও পাওয়া যাচ্ছে না। উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং বাজারে প্লাষ্টিক সামগ্রীর দাপটে চারুশিল্পের চাহিদা দিন-দিন কমে যাওয়ার কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে বেত ও বাঁশের তৈরি চারুশিল্প। তাই খাগড়াছড়ির প্রসিদ্ধ বাঁশ শিল্পীরা তাদের ভাগ্যের উন্নয়ের জন্য বাপদাদার রেখে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী পেশা ছেড়ে বেছে নিচ্ছে অন্য পেশা।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাঁশ-বেত শিল্প হয়তো আগামী দিনে এ অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে মুক্তি পেতে আমাদের জন্য বাঁশ-বেত বাগান টিকিয়ে রাখা জরুরি। সরকারি কোন সহায়তা পেলে হয়তো ফিরে পেতে পারে গ্রামগঞ্জের এই চিরচেনা শিল্পটি বলছেন বিশ্লেষকরা  ।এখনো বাঁশ ও বেতের পণ্যের চাহিদা থাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ি এলাকায় ও হাট বাজারসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বাজারে এর কদর রয়েছে ব্যাপক। বাজারগুলোতে বাঁশ ও বেতের তৈরি কুলা, চালুন, খাঁচা, মাচা, মই, চাটাই, ঢোল, গোলা, ওড়া, বাউনি, ঝুঁড়ি, ডুলা, মোড়া, মাছ ধরার চাঁই, মাথাল, সোফাসেট, বইপত্র রাখার র‌্যাকসহ বিভিন্ন পণ্য সাজিয়ে বসে আছেন এ পেশার কারিগররা।