শাল্লায় সরকারি জায়গা দখল করে চাঁদা আদায়, বিপাকে বাজার ব্যবসায়ীরা
শাল্লা (সুনামগঞ্জ): প্রতিনিধি: কালনী নদীর ভাঙ্গণে বিলিন হয়ে যায় সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার প্রতাপপুর বাজারটি। সবকিছু হারিয়ে পথে বসে ব্যবসায়ীরা। এরপরও থেমে নেই জীবনযুদ্ধ। ব্যবসায়ীদেরকে ব্যবহার করে একটি সিন্ডিকেট চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। সরকারি জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করে ব্যবসায়ীদের বসিয়ে মাসে মাসে আদায় করছেন ঘর ভাড়ার নামে চাঁদা। আবার অনেকেই দিতে অস্বীকার করলে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা হচ্ছেন প্রতাপপুর গ্রামের ফুলচাঁন দাস, নিত্যানন্দ দাস নিতাই, প্রভাংশু দাস ও রবীন্দ্র দাস।জানা যায়, সরকারের বন্দোবস্ত ছাড়াই সরকারি জমিতে দোকান কোটা তৈরি করে এই সিন্ডিকেট চক্রটি আট বছর ধরে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছেন। সরকারি জায়গা হতে ভাড়া আদায় করলেও সরকারকে কোনো টাকা দিচ্ছে না চক্রটি। এর মধ্যে ফুলচাঁন দাস ১১টি, নিত্যানন্দ দাস নিতাই ৩টি, প্রভাংশু দাস ১টি ও রবীন্দ্র দাস ৪টি দোকান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ভাড়া আদায় করছেন।সরজমিনে প্রতাপপুর বাজারের ব্যবসায়ী কিশোর দাসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি পাঁচ বছর ধরে এ দোকানে ব্যবসা করছি। ফুলচাঁন দাসকে প্রতিমাসে দুই হাজার টাকা দোকান ভাড়া দিয়ে আসছি এবং ত্রিশ হাজার টাকা জামানত হিসেবে অগ্রিমও দিয়েছি।ফার্মেসি ব্যবসায়ী ক্ষিতিন্দ্র দাস জানান, তিনিও নিত্যানন্দ দাস নিতাইকে মাসিক ভাড়া দিয়েই ব্যবসা করছেন।ব্যবসায়ী প্রসেনজিৎ দাস বলেন, তিনিও ফুলচাঁন দাসকে মাসিক ভাড়া দিয়েই ব্যবসা করে আসছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, প্রতাপপুর বাজারটি সরকারি কোনো মহলের নজরদারি থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই ওইসব লোকদের মাসিক ভাড়া দিয়েই তাদের ব্যবসা করতে হচ্ছে।বাজারের আরেক ব্যবসায়ী রানু চন্দ্র দাস বলেন, উনার ব্যবসা পরিচালনার বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলায় অবৈধ দখলদার প্রভাংশু দাস ব্যবসায়ী রানুকে একদিনের মধ্যে দোকানের মালামাল সরাতে হুমকি দিয়ে আসছে।তবে প্রভাংশু দাস হুমকি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ঠিকই বলেছেন। আমি সরকারি জায়গায়ই দোকান করেছি। তাই ভাড়া নিচ্ছি।এসব বিষয়ে অবৈধ দখলদার ফুলচাঁন দাসের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ঢাকায় একজন রোগী নিয়ে ব্যস্ত আছি। সপ্তাহ খানেক পর এসে আপনার সাথে দেখা করবো। তবে প্রতাপপুর বাজারের সরকারি জমিতে আপনার ১১টি দোকান ঘর থাকার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা সরকারি জমি না, আমার ব্যক্তিমালিকানা জমিতে দোকান তৈরি করেছি।এ ব্যাপারে নিত্যানন্দ দাস নিতাইয়ের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে বার বার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো, আলা উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে।