• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৮:২৮:০৩ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৮:২৮:০৩ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

ভোলায় অবাধে ধ্বংস করা হচ্ছে শত প্রজাতির পোনা

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বোরহানউদ্দিন, দৌলতখাঁন, তজুম‌দ্দিন, লাল‌মোহন, চরফ‌্যাশন, উপজেলার মেঘনা নদী ও জেগে ওঠা ডুবোচরে অবাধে মশারি জাল, বিহিন্দীসহ নানা প্রকার বাহারী জাল দিয়ে নির্বিচারে চিংড়ির রেণু (গলদা, বাগদা চিংড়ি) সহ শত প্রজাতির রেনু নিধনের মহোৎসব চলছে। এসব রেণু ধরতে গিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য মাছের রেণু ধ্বংস হচ্ছে প্রতিদিন।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌ-পু‌লিশসহ সং‌শ্লিষ্ট প্রশাস‌নকে ম্যানেজ করে এসব নিষিদ্ধ রেণু সড়ক ও নদীপথে বড় বড় ড্রাম কিংবা পাতিল ভর্তি করে খুলনা, বাগেরহাট, বাউফল, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান করছে একটি প্রভাবশালী চক্র।মৎস্য্য অধিদফতর বলছে, একটি চিংড়ির রেণু (পিএল-পোস্ট লাম্বা) ধরার জন্য অন্য প্রজাতির নয় থেকে ১২টি রেণু ধ্বংস করা হচ্ছে। এর মধ্যে দুইশত প্রজাতির মাছ, বিভিন্ন প্রকারের জলজপ্রাণী ও খাদ্যকণা প্রতিদিন ধ্বংস হচ্ছে। ক্রমশ ভেঙে পড়ছে জলজপ্রাণীর বাস্তুসংস্থান বা আন্তঃনির্ভরশীলতা।আর এ কারণেই ২০০১ সালে সরকার বাগদা ও গলদা প্রজাতির রেণু আহরণ ও সংরক্ষণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, জেলা ও উপজেলা মৎস্য্য অফিস বলছে, তাদের নজরদারি আছে। ত‌বে বাগদা, গলদা নিধ‌নে জেলা মৎস্য্য, কোস্টগার্ড কিংবা জেলা প্রশাসন, নৌ পুলিশ বা উপজেলা মৎস্য, উপজেলা প্রশাস‌নের কোন অভিযান চল‌তি মৌসু‌মে চো‌খে প‌ড়ে‌নি।প্রভাবশালী ও আড়তদাররা দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে অভাবগ্রস্ত লোকজনকে পোনা শিকার করতে বাধ্য করছে। অভিযোগ উঠেছে, অজ্ঞাত কারণে স্থানীয় মৎস্য্য বিভাগ, নৌ-পু‌লিশ, কোস্টগার্ড এদিকে কোনো নজরদারি দি‌চ্ছেন না। মেঘনা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, অসংখ্য মানুষ রেণু শিকারের সঙ্গে শত শত প্রজাতির মাছ নিধন করছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেনু সংগ্রহকারী একাধিক জেলে জানান, তারা অবাধে রেণু সংগ্রহ করতে পারছেন কেউ বাধা দিচ্ছেন না। স্থানীয় প্রশাসনকে ১৫ দিন বা একমাস পর পর টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে যেতে হয় জেলে বা দিতে হয় জরিমানা। বর্তমানে কেউ কিছু বলেন না। প্রতি হাজার রেণু ১৪০০ টাকা বিক্রি করেন। যার বাজার মূল্য দুই হাজার থেকে ২৫০০ টাকা রয়েছে।রেনু নিধনের ঘাটনাগু‌লো ঘটছে, বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমুদ্দিন ঘাট, মৃজাকালু মাছঘাট, স্লুইস গেট ঘাট, নবাব মিয়ার হাটঘাট, আলীমুদ্দিন ঘাট ও বাংলাবাজার ঘাট, তজুমদ্দিন উপ‌জেলার সোনাপুর স্লুইজ ঘাট, তজুম‌দ্দিন মাছ ঘাট, লাল‌মোহন উপ‌জেলার কাটাখা‌লি ঘাট , লাল‌মোহন মঙ্গল সিকদার ঘাট, লাল‌মোহন বা‌তির খাল ঘাট , চরফ‌্যাশন উপ‌জেলার বেতুয়া ঘাট, চরফ‌্যাশন বড় স্লুজই‌ ঘাট (বেতুয়া) ও দ‌ক্ষিন আইচা পাঁচ কপাট ঘাট ।এছাড়া মেঘনার বেড়িবাঁধের ওপর চরফ‌্যাশন, লাল‌মোহন তজুমদ্দিন, বোরহানউ‌দ্দিন ,দৌলতখাঁন উপজেলার সীমানার মধ্যে কয়েকশ’ রেণু কেনার অস্থায়ী অবৈধ আড়ত দেখা গেছে।প্রতিবার জাল ফেলে সাত থেকে আটটি চিংড়ির রেণু পেলেও তার সঙ্গে উঠে আসছে শত শত প্রজাতির অসংখ‌্য মাছের পোনা। চিংড়ি পোনা আলাদা করে ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, কলস ও অন্যান্য পাত্রে জিইয়ে রাখে। তবে অন্য প্রজাতির মাছের পোনাগুলো ডাঙায় অথবা চরে ফেলে দেয়ায় সেগুলো মারা যাচ্ছে।অনুসন্ধা‌নে স‌রেজ‌মি‌নে গি‌য়ে দেখা যায়, এ সকল গলদা, বাগদার রেনু ট্রলা‌রে ক‌রে প্রতি‌দিন সন্ধ‌্যা থে‌কে গভীররাত পর্যন্ত পাচার হয় লাল‌মোহন উপ‌জেলার গজা‌রিয়া খাল‌গোড়া, না‌জিপুর লঞ্চ ঘাট ও দেবীর চর বড় পো‌লের নিচ দি‌য়ে।এ বিষয়ে জেলা মৎস্য্য কর্মকতা বিশ্ব জিৎ দেব বলেন, ভোলা জেলা মৎস্য্য কর্মকতা বিশ্ব জিৎ দেব সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, গলদা রেণু নিধনে বেশিরভাগ নারী ও শিশু জেলে কাজ করছে। তারা নিজেদের জীবিকা নির্বাহের জন্য এসব করে উপার্জন করে।আমরা দৌলতখানে আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি, এছাড়াও বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান, লাল‌মোহন, তজুমদ্দিন, চরফ‌্যাশনে আজ থেকে কঠোরভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে তবে আর্থিক লেনদেন ও ম্যানেজের বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি।ভোলা জেলা কোস্টগার্ডের দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকতা লেফটেন্যান্ট  কর্নেল হারুন-অর-রশীদ বলেন, অবৈধ গলদা-বাগদার অভিযান চলমান রয়েছে। কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের কেউ ম্যানেজ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত নন বা কেউ ও টাকা ও নিচ্ছিন না। আজ থেকে জোরালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।বরিশাল অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার কফিল উদ্দিন জানান, তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আর্থিক লেনদেনের সাথে নৌ পুলিশের কেউ জড়িত থাকলে খুব দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আমাদের দরকার এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ।