সখের ছাদ বাগান করে সফল ব্যাংকার শাহিন
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার: একজন ব্যাংকার হয়েও যার চিন্তাচেতনায় রয়েছে প্রকৃতির প্রতি প্রেম। এমনি শৌখিন একজন মানুষ এস এম সাইফুর শাহিন। তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ব্যংকের সাভার উপশাখার ম্যানেজার পদে কর্মরত রয়েছেন। তার ঘর বাড়িতে সবুজকে ধরে রাখার জন্য একান্ত নিজস্ব ভাবনা আর প্রচেষ্টায় বাড়ির ছাদে তৈরি করছেন ছাদ বাগান। ইতোমধ্যে তার এই দৃষ্টিনন্দন ছাদ বাগান পরিদর্শন করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা।৬ মার্চ বুধবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাভার উপজেলার পাকিজার এমপির ঢালে ৯ তলা এল্যাইন ভবনের ২য় তলায় বি১, ১৪০০ স্কয়ার ফিটের একটি ফ্লাট ক্রয় করে নিজের সয়ন কক্ষ থেকে শুরু করে বাসার চারিদিকে সাজিয়েছেন নানা প্রজাতির ফুল, ফল, ঔষধিসহ সবজির গাছে।যান্ত্রিক এই ইট-পাথরের শহর থেকে দ্রুতই হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ গাছ। কিন্তু মানুষ তার শিকড়কে সহজে ভুলতে পারে না। সবুজে ভরা গ্রাম বাংলায় বেড়ে উঠা নাগরিক সমাজের একটা অংশ সবুজকে ধরে রাখতে চায় আবাসস্থলে।ছাদবাগানের মালিক ব্যাংক কর্মকর্তা এসএম সাইফুর শাহিন জানান, ২০২০ সালের আগস্ট থেকে তার নিজের ছাদের বাগানে গাছ লাগান শুরু করেন। তার বাগানে প্রায় ২৫০ প্রজাতির ফুল, ফল ও বিদেশি প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। এরমধ্যে তার বাগানে দেশি-বিদেশি কয়েক জাতের প্রায় ৫০ প্রকারের ফুল গাছ রয়েছে। অ্যান্থুরিয়াম (স্থানীয় এবং থাই বৈচিত্র্য), পয়েন্ট চাটিয়া, পেলারগোনিয়াম, গ্রাউন্ড অর্কিড, কাট গোলাপ ৬ প্রকার থাই জাত, কালাঞ্চ, জারবেরা, জবা, বাগান ভিলাশ প্রায় ১০ প্রকার। অন্দর গাছপালার মধ্যে রয়েছে ৪০ প্রকারের ইনডোর প্লান্ট গাছ। যেমন: স্ন্যাক প্ল্যান্ট, হোমলোমেনা, রাবার গাছপালা, এ্যালোনোমা, ফিলোডেনড্রন, পিচ লিলি।তার এই বাগানের আউট ডোরে রয়েছে ২৫ জাতের গাছ, যেগুলো হচ্ছে বার্ডস নেস্ট ফার্ন, আমব্রেলা গাছ, মিয়াগোস বুশ, চীনা বাঁশ গাছ। রয়েছে ৩০ ধরনের ফলের গাছ। যেমন: চেরি, এগ প্লান্ট (থাই),আমের বাষ্প, মিরক্কাল ফল, চেরি পেয়ারা, আমলকি, কুটবেল, লংগন, বারো মাশি কাঁঠাল, মিস্টি তেতুল, বিভিন্ন ধরনের আম গাছ, কফি উদ্ভিদ, মাল বেরি, বিভিন্ন ধরনের লেবু। সবজি গাছ রয়েছে ২৫ ধরনের। যেমন: থাই আদা, লেমন গ্রাস, কারি পাতা, বাঞ্চিং ওনিয়ন, বেগুন, বম্বে মরিচ।তিনি বলেন, এরপর থেকে তার নিরলস প্রচেষ্টায় তার বাগানে ফুল, ফলের শোভা পাচ্ছে। তার এই সফলতায় ছাদবাগান করতে উৎসাহী হচ্ছেন অনেকেই। পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটাতে স্থাপন করেন ছাদ বাগান। নিজ উদ্যোগে ছাদ বাগান করতে প্রায় এই চার বছরে তার ১২ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। এই ছাদ বাগানে আমাদের পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে। তার এই ছাদবাগান দেখে উৎসাহী হয়ে বাগান করতে আগ্রহী অনেকে। তার ইচ্ছা, অবসরে গিয়ে তিনি সফল কৃষক হবেন।তার এই ছাদবাগান দেখে আগ্রহী হয়ে উঠছেন শহরের অন্যান্য বাড়ির মালিকরাও।পরিদর্শনে এসে সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. শারমিন সুলতানা বলেন, একজন ব্যাংক কর্মকর্তা হয়েও শাহিন কঠোর শ্রম ও মেধা দিয়ে ছাদবাগান করেছেন। তাকে আমরা শুরু থেকেই সহযোগিতা ও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি।শুধু বাড়ির ছাদে নয়, কৃষকরা যাতে বাণিজ্যিকভাবে এসব ফল চাষে এগিয়ে আসেন, সেজন্য কৃষি বিভাগ কাজ করছে। ব্যাংক কর্মকর্তা হয়েও কৃষির প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকে ছাদ বাগান গড়ে তুলেছেন তিনি। তার এই ছাদকৃষি প্রত্যন্ত মানুষের কাছে এখন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।