লালন স্মরণোৎসব শেষ হচ্ছে এক দিনে, থাকছে না মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
মিরপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় লালন শাহের আখড়াবাড়িতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে লালন স্মরণোৎসব শুরু হচ্ছে। মূল আখড়াবাড়ির ভেতরে সাধু—বাউলেরা অষ্টপ্রহরব্যাপী (এক দিন) রীতিনীতি মেনে তাঁদের আচার–আচরণ করবেন। তবে এবারের স্মরণোৎসবে আখড়াবাড়ির পাশে কালী নদীর পাড়ে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকছে না।লালন স্মরণোৎসব সফল করতে ১২ মার্চ বুধবার লালন আখড়াবাড়িতে লালন অ্যাকাডেমির সভাকক্ষে কোর কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ৫ মার্চ লালন স্মরণোৎসব-২০২৫ উদ্যাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় মরমি সাধক ফকির লালন শাহের আখড়াবাড়িতে প্রতি বছর দোলপূর্ণিমার রাতে নানান আয়োজনের মাধ্যমে এই স্মরণোৎসব পালিত হয়ে আসছিল।পবিত্র রমজানের কারণে এবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গ্রামীণ মেলা এবং গাজা সেবনও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।গত বছর পবিত্র রমজান মাসের কারণে এক দিনের আয়োজন করেছিল লালন একাডেমি। সে বছর সাধুসঙ্গ হলেও ছিল না গ্রামীণ মেলা ও সংগীতানুষ্ঠান। এবারও রমজানের কারণে কালী নদীর পাড়ে মেলা ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে না।এবারের প্রস্তুতিমূলক সভায় সবার সম্মতিক্রমে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুতি সভায় জেলা প্রশাসক ও লালন অ্যাকাডেমির সভাপতি মো. তৌফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা, আখড়াবাড়ির (পাঁচ ঘরের) সাধু–বাউলেরা উপস্থিত ছিলেন।সভার সিদ্ধান্ত মতে, বৃহস্পতিবার বিকেলে আখড়াবাড়ির ভেতরে সাধুসঙ্গ শুরু হবে। অষ্টপ্রহরব্যাপী সাধুসঙ্গ পরের দিন বিকেলে শেষ হবে। এ সময়ের মধ্যে সেখানে সাধু–বাউলেরা তাঁদের রীতিনীতি মেনে আচার অনুষ্ঠান করবেন। সভায় বলা হয়, লালন অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে ১৩ মার্চ সন্ধ্যা ও রাতে বাউল, ভক্ত ও ফকিরদের ‘বাল্যসেবা’ দেওয়া হবে। তবে পরদিন ১৪ মার্চ দুপুরে খেলাফতধারী বাউল ফকিরেরা নিজস্ব উদ্যোগে ‘পূর্ণসেবা’ গ্রহণ করবেন। তবে কালী নদীর পাড়ে কোনো আয়োজন থাকবে না।উল্লেখ্য, ফকির লালন শাহ তাঁর জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে প্রতিবছর চৈত্রের দৌলপূর্ণিমা রাতে বাউলদের নিয়ে অষ্টপ্রহরব্যাপী সাধুসঙ্গ উৎসব করতেন। তারই ধারাবাহিকতায় এখনো প্রতিবছর দোলপূর্ণিমার রাতে লালনের ভক্ত-অনুসারী ও বাউলেরা ছেউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে স্বরন উৎসব পালন করে আসছে। তবে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে লালন একাডেমি তিন দিনের আয়োজন করে আসছে।