• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৩:১১:৩৯ (22-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৩:১১:৩৯ (22-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

পুকুরের অস্তিত্ব নেই, অথচ পাহাড়ের ওপর ঘাটলা নির্মাণ

মাটিরাঙ্গা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলায় পুকুর ছাড়াই ঘাটলা নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলার আমতলী ইউনিয়নে এমন ২টি ঘাটলা করা হয়েছে পাহাড়ের ওপর, যেখানে আদতে কোনো পুকুরই নেই। এতে রাষ্ট্রের লাখ লাখ টাকার অপচয় হয়েছে বলে মনে করেন সচেতন নাগরিকরা।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে এমন তুঘলকি কাণ্ড ঘটলেও এ ব্যাপারে কোনো ধরনের তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী।সরেজমিন গিয়ে ঘাটলার প্রকল্প প্লেটে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, সারাদেশে পুকুর ও খাল উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে জিওবি’র অর্থায়নে ২০২০-২১ অর্থ বছরে মাটিরাঙ্গা উপজেলার আমতলী ইউনিয়নে ৪টি পুকুর খনন ও ঘাটলা নির্মাণ করে এলজিইডি। তারমধ্যে আমতলী উচ্চ বিদ্যালয় ও গড়গড়িয়ায় নির্মিত দুটি ঘাটলা কিছুটা ব্যবহৃত হলেও আব্বাস সর্দারপাড়া জামে মসজিদ ও আমতলী আদর্শপাড়া মসজিদের ঘাটলা দুটি কোনই কাজে আসছে না। আব্বাস সর্দারপাড়া জামে মসজিদের নামে যে ঘাটলা নির্মাণ করা হয়, সেখানে কোনো বসতি নেই, এমনকি সেখানে মানুষ যাওয়ার রাস্তাও নেই।ঘাটলাটি করা হয়েছে পাহাড়ের ওপর। যেখানে স্থানীয় একটি কবরস্থান রয়েছে। এখানে পুকুরের অস্তিত্ব নেই। মূলত দুই পাহাড়ের মাঝের গ্যাপকে পুকুর দেখিয়ে এখানে ঘাটলা নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া আমতলী আদর্শপাড়া মসজিদের ঘাটলাটিরও একই অবস্থা। ঘাটলায় ওঠার পথই নেই। ঘাটলার সামনে পুকুর বলতে কিছুই নেই। তবে প্রায় ৫০ মিটার দূরে হাঁটু পানি দেখা যায়। যদিও মসজিদ থেকে ঘাটলার দূরত্ব প্রায় আধা কিলোমিটার।আমতলী আদর্শপাড়া মসজিদের সভাপতি মো. শাহ এমরান জানান, মসজিদের নামে ঘাটলা নির্মাণ করা হলেও বাস্তবে মুসল্লিদের কাজে আসছে না। এমনকি জনসাধারণেরও ব্যবহারের সুযোগ নেই। কারণ, কাগজে পুকুর খনন করা হলেও প্রকৃত অর্থে নামে মাত্র পাহাড়ি মাটি ছাঁটাই করা হয়েছে।অন্যদিকে আব্বাস সর্দারপাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. রুহুল আমিন বলেন, মসজিদের নামে ঘাটলা তৈরি হলেও এটি মুসল্লিদের কাজে আসছে না। কর্তৃপক্ষ দায়সারাভাবে এটি নির্মাণ করে চলে গেছে।জানা যায়, দরপত্র অনুযায়ী ঘাটলা নির্মাণ কাজ পায় মেসার্স রুবেল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। কাজটি কিনে নিয়েছিলেন মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী। কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী জানান, কার্যাদেশ দেওয়া কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ এলজিইডি যেখানে জায়গা দেখিয়ে দিয়েছে, সেখানেই তিনি ঘাটলা তৈরি করেছেন। এগুলো ২০১৯ সালে ডিজিটাল সার্ভের মাধ্যমে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরে প্রকল্প অনুমোদনের পর টেন্ডার হয়েছে। এতে তার কোনো দোষ নেই বলে তিনি দাবি করেন।এদিকে ঘাটলা নির্মাণে আদৌ সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি হননি মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহজাহান। তিনি এ বিষয়ে কোনো ধরনের তথ্যই দেননি। ঘাটলা নির্মাণে কত টাকা ব্যয় হয়েছে তাও জানা সম্ভব হয়নি। ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অনুরোধ করায় ক্ষেপে উঠেন এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন উপজেলা প্রকৌশলী।অবশ্য মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এমন ঘটনা সত্য হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারের অর্থ ব্যয়ে অপ্রয়োজনীয় স্থানে কেন ঘাটলা তৈরি করা হলো তা খতিয়ে দেখা হবে এবং পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।