• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৮:২১:৪৮ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৮:২১:৪৮ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

এমভি আব্দুল্লাহর প্রধান প্রকৌশলী সাইদুজ্জামানের পরিবারে বইছে স্বস্থির হাওয়া

নওগাঁ প্রতিনিধি: সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের প্রধান প্রকৌশলী সাইদুজ্জামান বাড়ি ফিরেছেন। তার ফিরে আসায় পরিবারে এখন বইছে উৎসবের হাওয়া।গত ১২ মার্চ এডেন উপসাগরে বাংলাদেশি মালিকানাধীন সমুদ্রগামী এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি কয়লা নিয়ে মোজাম্বিক থেকে ডুবাই যাচ্ছিছিল। পথিমধ্য জাহাজটিতে হামলা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ান জলদস্যুরা। নানা চড়াই-উৎরাইয়ের জলদুস্যদের কবল থেকে জাহাজসহ মুক্ত হন নাবিকরা।সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন নওগাঁর সাইদুজ্জামান। মুক্ত হয়ে দেশে আসার পর ১৪ মে মঙ্গলবার বিকেলে নওগাঁ পৌর সভার আরজি-নওগাঁ এলাকার বাড়িতে কথা হয় তার সাথে। এ সময় তার বর্ণনায় উঠে এসেছে দুর্বিষহ জিম্মিদশার ৩৩ দিনের কথা।প্রকৌশলী সাইদুজ্জামান বলেন, জলদস্যুরা আমাদের জিম্মি করার পর প্রথমে উদ্ধারে এগিয়ে আসে ইটালিয়ান নেভাল ফোর্স। তাদের ড্রোন দিয়ে আমাদের জাহাজটি মনিটরিং করা হয়। একটি ড্রোনের চার্জ শেষ হয়ে গেলে অন্য একটি ড্রোন পাঠিয়ে দেয়া হতো আমাদের নজরদারির জন্য।তিনি আরও বলেন, একটি হেলিকপ্টারের ওপর থেকে বার বার ঘোষণা দেয়া হয়- তাদের (সোমালিয়ান ভাষা) ভাষায় জলদস্যুরা তোমরা আত্মসমর্পণ করো। নয়তো আক্রমণ করা হবে। এমনকি তোমাদের অন্য দস্যুদেরও ছাড় দেয়া হবে না। কিন্তু এসব ঘোষণায় কর্ণপাত করতেন না জলদস্যুরা।দুর্বিষহ জিম্মিদশার দিনগুলোর কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, দস্যুরা প্রতিদিন তাদের অস্ত্র আমাদের দিকে তাক করে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাতো। ২৩ জন নাবিকের মধ্য একজন করে তাদের অস্ত্রের সামনে নিয়ে গিয়ে কোনো ধরনের অপারেশন করা হলে আমাদের ওপর আক্রমণ হবে বলে ভয় দেখানো হতো। এ সময় দুশ্চিতায় আমরা কেউ ঘুমাতে পারতাম না। পরবর্তীতে জাহাজে ভারি অস্ত্র নিয়ে এসে জমা করা হতো। প্রায় সময় অস্ত্র থেকে ফাঁকা ফায়ার করা হতো। আমরা একটি কেবিনে আটক ছিলাম। সেসময় ছিল রোজার দিন। শুধু পানি খেয়ে ইফতারি ও সেহেরি করতাম।জলদস্যুরা কীভাবে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের মালিকের সাথে যোগাযোগ করেন, এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমডি স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হতো। এমডি সরাসরি সরকারের সাথে যোগাযোগ করেন। বাংলাদেশ সরকার ইটালিয়ান নেভাল ফোর্সের হেড কোয়ার্টার ও ইউনাইটেড হেড কোয়ার্টারে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগের এক ঘণ্টার মধ্য ইটালিয়ান নেভাল ফোর্সের হেড কোয়ার্টার ও ইউনাইটেড নেভাল ফোর্স হেলিকপ্টার ও যুদ্ধ জাহাজ আমাদের জাহাজ থেকে দেড় থেকে দুই মাইল দূরে অবস্থান করছিল। এতে জলদস্যুরা ভয় পেয়ে যায়। পরবর্তীতে সরকার থেকে নির্দেশ আসে, আমাদের রক্ষায় কেউ যেন অপারেশন না চালান। এভাবে প্রতিদিন দূর থেকে নেভাল ফোর্স আমাদের নজরে রাখত।সাইদুজ্জামানের স্ত্রী মানহা তাহরি সতধা বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। কারণ, আমার স্বামী পরিবারের কাছে সুস্থভাবে ফিরে এসেছে।উল্লেখ্য, মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ১২ মার্চ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা ছিল। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন।সাইদুজ্জামান ২০ বছর ধরে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির জাহাজে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন জাহাজে কাজ করছেন। এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ এস আর শিপিং লিমিটেড কোম্পানির একটি জাহাজ।