• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৭:৩৮:৩২ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৭:৩৮:৩২ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডে ৪০ বছরেও নির্মাণ হয়নি বর্জ্য পরিশোধনাগার!

কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ১৯৮৪ সালে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (বিজিডিসিএল) গ্যাস কূপ থেকে অনুষ্ঠানিকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু করা হয়। ৪০টি বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ না হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে করে এ ফিল্ড থেকে উত্তোলন করা ডিজেল ও পেট্রোলের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ফিল্ডের বাহিরের একটি পুকুরে। বছরের পর বছর এ পুকুরে বর্জ্য ফেলায় জনস্বাস্থ্য ও কৃষি জমি ভয়াবহ দূষণের শিকার হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। বর্ষা মৌসুমে পুকুরে ফেলা বর্জ্য এলাকার খাল ও বিভিন্ন পুকুরে মিলিত হচ্ছে। আর দুর্গন্ধযুক্ত খালের কালচে পানি কৃষিকাজে ব্যবহার করায় নষ্ট হচ্ছে ফসল। মারাত্মক দূষণের কারণে এলাকার পুকুর-জলাশয়ের মাছ মরা যাচ্ছে। আর খালের পানিতে মেশা বর্জ্যের দুর্গন্ধে এলাকার মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। গ্যাস ফিল্ডে বর্জ্য শোধনাগার না থাকায় মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখেও পড়েছে এই এলাকার জীববৈচিত্র্য।পরিবেশ অধিদপ্তর আইনে বলা হয়েছে, প্রতিটি কলকারখানার কেমিক্যালযুক্ত এই বর্জ্য পানি পরিশোধন করতে হবে এবং পরিশোধন করা পানি আবার কাজে লাগাতে হবে। এজন্য ব্যবহার করতে হবে তরল পানি বর্জ্য শোধনাগার বা এ্যাফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি)। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে এই ইটিপি প্ল্যান্ট না থাকার কারণে বছরের পর বছর দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, তিতাস ও হবিগঞ্জের মতো ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানি লিমিটেড বাখরাবাদ গ্যাস ক্ষেত্রটি আবিষ্কার করে। ১৯৮৪ সালে বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্র হতে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, বাখরাবাদ ফিল্ডের মোট উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ ১ হাজার ৩৮৭ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। গ্যাসের উপজাত হিসেবে দৈনিক প্রায় ৩৬.৮৩ ব্যারেল কনডেনসেট (জ্বালানী তেল) উৎপাদিত হয়। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এ গ্যাস ক্ষেত্রে কনডেনসেট ও গ্যাসের গড় অনুপাত, পানি ও গ্যাসের গড় অনুপাত যথাক্রমে ১.১৫৫ ব্যারেল মিলিয়ন ঘনফুট এবং ৯.৯২৫ ব্যারেল মিলিয়ন ঘনফুট ছিল। এখানকার কন্ডেনসেট (তেলের উপাধান) প্রক্রিয়াজাত করে পেট্রোল ও ডিজেল তৈরি করা হয়, যা মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড বাজারজাত করে থাকে।বাখরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মো. খোকন বলেন, গ্যাস ফিল্ডের পাশে আমার বাড়ি। বাখরাবাদ ফিল্ডের পশের একটি পুকুরে পানি বর্জ্য ফেলার কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। ওই বর্জ্য ও পুকুরের পানির দূর্গন্ধে আশপাশের মানুষ অতিষ্ট। এখানে যে পুকুরটিতে পানি বর্জ্য ফেলা হয়, সে পানির দুর্গন্ধে আশপাশে পশুপাখি যেতে পারে না। বর্ষার মৌসুমে এ বর্জ্য পানি আশপাশের পুকুরের পানিতে মিশ্রিত হয়ে স্থানীয়দের স্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।ছয়ফুল্লাহকান্দি গ্রামের মো. সোহাগ বলেন, গ্যাসফিল্ডের কর্মরত কর্মকর্তারা আমাদের মানুষ মনে করে না। কয়েকমাস পরপর এ গ্যাসফিল্ডের ওভার গ্যাস শূন্যে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ওই সময় বিকট শব্দ হয়। কয়েকঘন্টা যাবত এ কার্যক্রম চলে। যার কারণে শিশুরা আতঙ্কে থাকে। খোলা পুকুরে বর্জ্য পানি ফেলার কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এখানে থাকা বর্জ্যের দুর্গন্ধে স্থানীয়রা নানা সমস্যায় ভোগে। তাই পানি বর্জ্য পরিশোধনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জিয়াউল কবীর বলেন, আমাদের ফিল্ডের বর্জ্য পরিশোধন হয়ে পুকুরে যায়। যে পুকুরটিতে বর্জ্য ফেলা হয়, সেটি আমাদের নিজস্ব পুকুর। ওই পুকুরটির চারপাশে আরসিসি পেলা সাডিং ওয়াল নির্মাণ করা আছে। যার কারণে পুকুরের বর্জ্য অন্য কোনো পুকুরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া আমরা ইটিপি প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। শিগ্রই টেন্ডারের মাধ্যমে ইটিপি প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে।পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মোছাব্বের হোসেন মো. রাজিব বলেন, পুকুরে পানি বর্জ্য ফেলার বিষয়টি আমার জানা নাই। বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।