ইরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাত শতাধিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের বন্দর আব্বাসের কাছে শহীদ রাজি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৭৫০ জন। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএর বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।গতকাল শনিবার রাজধানী তেহরান থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দূরে দক্ষিণাঞ্চলের শহিদ রাজি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। তবে কীভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা এখনো জানা যায়নি। ইরানের দুর্যোগ ব্যবস্থাম সংস্থার মুখপাত্র হোসেন জাফরি বলেছেন, ‘কন্টেইনারে রাসায়নিকের দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণের কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’হোসেন জাফরি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ–কে বলেন, ‘কন্টেইনারের ভেতরে থাকা রাসায়নিক পদার্থ থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। এর আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মহাপরিচালক বন্দর পরিদর্শনে এসে, এখানে বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন।’তবে ইরানের আরেকজন সরকারি মুখপাত্র বলেছেন, বিস্ফোরণের সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি।ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আগুন নেভাতে ও আগুন ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে চেষ্টা অব্যাহত হয়েছে।শহিদ রাজি বন্দরে বিস্ফোরণের প্রায় ১০ ঘন্টা পর প্রেস টিভি জানায়, বন্দর আব্বাসের ২৩ কিলোমিটারের মধ্যে সব অফিস ও স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে হরমোজগান প্রদেশের কর্তৃপক্ষ।ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল প্রোডাক্টস রিফাইনিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিস্ফোরণে ওই এলাকার তেল স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। শহিদ রাজি বন্দরে বিস্ফোরণ ও আগুনের সঙ্গে এই কোম্পানির রিফাইনারি, জ্বালানি ট্যাঙ্ক, বিতরণ কমপ্লেক্স এবং তেল পাইপলাইনের কোনও সম্পর্ক নেই।বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রথমে নাশকতার সন্দেহ করা হয়। পরে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা জানিয়েছে, এরকম আলামত পাওয়া যায়নি। তাদের ধারণা, কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।বিস্ফোরণের পরপরই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। তবে বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে বেগ পেতে হয় কর্মীদের। তাই তাৎক্ষণিক হতাহতের সংখ্যা জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়রা জানান, এত শক্তিশালী বিস্ফোরণ হয়েছে যে ৫০ কিলোমিটার দূরেও কম্পন অনুভূত হয়। রাজধানী তেহরান থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বন্দর আব্বাস। বিশ্বের উৎপাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ এ পথে সরবরাহ হয়।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বিস্ফোরণস্থল থেকে কালো ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলী এবং আগুনের গোলা উঠে আসছে। অন্যান্য ভিডিওতে দেখা গেছে, অনেক ভবন ও যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।