আমেরিকার নির্বাচন ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করিম: এবারের আমেরিকার নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের কৌতূহল ছিল। বাইডেন প্রশাসন ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে ভালো সম্পর্কের কারণে অনেকে ভাবছেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে বর্তমান সরকারের উপর কোনো প্রভাব পড়বে কিনা। এ কারণেই নির্বাচনের ফলাফলের দিকে সবার চোখ ছিল।এখন প্রশ্ন হলো, ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় ড. ইউনূস বা বর্তমান সরকারের জন্য কোনো উদ্বেগের কারণ হবে কি না। আমি মনে করি, উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো তেমন কোনো কারণ নেই। কেন নেই, তার ব্যাখ্যা খুবই সহজ:১. ড. ইউনূসের সরকার একটি জনপ্রিয় সরকার। জনগণের সমর্থনে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে, যার ভিত্তি অত্যন্ত মজবুত। এ বিষয়টি ট্রাম্প প্রশাসনও অনুধাবন করবে।২. জুলাই-আগস্টের আন্দোলন পুরোপুরি সাধারণ মানুষের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। বাইডেন প্রশাসন সেই আন্দোলনকে সফল করতে সরাসরি কোনো ভূমিকা রাখেনি। আন্দোলন সফল হওয়ার পর তারা সরকারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে, তবে আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি ছিল দেশের ছাত্র, কৃষক ও শ্রমিক। শেখ হাসিনা ভারতের সমর্থন ও পুলিশের শক্তি ব্যবহার করেও টিকে থাকতে পারেননি; কারণ, ছাত্ররা অকাতরে জীবন দিয়েছে এবং বন্দুকের সামনে মাথা নত করেনি। যেহেতু এই আন্দোলন আমেরিকার প্রভাবে হয়নি, তাই নতুন প্রেসিডেন্ট কে হলেন তা নিয়ে ভাবার কিছু নেই।৩. আগেও বলেছি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন হলেও নীতিতে বড় পরিবর্তন আসে না। যদিও এবার কংগ্রেসের দুই কক্ষেই রিপাবলিকানরা জয়লাভ করায় ট্রাম্প সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন, তবুও এর অর্থ এই নয় যে তারা ক্ষমতায় এসে সব নীতি বদলে দেবেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমেরিকার নীতি সবসময়ই তাদের স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত। ব্যবসা ও দর-কষাকষি ছাড়া আমেরিকা অন্য কিছু বোঝে না।৪. সর্বশেষে, ড. ইউনূস বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং আমেরিকার কাছেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ। রিপাবলিকানরাও তাকে ক্ষমতায় দেখে নির্ভার থাকতে পারে। বরং, ড. ইউনূসকে আমেরিকা সহযোগিতা করবে, এটাই স্বাভাবিক প্রত্যাশা।লেখক: পরিচালক, শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্র, মাভাবিপ্রবি।