মানিকছড়ির ডিসি পার্ককে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: পর্যটকদের কাছে ভ্রমণের জন্য পাহাড় বরাবরই পছন্দের। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা সড়ক, সবুজ বিস্তৃর্ণ পাহাড় আর আকাশের মিতালি সমতলের ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করে। সেই সাথে ঝিরি, ঝরনা ও পাখির কিচিরমিচির শব্দ পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ জোগায়। তাইতো তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে খাগড়াছড়ি নান্দনিক সব স্থানগুলো পর্যটকদে কাছে খুব বেশি পছন্দের। পর্যটন খাতকে আরও এগিয়ে নিতে এখানে তৈরি হয়েছে আধুনিক সব হোটেল, মোটেল, রেস্তরাঁসহ বিভিন্ন নান্দনিক স্থাপনা। বিশেষ করে, বর্তমানে খাগড়াছড়িতে পর্যটনের নতুন আকর্ষণ মানিকছড়ির ১৬০ একর ভূমিতে গড়ে উঠা ‘ডিসি পার্ক’। নান্দনিক সব স্থাপনার পাশাপাশি এখানে রয়েছে প্রায় ৫ একর জায়গায় জুড়ে সুবিশাল ৩টি লেক, রয়েছে ছোট বড় ২২টি পাহাড়। এসব পাহাড়ে রয়েছে রাবার, আম, জাম, লিচুসহ নানা প্রজাতির গাছ। এছাড়াও খুব ভোরে পাখির কিচিরমিচির ডাক শোনার পাশাপাশি চোখে পড়বে বানরের দল, বনমোরগ, মথুরাসহ বিভিন্ন জাতের টিয়া, শালিক ও চড়ুই পাখির দল।সম্ভাবনাময় এই পার্কটিকে ঘিরে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। পর্যটকদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ঘোলঘর, লেকে ঘুরে বেড়ানোর সড়ক, দৃষ্টিনন্দন তোরণ, ট্যুরিস্ট সেন্টার, ওয়াশ ব্লক, ট্রি-হাউজ, লেকের পানিতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌকা ও সূর্যাস্ত উপভোগের জন্য সানসেট পয়েন্ট (গোধুলী) নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও রাত্রিযাপনের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দুই কক্ষ বিশিষ্ট রিসোর্ট। এক কথায় পর্যটকবান্ধব স্থাপনা ও নানা সুবিধার্থে সেজে উঠেছে মানিকছড়ি ‘ডিসি পার্ক’। পার্কটিকে আরও আকর্ষণীয়, প্রকৃতিবান্ধব করার লক্ষ্যে বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামানের নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১শ’ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় প্রায় ২৫ হাজার ফলদ, বনজ ও বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধী গাছ রোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রক্তিম চৌধুরী।২৩ আগস্ট বুধবার বিকেল ৪টায় একটি বটগাছ, একটি কোরপুর ও একটি বক্স বাদাম গাছ রোপণের মধ্য দিয়ে উক্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান। এ সময় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রক্তিম চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুম্পা ঘোষ, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমাউন কবির, জেলা পরিষদ সদস্য মো. মাঈন উদ্দিন, বাটনাতলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিমসহ বিভিন্ন দপ্তর প্রধান ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৃক্ষরোপণ শেষে প্রায় বিশ একর জায়গায়কে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক। যেখানে বিনা অনুমতিতে দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন না। তাছাড়া সেখানে সুবিধাজনক স্থানে ১০০টি মাটির হাড়ি বসানো হয়েছে, যাতে পাখিরা বাসা তৈরি করে থাকতে পারে।পরে ২নং বাটনাতলী ইউনিয়ন পরিষদে ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত অস্বচ্ছল সদস্য পারভীন আক্তারকে জেলা প্রশাসকের নিজস্ব অর্থায়নে মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে একটি সেমিপাকা ঘর প্রদান করেন।