নওগাঁয় চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া, দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় চলাচলের রাস্তা রোধ করে বাঁশের বেড়া দেওয়া নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় তিন জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। জেলা সদরের বোয়ালিয়া গ্রামে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে বাঁশের বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।মামলা ও ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ সদরের বোয়ালিয়া দ:ক্ষিণপাড়া গ্রামে প্রভাবশালী মজিবর রহমান নামে এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন থেকে গ্রামের লোকজনের সাথে জায়গা জমি নিয়ে নানাভাবে বিবাদে জড়িয়ে আসছেন। ১৭ নভেম্বর সকালে বাঁশঝাড় কেটে কয়েকটি পরিবারের চলাচলের রাস্তা রোধ করে বাঁশের বেড়া দিচ্ছিলেন।এমতাবস্থায় আশেপাশের লোকজন তাকে চলাচলের রাস্তা থেকে সরিয়ে বেড়া দেয়ার অনুরোধ করলে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ ঘটনায় মজিবর ও তার লোকজন লাঠি, সোঠা, লোহার রড-ধারালো হাসুয়া ইত্যাদি দেশিও অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আসলাম হোসেনের উপর হামলা করে।এসময় তার মা ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে ধারালো কোপ দা দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে হাত দিয়ে প্রতিহত করতে গিয়ে তার হাত কেটে যায়। আসলামের স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এঘটনায় গ্রামের আরও বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করে মজিবর বাহিনী।আহতরা হলেন- বোয়ালিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের আজাদ হোসেনের ছেলে আসলাম হোসেন (৩৬,) আজাদ হোসেনের স্ত্রী আছমা বেগম (৫৭) এবং আসলাম হোসেনের স্ত্রী ববিতা খাতুন (৩২)। আহত আসলাম হোসেন ও তার মা আছমা বেগম বর্তমানে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।ঘটনার দিন ইসলাম হোসেন ১৭ তারিখ নওগাঁ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সে অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত করে ২১ তারিখ বৃহস্পতিবার মামলা রেকর্ড করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলায় মজিবর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন আহত আসলামের ভাই ইসলাম হোসেন। সে রাতেই মামলার ১নং আসামি মজিবর রহমানকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।বোয়ালিয়া গ্রামের সৌরভ হোসেন নামে এক বাসিন্দা বলেন, মজিবর প্রায় প্রায় গায়ে পড়ে সবার সাথে গন্ডোগোলে জড়ায়। আমরা প্রতিবাদ করলে ভাড়াটে বাহিনী দিয়ে আমাদের ভয়ভীতি ও মারপিট করে। ঘটনার দিন চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারি লাগে।ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একই গ্রামের বিলকিস ও মামুদা বেগম নামে দুই নারী বলেন, আমাদের বাড়িতে আসা যাওয়ার রাস্তার মাঝখানে সে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দিচ্ছিল। আমরা অনেকে অনুরোধ করি রাস্তা থেকে সরিয়ে বেড়া দিতে কিন্তু তিনি কর্ণপাত করেন না। এসময় আসলাম হোসেন তার দেয়াল ছেড়ে বেড়া দেওয়ার কথা বললে মজিবরের ছেলে সম্রাট ও সামছুদ্দিন লোহার খুন্তি, হাতুড়ি দিয়ে তাকে মার শুরু করে। তখন তার মা, বউ এগিয়ে আসলে তাদেরকেও কোপ দা ও হাসুয়া দিয়ে আঘাত করে মজিবর ও তার ছেলেরা। আমরা এগিয়ে গেলে আমাদেরও আঘাত করে তারা।মামলার বাদী ইসলাম হোসেন বলেন, আমাদের গ্রামের পুরুষ মানুষ প্রায় সবাই বিদেশ থাকে। এ সুযোগে মজিবর গ্রামের মা বোনদের অকারণেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তার জায়গা জমির উপরদিয়ে কেউ হাঁটাচলা করলে তাকে মারধর করে, রাস্তা ঘিরে দেয়।নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বোয়ালিয়ার ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় প্রধান আসামি মজিবর রহমানকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।