মতলবে রোটা ভাইরাসে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ২৫০ শিশু
মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: শীতের এ মৌসুমে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চাঁদপুর মতলবের আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল। দৈনিক গড়ে ২৫০ শিশু ভর্তি হচ্ছে মতলবের এই হাসপাতালটিতে।দক্ষিণাঞ্চলের ডায়রিয়া রোগীদের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্রটিতে শিশুদের চিকিৎসা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। তবে অভিভাবকদের আতঙ্কিত না হয়ে স্থানীয় সরকারি হাসপাতাল বা মতলব হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।হাসপাতালের দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে ডিসেম্বর মাসে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত ৯ হাজার ৩৩ শিশু চিকিৎসা নিয়েছে মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চিকিৎসা নিয়েছিল ৭ হাজার ৫৫১ জন শিশু। নতুন বছরের প্রথম দশ দিনে ভর্তি হয়েছে আরও ২ হাজার ৩৮০ জন। শীত মৌসুমে গড়ে দৈনিক ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী ভর্তি হচ্ছে। চাঁদপুর, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলার প্রায় ৩৫টি উপজেলা থেকে প্রতিনিয়ত ছুটে আসে রোগীরা। দুই বছরের কম বয়সী শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।আইসিডিডিআরবি মতলব হেলথ রিসোর্স সেন্টারের প্রধান ডা. মো. আলফজল খান বলেন, হাসপাতালের ইতিহাসে এই প্রথমবার ডিসেম্বর মাসে সর্বাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। যা স্বাভাবিকের তুলনায় তিনগুণ বেশি রোগী। প্রায় ৩৫টি উপজেলা থেকে নিয়মিত রোগী আসছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগ করা হয়েছে।তিনি আরও বলেন, শীতকালে শিশুদের সাধারণত রোটা ভাইরাস হয়ে থাকে। ভর্তি হওয়া ৮৫ ভাগ রোগীই রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত। শিশুদের বুকের দুধ ও স্বাভাবিক খাবার দিতে বললেন চিকিৎসকরা।চাটখিল ও লক্ষীপুর থেকে সেবা নিতে আসা রোগীর এক অভিভাবক বলেন, শীতের এই মৌসুমে হঠাৎ বমি, জ্বর, পাতলা পায়খানা শুরু হয় শিশুদের। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হলেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না। মতলব ডায়রিয়া হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা বা ৪৮ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছি।আইসিডিডিআরবি মতলব হেলথ রিসোর্স সেন্টারের জ্যেষ্ঠ মেডিকেল অফিসার ডা. চন্দ্র শেখর বলেন, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া শিশুদের ৫ থেকে ৭ দিন সময় লাগে সুস্থ হয়ে উঠতে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।হাসপাতালের পরিসংখ্যানে রোটা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত চাঁদপুর সদর, ফরিদগঞ্জ, কচুয়া, বরুড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, মুরাদনগর, লক্ষীপুর সদর ও চাটখিল উপজেলা। আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে রোটা ভাইরাসে আক্রান্তের হার কমবে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এক্ষেত্রে শীত মৌসুমে শিশুদের প্রতি যত্মশীল ও সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ চিকিৎসকদের।