• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৮:২৪:৫৮ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৮:২৪:৫৮ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

অন্ধ মা আর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলের শিকলবন্দি জীবন

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: মা অন্ধ আর ছেলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। মা রহিমা বেগমের কোমরের সাথেই তার ১০ বছরের ছেলে আব্দুর রহমানের কোমরে শিকলে তালাবন্দি দেখা যায়। তারা শহরে ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়ান। ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার শহরে এসেছিল ভিক্ষা করতে। কিন্তু সন্ধ্যার পর মা রহিমা অসুস্থ হয়ে পড়লে আশ্রয় নেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে হাসপাতালের মেঝেতে শিকলবন্দি অবস্থায় মা ছেলের শুয়ে থাকার দৃশ্য স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মীর নজরে আসে । তাৎক্ষণিক দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করেন তিনি।এরপরই ভাইরাল হয়ে পড়ে ঘটনাটি। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের অন্ধ রহিমা হতদরিদ্র ভ্যানচালক ছালাম হোসেনের স্ত্রী। এদিকে ফেসবুকে ওই মানবিক পোস্টটি দেখে রাতেই হাসপাতালে যান কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। তিনি তাৎক্ষণিক ওই মা ছেলেরশোবার জন্য বেডের কাপড়সহ চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা করেন।স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী হাবিব ওসমান জানান, তাদের এক সহকর্মীর অসুস্থতার খবর শুনে কয়েকজন সাংবাদিক মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তারা দ্বিতীয় তলাতে উঠেই দেখেন মেঝেতে শিকলবন্দি অবস্থায় মা ও ছেলে শুয়ে রয়েছে। এ সময় মা রহিমা বেগম সাংবাদিকদের জানান, তিনি অন্ধ, চোখে দেখেন না। তার একমাত্র বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছেলেকে সাথে নিয়ে শহরে ভিক্ষা করেন। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী  শিশু সন্তান  হারিয়ে যেতে পারে, সেই আশঙ্কায় তার কোমরের সাথে শিকলবন্দি করে ছেলেকে আটকে রেখেছেন। আজ ভিক্ষা করতে এসে একটু অসুস্থতা বোধ করায় তিনি এ হাসপাতালের মেঝেতে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে, এসময়ে কোনো বেড খালি না থাকায় তারা মেঝেতেই রাত কাটান। পরদিন বুধবার সকালে মা ও ছেলে বাড়িতে ফিরে যান।কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডিউটিরত ডাক্তার কৌশিক আহম্মেদ জানান, তিনি রাতে ছিলেন না। খবর নিয়ে জেনেছেন, ওই রাতে একজন মহিলা হাসপাতালের আশে পাশে ঘোরাঘুরির পর রাতে থাকার জন্য মেঝেতে আশ্রয় নিয়েছিল। সকালে তারা চলে গেছেন।অন্ধ রহিমা বেগম জানান, প্রায় ৮/৯ বছর আগে তাদের বাড়িতে আগুন লেগেছিল। সেই আগুনে তিনি মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে দৃষ্টি শক্তি হারান। তার স্বামী একজন হতদরিদ্র ভ্যান চালক। সংসারের অভাব অনটনের কারণে তাকে ভিক্ষাকরতে হয়।রহিমার স্বামী ভ্যান চালক ছালাম হোসেনের সাথে কথা বলতে সংবাদকর্মীরা তার বাবিতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি তার ভ্যান নিয়ে বাইরে গেছেন এবং রাতে ফিরবেন। তার কোনো মোবাইল না থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।অন্ধ মা ছেলেকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়া পৌর মেয়র আশরাফ বলেন, মা ও ছেলের এক শিকলে বন্দি জীবন দৃশ্যটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ওই পরিবারটির বেঁচে থাকার জন্য ব্যাক্তিগতভাবে সহায়তা করবেন বলে জানান তিনি।