বারবিকিউ আর পিঠা-পায়েসে শীত বরণ
মুজাহিদ: রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই এখন বিরাজ করছে শীতের আমেজ। কোথাও কোথাও ভোরের দিকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত থাকছে পথ-ঘাট।বছরের অন্য সময় প্রচন্ড তাপদহে রাজধানীবাসী অতিষ্ঠ হলেও শীত যেন এক প্রশান্তির ছোঁয়া নিয়ে আসে এখানে। তবে ঢাকার বাইরে শীত নিয়ে আসে এক ভিন্ন প্রকৃতি।ভোরে সবুজ ঘাসের উপর জমে থাকা বিন্দু বিন্দু শিশির কণা, কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়-প্রকৃতি মুগ্ধ করে যে কাউকে। তবে সকালে ঘরের বাইরে এলেই হাড়কাঁপানো শীত কারো কারো কাছে অসহ্যকর হয়ে ওঠে। অন্যদিকে সকালবেলা খেজুরের রস, চালের গুড়া, নারিকেল আর গুড় দিয়ে বানানো ভাপা পিঠার স্বাদ যেন নিয়ে আসে এক অন্য রকম অনুভূতি।যান্ত্রিক এই ঢাকা শহরে এসবের অনেক কিছু যেন শুধুই গল্পকথা। তবে বর্তমানে শহরের অলি-গলিতে শীতের পিঠা, পায়েস, নাড়ুসহ আরও অনেক কিছু বিক্রি হতে দেখা যায়। সব বয়সী মানুষই কমবেশি সেসবের স্বাদ গ্রহণ করেন।সৈকত নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, 'আমাদের মতো যাদের জন্ম ও বেড়ে উঠা এই ঢাকা শহরে, তাদের কাছে শীতের গ্রামীণ আবহ অনুভব করাটা প্রায় অসম্ভব। কারণ, আমরা এখানে গ্রামের মতো খেজুরের রস, ঢেঁকি ছাঁটা চালের গুড়া বা বিভিন্ন রকমের পুলি পিঠা তৈরি করতে পারি না। তার চেয়ে বরং আমরা এখন অনেকটা বারবিকিউ কালচারের দিকে ঝুঁকে গেছি। এটাই আমাদের কাছে শীত বরণের তুলনামূলক সহজ উপায়।'তিনি আরও বলেন, 'আমরা প্রতি শীতেই বারবিকিউ করে থাকি। শুধু আমি না, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে শীতকালে এমন দৃশ্য হরহামেশাই দেখা যায়।'আকিফা তাহমিনা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, 'আমার পড়াশোনার জন্য ঢাকাতে আসা। এখানে কখনো শীত বরণ কোন উৎসব আমার পালন করা হয়নি। তবে শীতের ছুটিতে গ্রামে গেলে মায়ের হাতের তৈরি পিঠা খাওয়া হয়।'তামান্না নামে এক গৃহিণী বলেন, 'বিয়ের পর থেকে ঢাকায় থাকি। দুই বাচ্চা আর হাসবেন্ড নিয়ে আমার সংসার। শীতের মৌসুমে প্রতিবছর গ্রামে যাওয়ার সুযোগ হয় না। সেজন্য নিজেই চেষ্টা করি, ঘরোয়া পরিবেশে সাধ্যের মধ্যে সব কিছু তৈরি করতে। এ বছরও আমি বাসাতে দুধ পুলি, চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা তৈরি করেছি।'সাদলি তাবাসসুম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, 'ঢাকায় পরিবারের সাথে থাকি। প্রতি শীতেই মা বাসায় বিভিন্ন রকমের পিঠা-পুলির আয়োজন করেন। আর মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে বাইরে বারবিকিউ পার্টিও করি। এবছরও করবো আশা করি।'