বস্তাভর্তি সরকারি বই বিক্রি করতে নেয়ার পথে আটকে দিলো স্থানীয়রা
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে চলতি শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তরের বস্তাভর্তি সরকারি বই বিক্রির জন্য ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এ সময় হাতেনাতে এসব বই আটকে দিয়েছে স্থানীয়রা।উপজেলার চণ্ডিপুর ফজলুল হক হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে এসব বই জব্দ করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে স্কুলটির একটি রুম সিলগালা করে রাখা হয়। আটকে দেওয়া এসব বই সুন্দরগঞ্জের চণ্ডিপুর ফজলুল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০২৩-২০২৪ সালের মাধ্যমিক শাখার বিভিন্ন শ্রেণির বই।পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে এসব বই ভ্যানে করে বিক্রির জন্য নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। পরবর্তীতে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ভ্যানটি আটক করে ও কাছাকাছি অবস্থিত থানায় খবর দেয়। ইউনিয়নের চৌরাস্তার মোড় থেকে এসব বই উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি রুমে জব্দ করা এসব বই সিলগালা করে রাখা হয়।প্রত্যক্ষদর্শী মমিন মিয়া বলেন, ‘প্লাস্টিকের বস্তা ভর্তি এক ভ্যান বই সুন্দরগঞ্জ শহরে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। স্থানীয়রা টের পেয়ে ভ্যানটি আটক করেন। তখন ভ্যানচালকে বইগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, চণ্ডিপুর ফজলুল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ মিয়া বইগুলো বিক্রির জন্য তার ভ্যান ভাড়া করছেন। পরে লোকজন থানায় খবর দিলে কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্ত থেকে পুলিশ এসে বইগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ মিয়া বলেন, ‘স্কুলের উন্নয়নকাজ করা হচ্ছে। টাকারও দরকার, তাই বইগুলো বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন আটক করেন। বইগুলো এখন প্রতিষ্ঠানেই আছে। তবে বই বিক্রির বিষয়টি সভাপতি ও অধ্যক্ষ স্যার জানেন।’প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলার রহমান মাস্টার বলেন, ‘পুরনো বইগুলো বিক্রির জন্য প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক নিয়ে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় লোকজন আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ নাকি বইগুলো প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখছেন। আমি এটুকু শুধু শুনছি। তবে বিক্রির জন্য যে রেজ্যুলেশন করা লাগে তা করা হয়নি।’অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, ‘আমি বই বিক্রির বিষয়ে কিছু জানি না। আমার প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক নিজেই এগুলো গায়ের জোরে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ বিষয়ে আমার কোনো মতামত নেই।’সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, ‘উদ্ধার করা বইগুলো ওই প্রতিষ্ঠানের একটি রুমে সিলগালা করে রাখা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের উপস্থিতিতে সিলগালা রুমটি খোলা হবে। তারপর কী ব্যবস্থা নেবেন তারাই ভালো জানেন।’সুন্দরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মমিন মণ্ডল বলেন, ‘স্থানীয়দের হাতে আটক হওয়া এসব বই স্টোরেজ করতে বলেছি। আগামী রোববার বইগুলো দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বছরের বই বিক্রির সুযোগ নেই। তবে পুরনো বই বিক্রি করতে হলে গভর্নিং বডির অনুমতি নিতে হবে।’