দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে সিফাত নুসরাতের মডেলিং যাত্রা
বিনোদন ডেস্ক: দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে মডেলিং করছেন বাংলাদেশি মডেল সিফাত নুসরাত। এই যাত্রার নানা বিষয় নিয়ে এশিয়ান টিভি অনলাইনের সাথে কথা বলেন তিনি। আলাপচারিতার চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরেছেন জ্যোতির্ময় মণ্ডল। প্রশ্ন: বাংলাদেশি মডেল হয়ে কীভাবে ইন্টারন্যাশনালি কাজের সুযোগ পেলেন এবং প্রথম কাজ কী?সিফাত নুসরাত: আমি বাংলাদেশে একটানা তিন বছর ব্রাইডাল মডেল হিসেবে কাজ করেছি। একটানা কাজ করে সুনাম ও সুখ্যাতিও অর্জন করেছি। সেই সূত্রেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ব্রাইডাল ওয়ার্কশপগুলোতে মডেল হিসেবে আমাকে ডাকা হতো। এভাবেই ফরিদপুরের একটা ওয়ার্কশপের আকলিমা বেগম (মেকাপ আর্টিস্ট) আমাকে মডেল হিসেবে আমন্ত্রণ করেন। সেটাই বলতে পারেন আমার ক্যারিয়ারে একটা লাকি ওয়ার্কশপ ছিল। ওখানে আমাকে স্টেজ দেখেন কারমা ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার অঞ্জনা রয়। সেখান থেকেই তিনি আমাকে কলকাতার একটা ওয়ার্কশপের মডেল হিসেবে ইনভাইট করেন।প্রশ্ন: এখন পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনালি কোন কোন ব্রান্ডের সাথে কাজ করা হয়েছে? সিফাত নুসরাত: এখন পর্যন্ত তিনটা ব্রান্ডের সাথে আমার কাজ করা হয়েছে। আফলাইজা, রিকোড এবং ফরএভার ফিফটি টু। কলকাতার যেসব জায়গায় ওদের আউটলেট আছে, সবগুলোতেই আমার ছবি প্রকাশ করেছে। এছাড়াও ইন্টারন্যাশনালি কয়েকজন মেকাপ আর্টিস্টের সাথে কাজ করারও সুযোগ হয়েছে।প্রশ্ন: এই তিনটি ব্রান্ডের সাথে কাজ কীভাবে হলো?সিফাত নুসরাত: কলকাতাতে যখন আমি কারমা ইন্টারন্যাশনালের ওয়ার্কশপে যাই, ওখানে সব ব্রান্ডের ওনাররা ছিলেন। সেখান থেকেই আমাকে দেখে তারা সরাসরি অঞ্জনা রয়ের সাথে কথা বলেন এবং তিনিই আমার সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দেন। প্রথমে আফলাইজা ও রিকোড এর সাথে আমার কাজ হয়। কাজগুলো রিলিজ পাওয়ার পরে কারমা সাথে পুনরায় যোগাযোগ করেন ফরএভার ফিফটি টু। তারাও আমাকে তাদের ব্রান্ডের মডেল হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হতে চান। এভাবেই কাজগুলো করি।প্রশ্ন: শুনলাম আবার কলকাতা যাচ্ছেন? নতুন কোনো ব্রান্ডের সাথে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন?সিফাত নুসরাত: কাজ ছাড়া বাইরে যাওয়া হয় না। কাজের ফাঁকেই ঘুড়াঘুড়ির একটা টাইম বের করে নেই। তা না হলে আমি সময় করে উঠতে পারি না। এবারও বেশ কিছু কাজ নিয়ে যাচ্ছি। বিস্তারিত কাজের পরে জানাবো। আপাতত এতটুকু বলতে পারি যাওয়ার আরও একটা কারণ হচ্ছে, কারমার ইন্টারন্যাশনাল মেকাপ কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হচ্ছে জানুয়ারিতে।বাংলাদেশি মডেল সিফাত নুসরাতপ্রশ্ন: দেশি ও আন্তর্জাতিক কাজের মধ্যে আপনার কি পার্থক্য মনে হয়েছে?সিফাত নুসরাত: অনেক পার্থক্য! আমি একজন বাংলাদেশি মডেল, সেখানে কাজ করতে গেয়েছি; সেটা তারা আমাকে বুঝতেও দেয় নাই। কতটুকু সম্মান একজন আর্টিস্টিকে করলে সে কাজটা পরবর্তীতেও কাজ করতে আগ্রহী হয়, সেটা তারা জানেন। আমি বারবার তাদের সাথে কাজ করতে চাই।প্রশ্ন: কারমার সাথে আপনার চুক্তি হয়েছে কত বছরের?সিফাত নুসরাত: আমি তিনটা ইন্টারন্যাশনালি ব্রান্ডের সাথে কাজের সুযোগ পাওয়ার পরে কারমা আমার সাথে তিন বছরের চুক্তি করেছে। তারা আগে আমাকে চার মাস পর্যবেক্ষণ করেছে যে, আসলেই আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়ে কতটা সিরিয়াস। যখন তারা দেখেছে সব ভালো ব্রান্ডগুলো আমাকে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করছে এবং আমিও দেশের বাইরে মুভ করে শুটগুলো করতে পারছি, তখন তারাও আমার উপর বিশ্বাস এনেছে। একটা কাজের উপর ডিপেন্ড করে কারমা কোনো মডেলের সাথে সাইনিংয়ে আসে না। আর বাংলাদেশ থেকে বাইরে মুভ করে বারবার শুট করা, সেটাও কম কথা না! যেহেতু সবগুলো ইন্টারন্যাশনালি ব্রান্ড, তাই শুটগুলো সবই দেশের বাইরে হয়। যে কারণে তাদের মনে একটু সংশয় থাকলেও আমি সেই সংশয় কাটিয়ে উঠতে পেরেছি।প্রশ্ন: নিজেকে কোথায় দেখতে চান?সিফাত নুসরাত: আমি তো চাই ইন্টারন্যাশনালি যত বড় বড় ব্রান্ড আছে, সব ব্রান্ডের সাথে কাজ করতে। বাকিটা দেখা যাবে। আসলে আমি নিজেকে আরও যোগ্য এবং আরও সমৃদ্ধ করতে চাই। আমার মনে হয় আমাকে আরও জানতে হবে, আর শিখতে হবে, আমার হাতে সময় আছে এবং নিজের উপর বিশ্বাস আছে; তাই কোনো তাড়াহুড়ো করে একটাও ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুল কাজ করতে একদমই চাই না। কারণ আমি লং টাইমের জন্য এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে এসেছি। তাই আমি একটা কাজ করার আগে অনেক সময় নিয়ে ভেবে কাজটা করি। সকলের দোয়া থাকলে হয়ত সামনে ভালো কিছু দিতে পারবো আপনাদের। প্রশ্ন: বড় পর্দা আপনাকে দেখবো কবে?সিফাত নুসরাত: সময় হলেই দেখবেন! একটা সিনেমা করে নায়িকার তকমা তো লাগাতেই পারি। কিন্তু একজন অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই, নায়িকা হিসেবে না। আমি মনে করি একসময় আমি হয়ত হারিয়ে যেতে পারি, কিন্তু আমার কাজ যেন মানুষের মনে থেকে যায়। আর অভিনয় রপ্ত করতে হলে আমাকে আরও সময় নিতে হবে, ওই যে বললাম নিজেকে আরও পলিস করতে চাই।