কাজে আসছে না সেতু, টাকা দিয়ে নদী পার হচ্ছে দশ গ্রামের মানুষ
কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তার শাখা মানাস নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে দশ বছর আগে। বন্যায় সেতুটি হেলে পড়েছে এবং দুই পাড়ের অ্যাপ্রোচ সড়ক ভেঙ্গে গেছে। সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় কাজে আসছে না সেতুটি। ফলে সেতু থাকতেও দুই পাড়ের লোকজন টাকা দিয়ে নৌকায় পারাপার হতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০১৪ সালে সরকার ও ইউএসএআইডি সংস্থার অর্থায়নে তিস্তার শাখা মানস নদীর ওপর ৩৭ লাখ ২৪ হাজার ১৮৩ টাকা ব্যয়ে ১৭ মিটার দীর্ঘ এই বক্স সেতু নির্মাণ করে। সেতু নির্মাণের পাঁচ বছর পর বন্যায় সেতুটি হেলে পড়ে এবং দুইপাড়ের অ্যাপ্রোচ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় দশ গ্রামের হাজারো মানুষ দুর্ভোগে পড়ে।স্থানীয়রা জানান, সেতুটি নির্মাণের প্রায় পাঁচ বছর পর বন্যার পানির স্রোতে দুই পাড়ের মাটি ধসে গিয়ে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।৯ অক্টোবর বুধবার বিকেলে মৌলভি বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, হেলে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর পশ্চিম পাড়ে সড়ক ভেঙ্গে গেছে। দুইপাড়ের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকার মানুষ নৌকায় পারাপার হচ্ছে।স্থানীয়দের দাবি, সেতুটির দুইপাশে ধসে যাওয়া মাটির সংযোগ সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে মূল সেতুর সাথে চলাচল উপযোগী করা হোক। সরকারি বরাদ্দ মিললে নতুন করে সেখানে সেতু নির্মাণেরও দাবি করছেন গ্রামবাসী।গোপীডাঙ্গা গ্রামের সামছুল ইসলাম (৬৫) সহ অনেকে বলেন, তিস্তার মানস নদী পার হওয়ার জন্য দশ গ্রামের মানুষের চাওয়া ছিল একটি পাকা সেতু। কিন্তু যে সেতুটি হয়েছে সেটিও ক্ষতিগ্রস্ত, বহু বছর ধরে নেই সংযোগ সড়ক।বালাপাড়া ইউনিয়ের ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) হাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন আগে তিস্তার স্রোতে সেতুর দুইপাড়ের সংযোগ সড়কের মাটি সরে গিয়ে চলাচলে অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। এলাকার মানুষেরা নিজেদের উদ্যোগে সেতুতে চলাচল করতে দুইপাড়ে বাঁশ ও কাঠের সাঁকো তৈরি করেছিল, সেটিও আবার আকস্মিক বন্যায় ভেঙে গেছে। উপায় না পেয়ে নদী পারাপারে ১০টা করে দিতে হচ্ছে নৌকার মাঝিদের।বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছাড় আলী বলেন, দুই পাড়ের লোকজনের ভোগান্তি লাগবে জরুরি ভিত্তিতে সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কার করা প্রয়োজন। কিন্তু সেটি ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন উদ্যোগ নিলে দুইপাড়ের মানুষে কষ্ট লাঘব হবে।উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির এলাকা সরেজমিনে সার্ভে করা হয়েছে। আকস্মিক বন্যার পানির কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। চলতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে একটি দল আসবে এবং তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে। অর্থ বারদ্দ সাপেক্ষে নতুন করে সেতু নির্মাণসহ অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ করা হবে।এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক জানান, খুব দ্রুত সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ স্থানে কাঠের সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে সাঁকো নির্মাণ করা শুরু করা হবে।