নানান সমস্যায় জর্জরিত সৈয়দপুর বিসিক শিল্পনগরী
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুর বিসিক শিল্পনগরী নানা সমস্যায় জর্জরিত। এখানে গড়ে উঠেছে বহু শিল্প প্রতিষ্ঠান। ওই সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজন পারপাশে প্রাচীর নির্মাণ। কিন্তু দীর্ঘ ৩৯ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি সীমানা প্রাচীর। এতে কারখানাগুলোয় প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছে । সীমানা প্রাচীর না থাকায় সন্ধ্যা হলেই এর উত্তর পাশে বসে মাদকের আড্ডা।এদিকে বিসিক শিল্পনগরীর রাস্তার অবস্থাও বেহাল। এগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন শিল্পপতি আমিনুল ইসলাম। তাছাড়া পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই রাস্তা যেন নালা নর্দমায় পরিণত হয় কাদাপানিতে।স্থানীয় শিল্প মালিক রশিদ জানান, এ শিল্পনগরীকে আরও লাভজনক করা যায়। তবে সেদিকে নজর নেই বিসিক কর্তৃপক্ষের। তাদের সঠিক সিদ্ধান্তহীনতার কারণে সম্ভাবনাময় বিসিক শিল্পনগরীতে নতুন কোনো শিল্পকারখানা গড়ে তোলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন উদ্যোক্তারা।সৈয়দপুর বাণিজ্যিক শহর হিসেবে খ্যাত। শহরের নিয়ামতপুর এলাকায় ১৯৮৪ সালে ১০ দশমিক ৯৩ একর জায়গার ওপর বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়। এতে ৯২টি প্লটের মধ্যে মোট শিল্প ইউনিট আছে ৪৯টি। এর মধ্যে কেবল একটি কারখানা পুঁজি-সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে। বাকিগুলো চালু আছে।উদ্যোক্তারা জানান, বিসিকে ১৭টি খাদ্য ও খাদ্যজাত, ১৫টি রসায়ন, ১১টি হালকা প্রকৌশল, তিনটি পাট ও পাটজাত এবং তিনটি বনজ শিল্পের কারখানা রয়েছে। এতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। কারখানাগুলোয় কর্মসংস্থান হয়েছে ৬ হাজার নারী-পুরুষের। গেল ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ শিল্পনগর থেকে ১৫০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আর উদ্যোক্তারা সরকারকে রাজস্ব দিয়েছেন ৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।এখানে পানি সরবরাহের কেন্দ্রীয় ট্যাংকটি বিকল। নেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বহিরাগতরা অবাধে শিল্প এলাকায় চলাচল করছে।বিসিক শিল্পমালিক সমিতির কার্যকরী সদস্য আব্দুর রশিদ বলেন, শিল্পনগরীটি প্রতিষ্ঠার ৩৯ বছর পার হলেও এখানে নির্মিত হয়নি সীমানাপ্রাচীর। ফলে বছরের পর বছর নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেই কারখানা চালাতে হচ্ছে মালিকদের। প্রায়ই চুরি যাচ্ছে কারখানার মূল্যবান মালপত্র। ক্রমাগত চুরির ঘটনায় মালিকেরা অনেকটা অসহায়। অনেক সময় গভীর রাতে কারখানা বন্ধ করে লাখ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই সেখানে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। তাই বাড়ি ফেরার সময় ছিনতাইয়ের আতঙ্কে থাকতে হয়।বিসিক শিল্পমালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের জন্য তাগাদা দেওয়া হলেও তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি। বিসিক কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এটি নির্মাণ করা হচ্ছে না।এসব বিষয়ে সৈয়দপুর বিসিক কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে এ শিল্পনগরীর পঞ্চবার্ষিকী উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই সীমানা প্রাচীরসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান করা হবে।