দেশজুড়ে বিনাপারিশ্রমিকে সাপ ধরে বেড়াচ্ছে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ
হুমায়ুন আহমেদ: শত ব্যস্ততার মধ্যেও বিষধর সাপের খবর পেলে ছুটে যান স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের সদস্যরা। বিনা পারিশ্রমিকে সাপ ধরে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অবমুক্ত করেন তারা।২০২০ সাল থেকে দেশজুড়ে বাসাবাড়ি, খেতখামার থেকে শত শত বিষধর, নির্বিষ নানা ধরনের সাপ ধরে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অবমুক্ত করে আসছে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের ২৫ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা রাজু আহমেদ (২৪) শখ থেকেই এ কাজ শুরু করলেও পরে স্নেক রেসকিউর ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে গড়ে তুলেছেন এই সংগঠন। বন্য প্রাণীর প্রতি ভালো লাগা থেকেই তিনি চাকরির পাশাপাশি সাপ উদ্ধার করেন।রাজু আহমেদ বলেন, ‘সাপের নাম শুনলেই মানুষ ভয় পায়। সাপ মারার জন্য অস্থির হয়ে ওঠে। একটু সচেতন হলে মানুষ সাপের কামড় থেকে বাঁচতে পারে। সাপ দেখলেই যদি তা মেরে ফেলা হয়, তাহলে পরিবেশের অনেক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’স্নেক রেসকিউ টিমের আরেক সদস্য বলেন, ‘কৃষিজমির জন্য ইঁদুর ক্ষতিকর। কিন্তু সাপ ইঁদুর দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়া দেশে যেসব সাপ পাওয়া যায়, সেগুলোর মধ্যে নির্বিষ সাপের সংখ্যাই বেশি। আর এই নির্বিষ সাপের কামড়ে চিকিৎসারও প্রয়োজন পড়ে না।’স্নেক রেসকিউ টিম সম্পর্কে রাজু বলেন, ‘এটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২০২০ সালে এই সংগঠন গড়ে তোলা হয়। স্নেক রেসকিউ টিম ২০টি জেলায় কাজ করছে। এখন অনলাইনে সদস্যদের বেসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সারা দেশে ২৫ জন স্নেক রেসকিউয়ার সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’ পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া থানার চরপাড়া গ্রামে জন্ম রাজুর। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড়। পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন।মানুষের বাসাবাড়িতে সাপ ঢুকলে খবর দিলে তিনি ছুটে যান। ছোটবেলা থেকেই সাপ রেসকিউ করার চিন্তা মাথায় আসে। প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রশিক্ষণ ছিল না তখন। ডিসকভারি, জিওগ্রাফিক চ্যানেল দেখে এ বিষয়ে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করেন। এভাবেই তিনি নিজে নিজে সাপ ধরার কৌশল শিখে নেন। পরে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের তৎকালীন সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান রাব্বির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। দুই বছর আগে সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে পুরোদমে সাপ রেসকিউ শুরু করেন।এখন তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পাশাপাশি স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।