আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে, কিন্তু গণহত্যার বিচারের পর: হারুনুর রশীদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি হারুনুর রশীদ বলেছেন, শেখ মুজিবের মৃত্যুর সময় এদেশের মানুষ ইন্না-লিল্লাহ পড়েনি, আলহামদুলিল্লাহ পড়েছিল। অন্যদিকে, জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে এদেশের মানুষ ইন্না-লিল্লাহ পড়েছে, চোখ দিয়ে পানি বের করেছে। আজকে শেখ হাসিনা বিদেশে বসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে রাজনীতিতে ফেরাতে উসকানি দিচ্ছে। আমাদের পরিষ্কার ঘোষণা, আওয়ামী লীগ দেশে রাজনীতি করতে পারবে, কিন্তু তার পূর্বে যে গণহত্যা তারা চালিয়েছে, সম্পদ লুটপাট করেছে, বিনা ভোটে ১৫ বছরে মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে, বৈষম্য করেছে এর বিচার করতে চাই।১২ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরবাগডাঙ্গায় নির্বাচন ও সংস্কারের রোড ম্যাপের দাবিতে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।সাবেক এমপি হারুনুর রশীদ বলেন, যে আইন দ্বারা শেখ হাসিনা দেলোয়ার হোসেন সাইদী, আলী হাসান মুজাহিদ, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ অন্যদের যুদ্ধাপরাধীর নাম করে বিচার করে ফাঁসি দিয়েছিল, ওই আইনেই তাদের বিচার হচ্ছে। সেই অপরাধগুলো ছিল ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময়ের সাজানো নাটক। আর এখন জুলাই-আগস্ট মাসে যে বর্বরোচিত গণহত্যা চালানো হয়েছে, তার সমস্ত আলামত সাক্ষী আছে। সুতরাং আওয়ামী লীগের এই বিচারকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।বিএনপি নেতা হারুন বলেন, গত ১৫ বছরে আলেম-ওলামারা অনেক নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। ইসলামকে নিয়ে বিভ্রান্তি ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বরে যে সমাবেশের ডাক দিয়েছিল, সেদিন রাতে অপারেশন চালিয়ে মাদরাসার ছাত্রদের গণহত্যা চালানো হয়েছিল। গত ১৫ বছরে দেশে কোরআনের তাফসির-মাহফিল বন্ধ করা হয়েছে। জঙ্গি নাটক সাজিয়ে দেশের মানুষের উপর জুলুম-নির্যাতন চালানো হয়েছে। এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে জাতি মু্ক্তি পেয়েছে।তিনি বলেন, আমরা এই বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়েছি। এই সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না। এই সরকারকে সফল হওয়ার পাশাপাশি তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার করতে হবে। আমাদের সন্দেহ হচ্ছে, সরকার কি অন্য কোনো এজেন্ডা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে! যদি অন্য কোনো উদ্দেশ্য বা পথে চলতে চান, তাহলে এদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি তা মেনে নিবে না। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনকে দূরে ঠেলে দেয়া যাবে না। একটি নির্বাচিত শক্তিশালী সরকার ছাড়া দেশের সংকটের সমাধান হবে না। তাই অবশ্যই সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে হবে।বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হারুন বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি, উপদেষ্টা বাছাই করে নিয়োগ দেয়া হবে। কারণ, সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া উপদেষ্টাদের নিয়ে বির্তক হচ্ছে। এসব নিয়ে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। আমরা যদি সমর্থন প্রত্যাহার করি, আওয়ামী লীগ লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলবে। তাই বয়ান না দিয়ে জনগণকে আশ্বস্ত করেন। জনগণের সমস্যা সংকটের সমাধান করতে গেলে অবশ্যই নির্বাচন করতে হবে।জাতীয়তাবাদী শক্তি সমর্থন কেড়ে নিলে অন্তবর্তীকালীন সরকারের পালানোর জায়গা থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও বিএনপি নেতা নাসিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক তসিকুল ইসলাম তসি, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ, বিএনপি নেতা নজরুল ইসলামসহ বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।