• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১লা আশ্বিন ১৪৩১ রাত ০২:০০:৪৮ (17-Sep-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১লা আশ্বিন ১৪৩১ রাত ০২:০০:৪৮ (17-Sep-2024)
  • - ৩৩° সে:

হিংসা অন্তরের অস্থিরতা সৃষ্টি করে

মো. কামাল উদ্দিন: ভালোর প্রতি আগ্রহ ও টান, মন্দের প্রতি ঘৃণা ও বিতৃষ্ণা মানুষের স্বভাবজাত। কিন্তু মানুষ কখনো উল্টো পথে চলে; মন্দের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে, মন্দের পেছনে ছোটে। ভালোর প্রতি অনীহা প্রদর্শন করে, ভালো থেকে দূরে থাকে।কিন্তু এটা মানুষের স্বভাবজাত নয় এবং তার সফলতার পথও নয়। স্বভাববিরুদ্ধ নিজের অকল্যাণের পথ থেকে ফেরাতে আল্লাহ বহুভাবে তাঁর বান্দাদের উৎসাহিত করেছেন। পুরস্কার ও পরিণাম তুলে ধরেছেন। এ অবস্থার কেন্দ্র যেহেতু নফস ও আত্মা, তাই আল্লাহ তায়ালা এ নফসকে নিয়ন্ত্রণ করতে বলেছেন। ভালো পথে পরিচালিত করতে বলেছেন, মন্দ পথ থেকে ফেরাতে বলেছেন।আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, অবশ্যই সে সফল হয়েছে, যে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করেছে। আর সে ব্যর্থ হয়েছে, যে তা বিনষ্ট করেছে। (সূরা শামস : ৯-১০)। নিশ্চয়ই সফল যে সকল মন্দ চরিত্র ও স্বভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হলো হাসাদ-হিংসা। আসুন আমরা আমাদের আত্মাকে হিংসা থেকে পরিশুদ্ধ করি। জেনে নিই এর উৎস, ক্ষতি ও প্রতিকার। হিংসা তৈরি হয় দৃষ্টির অপব্যবহার ও দৃষ্টিভঙ্গির সংকীর্ণতা থেকে।একটু ব্যাখ্যা করলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। আল্লাহ তায়ালা হলেন রাজ্জাক-মহা রিজিকদাতা। তিনি হাকীমও-প্রাজ্ঞ হেকমত ওয়ালা। কাউকে ধনী বানান, কাউকে দরিদ্র। এই শ্রেণিভেদ তাঁর হিকমাহ ও প্রজ্ঞারই অংশ। এরই ওসিলায় সচল থাকে জীবনের চাকা।বান্দার কাজ হলো, আল্লাহর বণ্টনের প্রতি রাজি থাকা-শোকর ও সবরের মাধ্যমে। আমরা যেন অকৃতজ্ঞ ও অধৈর্য না হই, তাই নবীজি (সা) আমাদের শিখিয়েছেন, পার্থিব বিষয়ে যেন নিজের চেয়ে নিচের ব্যক্তির দিকে তাকাই।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের চেয়ে যে উপরের অবস্থানে আছে তার প্রতি দৃষ্টি না দিয়ে যে নিচের অবস্থানে আছে তার প্রতি দৃষ্টি দাও। তাহলে তোমাদের প্রতি আল্লাহ্প্রদত্ত নিয়ামত ও অনুগ্রহকে তুচ্ছ মনে হবে না। (জামে তিরমিজি, হাদিস ২৫১৩)।মহানবী (স) এর এই নির্দেশনা অনুযায়ী যে চলে তার জীবন হয় কৃতজ্ঞতা ও সবরের, উদারতা ও মহানুভবতার। কিন্তু যখনই কেউ এই নির্দেশনাটি অমান্য করে; বঞ্চিত হয় শোকর ও সবরের অমূল্য সম্পদ থেকে, আক্রান্ত হয় হিংসার মতো ভয়াবহ মরণব্যাধিতে। হিংসা দ্বারা না হিংসুকের রিজিক বাড়ে আর না যার প্রতি হিংসা করা হয় তার রিজিক কমে। অধিকন্তু এতে হিংসুকের জন্য রয়েছে সমূহ ক্ষতি।যেমন : হিংসা অভিশপ্ত ইহুদি জাতির স্বভাব। কুরআন কারীমে যত জায়গায় হিংসার আলোচনা রয়েছে অধিকাংশই ইহুদি জাতির দুষ্কৃতির ফিরিস্তি। উদাহরণ স্বরূপ সূরা বাকারা ৯০, ১০৯। সূরা আলে ইমরান ১৯। সূরা নিসা ৫৪ ও সূরা ফালাকের ৫নং আয়াত। মূলত এই হিংসা ও হঠকারিতাই ওদের গলায় অভিশাপের বেড়ি পরিয়েছে। হিংসুকের অন্তর আমরণ অস্থিরতায় ভোগে। কারণ হিংসা আগুন। হিংসুক যখন অন্যের উন্নতি সহ্য করতে পারে না; হিংসার আগুনে নিজেই জ্বলে মরে।হিংসা নেকি ধ্বংস করে: রাসূল (স.) ইরশাদ করেন, হিংসা থেকে সাবধান! কেননা হিংসা নেকিকে এমনভাবে ধ্বংস করে; যেমন আগুন লাকড়ি ধ্বংস করে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪৯০৩)। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হিংসা থেকে বাঁচিয়ে তাঁহার নেক বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুক। (আমিন)লেখক: লেকচারার, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, আতাকরা কলেজ, কুমিল্লা।