টিকতে না পেরে সরকারি ঘর ফাঁকা রেখে বাসিন্দারা চলে গেছেন
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের নান্দাইল আদর্শ গ্রামে সরকারি উদ্যোগে নির্মিত ১৪টি টিনের ঘরের ৯টি ঘরই এখন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ২০১৬-১৮ সালে নির্মিত এই ঘরগুলোতে বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও, বাস্তবে তা বাসযোগ্য ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে গ্রামের অধিকাংশ পরিবার ঘরগুলো বিক্রি করে অন্যত্র নিজেদের ইটের পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছে।২৩ অক্টোবর বুধবার সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ১৪টি সরকারি ঘরের মধ্যে মাত্র ৫টি ঘরে এখন আদর্শ গ্রামের বাসিন্দারা থাকেন। মো. কোব্বাত আলি, রওশানারা বেগম, আজিজুল ইসলাম, বুলু মিয়া, শাহজাহান আলি, খয়বর আলি, লিয়াকত আলি, হাসান আলি, রামলাল রবিদাস টিকতে না পেরে তাদের পরিবার নিয়ে নান্দাইলদীঘি কলেজের পশ্চিম পাশে গিয়ে ইটের পাকা বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন।আদর্শ গ্রামে এখনো যারা আছেন নানা অব্যবস্থাপনা তাদের দুর্দশাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সেখানে নেই কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বর্ষা মৌসুমে কাদায় আটকে থাকতে হয় দিনের পর দিন। যাতায়াতের জন্য কোনো পাকা রাস্তা নেই, ইট বিছানো রাস্তা পর্যন্ত নেই। ফলে বর্ষাকালে কাদা ও পানি জমে রাস্তায় চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। নেই বিদ্যুতের ব্যবস্থাও।অন্যকোনো উপায় না থাকায় এসব অব্যবস্থাপনার মধ্যেও টিকে আছেন নূর মোহাম্মদ, আবুল কাসেম, জয়নাব, একমি রবিদাস, পূর্ণিমার পরিবার। টিনের ঘরে বাস করছেন তারাও চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন।তারা জানান, শুধু টিনের ঘর দিয়ে সমস্যার সমাধান হয়নি। বর্ষাকালে ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে এবং কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাছাড়া বিদ্যুতের অভাবে তাদের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।গ্রামের প্রবীণ মুরুব্বি নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘১৮ সালে এখানে আমাদের পুনর্বাসিত করার পর থেকে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। রাস্তা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ কিছুই নেই। ফলে অনেক মানুষ ঘর ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে গেছে।’খয়বর আলি, লিয়াকত আলি, আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার আমাদের ঘর দিয়েছে। কিন্তু এটা বাসযোগ্য নয়। বর্ষাকালে ঘরে পানি ঢোকে, রাস্তা এত খারাপ যে বের হওয়া যায় না। পরিবারের সবাই কষ্ট পাচ্ছিল, তাই টিনের ঘরগুলো রেখে আমরা অন্যত্র পাকা বাড়ি করেছি।’এ বিষয়ে কালাই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান বলেন, ‘নান্দাইলদীঘী আদর্শ গ্রামের অবকাঠামোগত সমস্যার বিষয়ে কেউ আমাদের অবগত করেননি। আর নয়টি পরিবার চলে যাওয়ার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টি খতিয়ে দেখে সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’