• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৯:৪৩:২৫ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৯:৪৩:২৫ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

কক্সবাজারে নতুন নতুন কৌশলে বিক্রি হচ্ছে মাদক

কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারে মাদক এখন ফ্যাশনের মতো হয়ে গেছে! কে কীভাবে মাদক বিক্রি করবে তা নিয়ে চলছে প্রতিযোগিতা।  আর এই মাদকের থাবায় জেলার অসংখ্য পরিবার এখন ধ্বংসের পথে।মাদকের সর্বব্যাপী বিস্তার ঠেকিয়ে তরুণ প্রজন্মকে এর অভিশাপ থেকে রক্ষায় ২০১৮ সালের ৪ মে দেশজুড়ে বিশেষ অভিযান শুরু করে র্যাব। এরপর পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থাও মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। অভিযান চলাকালে ব্যক্তি মাদক কারবারে জড়িত অনেকেই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যায়।গ্রেফতার হয় কয়েক হাজার, তবু মাদক নির্মূল করা যায়নি। কারবার চলছেই। করোনার মতো বৈশ্বিক মহামারিও মাদককে রুখতে পারেনি। বর্তমানে মাদকাসক্ত ও পাচারে জড়িয়ে ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে শত শত তরুণ।মিয়ানমার থেকে অবাধে ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক পাচার হয়ে আসার কারণে কক্সবাজার যেন মাদকের হাব হয়ে উঠেছে। সহজলভ্য হওয়ায় মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে শত শত তরুণ।অল্প বয়সে মাদকে জড়িয়ে পড়া এমন দুই তরুণ রিফাত উদ্দিন রায়হান ও নেজাম (ছদ্মনাম)। মাদকাসক্ত হয়ে নিজেদের জীবনকে বিপদগ্রস্ত করে অনেকটাই হতাশায় পড়েছেন তারা। তারা দুই বন্ধু চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করতে গেলে সেখানে জড়িয়ে পরেন মাদক সেবনে। সবকিছু হারিয়ে কক্সবাজার এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুজনই।তারা বলেন, নিজেদের পরিবার ছাড়া কেউ কথা বলেন না। সমাজের বোঝা হয়ে থাকতে হয়েছে বহুদিন। পরিবার-পরিজন সকলের কাছে নিগৃহীত হতে হয়েছে। সবশেষে কক্সবাজারে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র রিহাব সেন্টারে এসে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন তারা। ২৬ জুন বুধবার আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবসে তরুণদের মাদক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এমন গল্পই তুলে ধরেছেন তারা।আগের ২৫ জুন মঙ্গলবার শহরের ইসলামাবাদ পশ্চিম লালার পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হচ্ছে। কক্সবাজার শহরের ১৭টি পয়েন্টে ইয়াবা, গাঁজা, চোলাই মদসহ অন্যান্য মাদক বিক্রির সিন্ডিকেট রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবস ঘিরে নানা আলোচনায় উঠে আসে কক্সবাজার শহরের বড় বাজার, রাখাইন পল্লী, টেকপাড়া, বাহারছড়া, পেশকার পাড়া, বাসটার্মিনাল, কলাতলি, পাহাড়তলী, লাইট হাউজ, গোলদিঘিসহ মাদকের নানা স্পটের কথা।পর্যটন শহর কক্সবাজারে মাদকের আগ্রাসন বেড়েই চলছে। কোনভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না মাদক পাচার, সেবন ও ব্যবসা। হুমকির মুখে তরুণ প্রজন্মের অনেকে। শঙ্কায় অভিভাবক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। প্রশাসনের আটক অভিযানের পরেও থেমে নেই মাদক কারবার।তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে, আগের চেয়ে কমে এসেছে মাদক মামলা। সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে কিছুটা হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পরিদর্শক জীবন বড়ুয়া জানান,  গত বছর ৯ লাখ পিস ইয়াবা, ২৪ কেজি গাঁজা, ৮৬৫ লিটার চোলাই মদ, ৪ কেজি ৭৬ গ্রাম হিরোইন, ২ কেজি আইস জব্দ করা হয়েছে। সর্বমোট ২২২টি মাদক মামলায় নিয়মিত ১৭২টি ও মোবাইল কোর্টে ৫০টি মামলা রুজু করে ২৭৫ জনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।সম্প্রতি পুলিশের কোনো অভিযান চোখে না পড়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আবারও সক্রিয় হয়েছে গা ঢাকা দেওয়া এবং জেল ফেরত আত্মসমর্পণকারী মাদক কারবারিরা। এমনই দাবি করেছেন কক্সবাজারের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা জানান, কক্সবাজারকে মাদকের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পর্যটন নগরীর এই বদনাম ঘুচাতে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা বিকল্প নেই বলেও মনে করছেন তাা।জেলার স্পেশাল পিপি নারী ও শিশু দমন ট্রায়বুনালের এডভোকেট একরামুল হুদা বলেন, যারা মাদকের সাথে জড়িত আছেন তাদের নির্মূল করতে এলাকার সচেতন মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। মাদক করাবারিদের আশ্রয় ও প্রশয়দাতা হিসাবে রয়েছেন সমাজের প্রভাবশালী কিছু লোক। তাদের কারণে সমাজ ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে।এডভোকেট সরোয়ার বলেন, মাদকের কারণে কক্সবাজারের বদনাম হচ্ছে। পাশের দেশ মিয়ানমার থেকে সহজেই মাদক আসে কক্সবাজারে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা বা শহরে চলে যায়। এ সমস্যা সমাধানে সম্মিলিত প্রতিবাদ করা জরুরি।কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের মুখপাত্র এইচ এম নজরুল বলেন, দিবস আসলেই সবাই নড়েচড়ে বসেন। এরপর আর কোনো খবর থাকে না। সীমান্তে এতোগুলো মাদক জব্দ করে প্রশাসন কিন্তু কোনো কারবারি ধরা পড়ে না। এ বিষয়গুলো নিয়ে সাধারণ মানুষ শঙ্কিত। কারণ নতুন প্রজন্মের কাছে মাদক ছড়িয়ে পড়ছে সহজে। এটি রোধ করা সময়ের দাবি।