• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ১১:৩৭:৪১ (03-Dec-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ১১:৩৭:৪১ (03-Dec-2024)
  • - ৩৩° সে:

মানিকগঞ্জে সরকারি ভূমিতে উচ্ছেদ অভিযানে বাঁধা, মালিককে কারাদণ্ড

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের ভাড়াড়িয়া বাজারে সরকারি খাস ভূমিতে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের অভিযোগ ও উচ্ছেদ অভিযানে সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ায় দোকান মালিক গ্রিস প্রবাসী সায়েম খানকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক। পরে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার  বিকেলে ভাড়াড়িয়া বাজার এলাকায় এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দেন দোকান নির্মাণকারী সায়েম খানসহ তার পরিবার। পরে দোকান থেকে দোকান নির্মাণের মালামাল সরিয়ে নিতে বললে সায়েম, তার মা,স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে যায় এবং উচ্ছেদে বাঁধা দেন। এরপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতা সায়েমকে আটকে করে সদর উপজেলার ভূমি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম।অভিযানে হরিরামপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) মো. শাহরিয়ার আশরাফ, সেনাবাহিনীর একটি টিম ও সদর থানা পুলিশের একটি টিমসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া বাজারের সরকারি খাস জমি দখল করে  ৮ থেকে ১০ টি দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে বিগত ২০২১ সালের দিকে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরে খাস জমি উদ্ধারে তৎপর হয় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ওই সময় খাস জমিতে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য দুইবার দোকান মালিকদের নোটিশ করে প্রশাসন। পরে ব্যবসায়ীরা আদালতে একটি মামলা দায়ের করলে উচ্ছেদ অভিযান স্থবির হয়ে পড়ে। প্রায় দুই বছর আগে সরকারি খাস জমি দখল করে রাতারাতি দোকান নির্মাণ করেন গ্রীস প্রবাসী সায়েম খান। পরে ওই সময় ভাড়ারিয়া ইউপি ভূমি অফিসের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা মৌখিকভাবে বাধান দেন। কিন্তু নিষেধ অমান্য করেই দোকান নির্মাণ করা হয়।সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরে দেশে আসেন প্রবাসী সায়েম খান। এর পর সুযোগ বুঝে ওই খাস জমি দখল করে অবৈধভাবে আবারো দোকান নির্মাণ শুরু করলে সরেজমিনে গিয়ে গত ২৪ অক্টোবর মৌখিকভাবে বাঁধা দেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি)। ওই সময় দোকান নির্মাণ বন্ধ করে মালামাল সরিয়ে নিতে সাত দিনের সময় দেওয়া হয় দোকান মালিককে। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সায়েম দোকান নির্মাণ করেন।স্থানীয় ব্যবসায়ী মোস্তফা বলেন, 'ভাড়ারিয়া বাজার হরিরামপুর আর সদর উপজেলার শেষ প্রান্ত। সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া মৌজায় ৩০০২ নং দাগে সরকারি খাস জমি দখল করে ৮ থেকে ১০ টি দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছেন দখলদাররা। তাদের নামে তালিকা এসি ল্যান্ড ও জেলা প্রশাসক অফিসে দেওয়া আছে। তবে ভাড়ারিয়া ইউপি ভূমি অফিসের নায়েব বাধা দিলেও তা মানেন না দখলদাররা। নতুন করে সায়েম খান নামের এক প্রবাসী খাস জমি দখল করে দোকান নির্মাণ করছে। পরে মৌখিকভাবে নিষেধ করলে তারা নায়েবের কথা কর্ণপাত না করেই দোকান নির্মাণ করেছে। আমরা ব্যবসায়ী চাই যাতে কেউ সরকারি জমি দখল করতে না পারে।এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) জহিরুল আলম বলেন, 'সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া বাজার সরকারি খাস ভূমি দখল করে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ করেছেন গ্রিস প্রবাসী দাবি করা সায়েম খান নামের ব্যক্তি। এর আগেও গত ২৪ অক্টোবর আমি সরেজমিনে ওই বাজারে গিয়ে তাকে মৌখিকভাবে দোকান নির্মাণ না করতে বলে আসি এবং মালামাল সরিয়ে নিতে বলি। কিন্তু তিনি সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে পুনরায় দোকান নির্মাণ করেন। সরকারি খাস ভূমি রক্ষার্থে আজকে সেনাবাহিনীর একটি টিম ও সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় অবৈধ দোকান উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় সরকারি কাজে বাঁধা দেন সায়েম ও তার মা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবার।তিনি আরও বলেন, 'সরকারি ভূমি রক্ষার্থে উচ্ছেদ অভিযানে বাঁধা দেওয়ায় তাকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে গ্রিস প্রবাসী ও দোকান মালিক সায়েম খানকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। ওই বাজারের অবৈধভাবে খাস জমি দখলকারীরা আদালতের মাধ্যমে ইনজেনশন (স্থগিতাদেশ) করে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আদালতে ইনজেনশন (স্থগিতাদেশ) বাতিল করে সরকারি খাস ভূমি উদ্ধারের সবগুলো দোকান উচ্ছেদ করা হবে বলে তিনি জানান।উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জের দায়িত্ব থাকা সেনাবাহিনীর মেজর মিনহাজ ও সেনবাহিনীর একটি টিম, সদর থানা পুলিশ, আনসার সদস্য এবং ভাড়ারিয়া বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীরাসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সহযোগিতা করেন।