ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কাঁচাবাজার: নেই প্রশাসনিক নজরদারি
রাশেদুল ইসলাম: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা ও ভুলতা হাইওয়ে পুলিশের নজরদারির অভাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই তৃতীয়াংশ জুড়ে প্রতিদিন বসছে কাঁচাবাজার। মাসে দুয়েকবার উপজেলা প্রশাসন সকালে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও বিকেলে আবার দখল হয়ে যায়। ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ও ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আধা কিলোমিটারজুড়ে এ কাঁচাবাজার বসছে।সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, রূপগঞ্জের ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশের নাকের ডগায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে ঝুঁকিপূর্ণ কাঁচাবাজারের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগণসহ যাত্রীদের। উপজেলার সাওঘাট থেকে ভুলতা পর্যন্ত মহাসড়কের একপাশে কাঁচাবাজার ও অপর পাশে কাপড়, জুতা, ফলের দোকানের দখলেই থাকে। ভুলতা ও গোলাকান্দাইল ফ্লাইওভারের নিচে প্রতিনিয়ত বসছে শতাধিক কলা ও আখ বিক্রেতাদের ভাসমান দোকান। মহাসড়কের আধা কিলোমিটার জুড়ে প্রতিদিন বাজার বসায় অরক্ষিত মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। মহাসড়ক থেকে কাঁচাবাজার ও ভাসমান এসব দোকানপাট মাঝে মাঝে লোক দেখানো উচ্ছেদ করা হলেও ২-৩ ঘণ্টা পরই আবার দখল হয়ে যায়।এলাকাবাসী জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা ফ্লাইওভারের নিচের চারলেনের সুফল কেড়ে নিচ্ছে মহাসড়কে নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা। নির্দিষ্ট স্থান পর্যন্ত স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা বা বাজার বসা সম্পূর্ণ অবৈধ থাকলেও সড়কের উপর ও সড়ক ঘেঁষে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় চাঁদাবাজদের দখলে রয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মহাসড়ক দখল করে বাজার বসানোর ফলে মহাসড়কটি প্রতিনিয়ত অনিরাপদ হয়ে উঠছে।সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে বাজার বসে। সেখানে মাছ, তরকারি ও নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালসহ কাপড়, জুতা ও ফলের পসরা নিয়ে বসেন দোকানদাররা। বাজার বসার পর সড়কে যান চলাচলের জন্য জায়গা থাকে খুবই কম। এসব স্থানে এসে যানবাহনগুলোকে চলতে হয় অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে। ফলে মহাসড়কের মতো ব্যস্ত সড়কের এ স্থানগুলোতে এসে যানজট পোহাতে হয় দূরপাল্লার যানবাহনকে। ভ্যানে করে কিছু ভ্রাম্যমাণ দোকানিদের রাস্তার মাঝে অবস্থান করতে দেখা যায়।এতে ক্রেতা ও বিক্রেতা দুইপক্ষই থাকেন সড়ক দুর্ঘটনার চরম ঝুঁকিতে। একটু অসাবধানতায় মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। সম্প্রতি এ সকল স্থানে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে। এসব বাজারের চাঁদাবাজদের ভাষ্য, মহাসড়কে বাজার বসা বৈধ না অবৈধ এটা তাদের জানা নেই। তারা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমেই এসব বাজারের অনুমতি পেয়েছেন। জায়গার অভাবেই মূলত সড়কের উপর বাজার চলে আসে।হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এসব অবৈধ বাজার চাঁদাবাজদের জন্য মাঝে মধ্যে উচ্ছেদ করতে গেলেও হিমশিম খাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ।ভুলতা হাইওয়ে পুলিশের টিআই আশরাফ জানান, মহাসড়কের নিরাপত্তার স্বার্থে সেখান থেকে বাজার সরিয়ে দিতে আমরা প্রতি সপ্তাহেই তাদেরকে সতর্ক করার পাশাপাশি অভিযান পরিচালনা করছি।টিআই আশরাফ আরও বলেন, ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ যদি আমাদেরকে একটু সহযোগিতা করতেন তাহলে আমরা এসব অবৈধ বাজার মহাসড়ক থেকে পুরোপুরি উচ্ছেদ করতে সক্ষম হবো। তবে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়াও মহাসড়কজুড়ে একাধিক পিকআপ ভ্যান, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার স্ট্যান্ড রয়েছে। ফলে যানজট নিরসন করা যাচ্ছে না।রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এখানে সদ্য যোগদান করেই একাধিকবার মহাসড়কে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। অভিযান অব্যাহত আছে। তবে মহাসড়কে ভাসমান দোকান বসা সম্পূর্ণ বেআইনি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকায় উলটো পথে সিএনজি ও অটোরিকশা চলাচলের কারণেও নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনা এবং যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।