• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ভোর ০৫:১২:৫২ (24-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ভোর ০৫:১২:৫২ (24-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

ভারি বর্ষণ: ভাঙন আতঙ্কে মুরাদনগর ও দেবীদ্বারবাসী

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: চলতি বছর বর্ষার শুরুতে ভারি বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে গোমতীতে থইথই করছে পানি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এক সময়কার খরস্রোতা গোমতী নদীকে খাঁ-খাঁ বালুচরে পরিণত হতে দেখা গেছে। ভরা বর্ষায়ও কাঙ্ক্ষিত পানির দেখা পাওয়া যায়নি।কিন্তু চলতি বছর বর্ষার শুরুতে ভারি বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে যেন যৌবন ফিরে পেয়েছে কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী নদীটি। বর্তমানে গোমতীতে থইথই করছে পানি। এতে অবতারণা হয়েছে এক নয়নাভিরাম দৃশ্যের। আবার নদীর পাড় ভেঙ্গে বাড়িঘর ডুবে যাওয়ার আতঙ্কও রয়েছে।ভারত-বাংলাদেশের যৌথ নদীগুলোর একটি হলো গোমতী নদী। এটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তরপূর্ব পার্বত্য অঞ্চলের ডুমুর নামক স্থানে উৎপত্তি হয়ে এঁকে-বেঁকে কুমিল্লা সদর উপজেলার কটকবাজার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ভারত-বাংলাদেশের অন্যান্য যৌথ নদীর মতো গোমতীতেও বছরের অধিকাংশ সময় পানির দেখা পাওয়া যায় না।এছাড়া স্থানে স্থানে বিশাল এলাকাজুড়ে জেগে উঠেছে চর। এসব চরে সবজিসহ নানা ফসলের আবাদ হয় বারো মাস। এ বছর আকস্মিক ভারি বর্ষণে মৌসুমি ফসলের কিছুটা ক্ষতি হলেও গোমতীর বুকে থইথই পানি দেখে খুশি গোমতী পারের মানুষ।কুমিল্লার গোমতী নদী তীরবর্তী মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজার, ধামঘর, ত্রিশ, ভূবন ঘর, দড়িকান্দি ও দেবীদ্বার উপজেলার বিনাইটাড়, শিবনগর, বড় আলমপুর ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের বর্ষণে এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে থইথই করছে।মুরাদনগর বাজারের ব্যবসায়ী রিপন সরকার বলেন, ‘আমার বাপ-দাদার কাছ থেকে শুনেছি, এই নদীকে কেন্দ্র করে ৩০০ বছরে আগে মুরাদনগর বাজার গড়ে ওঠে। গোমতী নদীতে পানি না থাকায় এক সময়ের নামডাকওয়ালা বাজারও এখন যেন মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। বহু বছর পর নদীতে পানি দেখে পুরোনো স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। এইতো সেদিন বড় বড় নৌকা ভিড়ত বাজারে।ধামঘর গ্রামের গোমতী পারের বসতি মুরাদনগর উপজেলার সাবেক তিন বারের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সানোয়ারা বেগম লুনা স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে বলেন, এক সময় এই অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান পথ ছিল গোমতী নদী। নদীতে ছোট-বড় অনেক নৌকা চলত। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এই বাজারে আসত পণ্য কেনা বেচার জন্য। এখানে ছিল এক সময়ের অর্থকরী ফসল পাটের বৃহত্তম বাজার।জানা গেছে, ত্রিপুরা রাজ্যের উদয়পুর-সোনাইমুড়ী থেকে উৎপত্তি হওয়া নদীটি কুমিল্লা সদর, বুড়িচং, দেবীদ্বার, মুরাদনগর, তিতাস ও দাউদকান্দি হয়ে মিলিত হয়েছে মেঘনা নদীর সঙ্গে। নদীটির দৈর্ঘ্য ৯৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৬৫ মিটার।কিন্তু এবার গ্রীষ্মের মাঝামাঝি থেকেই পাল্টে যেতে থাকে সেই চিত্র। কয়েক সপ্তাহের মাঝারি ও ভারি বর্ষণের সঙ্গে পাহাড়ি বানে যৌবন ফিরিয়ে দিতে থাকে তার। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পানি, সঞ্চার হতে থাকে প্রাণ। রোগা ভাব কাটিয়ে সে এখন পূর্ণ যৌবনা। খরস্রোতা না হলেও প্রবহমান।গোমতীর সুদর্শন বেড়ীবাঁধ ও নদীর পাড়ঘেষা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিছু জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে ছোট ছোট বিনোদন কেন্দ্র। এগুলো ঘিরে শেষ বিকেলে জমে দর্শনার্থীদের ভিড়। নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই বিভিন্ন বয়সী নানা শ্রেণিপেশার মানুষের ভিড় বাড়ে নদীর পারে।