যাত্রাবাড়ীতে দুবৃর্ত্তের ছুরিকাঘাতে অন্তঃসত্তা নারী ও নবজাতক নিহত
যাত্রাবাড়ি (ঢাকা) প্রতিনিধি: রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি বাসায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সীমা আক্তার (২২) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতালে ওই নারীর ভূমিষ্ঠ হওয়া সদ্য নবজাতকও মারা গেছে। ২৮ আগস্ট বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিমা আক্তার মারা যান।এর আগে, মঙ্গলবার রাতে সিজারে সিমা আক্তারের একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তবে, রাতেই নবজাতটি মারা যায়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাসায় ঢুকে ওই নারীকে ছুরিকাঘাত করা হয়।নিহতের স্বামী জুয়েল জানান, আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় মাঝেমধ্যেই আমার শ্বশুরবাড়িতে যেত। গতকাল সে তার বাবার বাড়িতে যায়। তখন এক যুবক হাতে ধরালো অস্ত্র নিয়ে বাসায় ঢুকে পড়ে। আমার স্ত্রী ওই যুবককে বারবার বলে যে, আমার পেটে বাচ্চা আছে আমাকে মেরো না। সে কোনো কথা না শুনেই আমার স্ত্রীকে ধরালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। আমার স্ত্রী ও আমার সন্তানকে যারা হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।নিহতের ভাই নাসির জানান, সীমা তার স্বামী জুয়েলকে নিয়ে আমাদের বাসার কাছাকাছি ভাড়া বাসায় থাকে। জুয়েল যাত্রাবাড়ী মোড়ে ফলের ব্যবসা করে। মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় আসত। আমার বোনের চার বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। মঙ্গলবার আমার বোন আমাদের বাসায় আসে। রাতে এক যুবক ছুরি হাতে বাসার ভেতরে ঢুকে পড়ে। সে সময় আমার বোন ও চার বছরের ভাগনে বাসায় ছিল। ওই যুবক কিছু না বলেই ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমার বোনের দিকে এগিয়ে যায়। তখন সীমা বলে আমাকে মারবেন না, আমার পেটে সন্তান আছে। সীমার কথা না শুনেই পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তবে, ওই যুবককে চিনতে পারেনি সীমা। তিনি আরও জানান রাতেই সীমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ওর সিজার করেন চিকিৎসকরা। সীমার ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তবে, সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া আমার ভাগনের বুকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। তখন চিকিৎসকরা নবজাতকটিকে এনআইসিইউতে নিতে বলেন। হাসপাতালে এনআইসিইউ ফাঁকা না থাকায় অন্য হাসপাতালে নিতে নিতে রাতেই মারা যায় আমার ভাগনে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেলে আমার বোন মারা যায়।ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে ছুরিকাঘাতে আহত এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ভর্তি করা হয়। রাতেই সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি করা হয়। তবে, শিশুটি মারা যায়। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলের দিকে মারা যান নবজাতকের মা সীমা আক্তার। তার পেটে ছুরিকাঘাত চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।