• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৭ই বৈশাখ ১৪৩২ সকাল ০৭:১৪:৫৮ (20-Apr-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৭ই বৈশাখ ১৪৩২ সকাল ০৭:১৪:৫৮ (20-Apr-2025)
  • - ৩৩° সে:

মধুপুরে নববর্ষে বাড়তি আনন্দ যুগিয়েছে ঘোড়া-মহিষের গাড়ি

মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই কত রব আমি পন্থের দিকে চাইয়া রে’ গ্রাম-বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্যের এমন গান স্মরণ করে দেয় মহিষ আর ঘোড়ার বাহন। মাথায় সুতি রঙিন গামছা। হাতে মহিষ তাড়ানোর ছোট লাঠি। কালো রঙের এক জোড়া মহিষ। কাঠ বাঁশের তৈরি গাড়ি। কণ্ঠে অবলীলায় গ্রাম বাংলার গান। মেঠো পথের গাঁয়ের ধেঁয়ে চলা। রাখালের পাশে বসা কয়েকজন সহযাত্রী। ধিকে ধিকে চলছে গ্রামের পর গ্রাম। দূর থেকে ভেসে আসছে গাড়ির চাঁকার কিচির কিচির শব্দ। এমন চিরচেনা দৃশ্য চোখে পড়ল এ নববর্ষের প্রথম দিনে। এমন আয়োজন ছিল মধুপুর উপজেলা প্রশাসনের বাংলা নববর্ষ উদযাপনে।১৪ এপ্রিল সোমবার মধুপুর উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত নববর্ষের ওই অনুষ্ঠান সকল শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণে উৎসব মুখর হয়ে উঠে।মুক্ত মঞ্চে জাতীয় সংগীত ও ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ বৈশাখী এ গানের মধ্যে দিয়ে নববর্ষের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে লোকজ মেলার উদ্বোধন হয়।গাড়িয়ালের স্থানে ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোস্তফা হোসাইন ও থানা অফিসার্স ইনচার্জ ইমরানুল কবির। মাথায় গামছা বেঁধে রাখালের গাড়িতে বসে ছিলেন মধুপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান।হারিয়ে যেতে বসা এমন দৃশ্য নববর্ষের আয়োজনে আসা সবাইকে দারুণ আনন্দে মাতিয়েছে। হাসিমাখা মুখের বর্ণীল ছড়িয়েছে উপজেলার মুক্তাঙ্গনে। দারুণভাবে সাজানো ঘোড়ার গাড়িতে উঠে ঘুরেছে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়া। আগের দিনের গ্রামীণ ঐতিহ্যে মেতে উঠে ছিল সকালের রোদের সাথে পাল্লা দিয়ে সব বয়সী মানুষেরা। প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতেছিল স্কুল কলেজের শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি অফিস-প্রতিষ্ঠান ও পাড়ার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।আয়োজনে বাড়তি আনন্দ জুগিয়েছে জেলে ও তাঁতীদের নানা পর্ব। জেলের মাথায় গামছা আর কাঁধে জাল, কোমড়ে খালই, হাতে বরশী এবং কৃষকের কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল। এছাড়াও ছিল লোকজ মেলা, গণনাটক ও নাগর দোলা। এমন দৃশ্যগুলো জানান দেয় বাংলা আর বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির কথা।অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়েছিলো বাঙালির পহেলা বৈশাখের খাবারের সংস্কৃতিও। ছিল পানতা, কাঁচা মরিচ, ইলিশ, আলু ভর্তা, পাটশাকসহ নানা খাবারের আয়োজনও।এদিকে বিকালে লোকজ মেলা ছিল সকল বয়সের লোকজনে সমাগম। ১৩ টি স্টল বসে ছিল পসরা সাজিয়ে। মেলা উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মঞ্চায়িত গণনাটক ‘সিট খালি আছে দারুণ উপভোগ্য ছিল।মধুপুর শিল্পকলা একাডেমী, মধুপুর নৃত্যাঙ্গণ সংস্থা ও স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় নাচ ও গানের আয়োজন ছিল।মাঠ জুড়ে বসে ছিল নানা পণ্যের দোকান। দোকানিরা পসরা সাজিয়ে ছিল নানা জাতি গোষ্ঠীর ব্যবহার্য জিনিসপত্রের। কারিতাসের গারোদের বাদ্যযন্ত্র, পোশাকের স্টল আর চিত্রা নকরেকের বাঁশের জিনিসপত্র সবার নজর কেড়েছে। মাটির জিনিসপত্র, কাপড় ও পোশাকের দোকানও ছিল দর্শনীয়।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়ার নেতৃত্বে ঘোড়া-মহিষের গাড়ি, পালকিসহ আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে আনারস চত্বর প্রদক্ষিণ করে পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়।  এ ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনও নববর্ষের আয়োজন করে। মধুপুর উপজেলা বিএনপি সকালে দলীয় কার্যালয় থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করে থানা মোড় ঘুরে আসে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার, সহ-সভাপতি এম রতন হায়দার এ সময় বক্তব্য রাখেন। শোভাযাত্রায় তাদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ গ্রহণ করেন।