সকল সংস্কৃতির মধ্যে ঐক্যের বন্ধন গড়ে তুলতে চাই: কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা
নিজস্ব প্রতিবেদক: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেছেন, আমরা সকল সংস্কৃতির মধ্যে ঐক্যের বন্ধন গড়ে তুলতে চাই।১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের মাল্টিপারপাস হল রুমে পার্বত্য মেলা-২০২৪ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি এ কথা বলেন।অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমান এনডিসির সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুই প্রু চৌধুরী অপু, যুগ্মসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্মসচিব মো. হুজুর আলী, যুগ্মসচিব সজল কান্তি বনিক, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আগত অতিথিবৃন্দ, বিভিন্ন সংস্থা থেকে আগত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ দেশের উন্নয়নের মূল স্রোতধারার সাথে মিশে একাকার হতে চাই। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উন্নত বাংলাদেশ তথা ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় বিশেষ ভূমিকা রাখতে চাই।প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন সম্প্রদায় আছেন, যারা সংস্কৃতিমনস্ক ও সৃজনশীল কাজের প্রতি অনুরাগী। এই মেলার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চিত্র ফুটে ওঠেছে। তিন পার্বত্য জেলায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য সামগ্রী, হস্তশিল্প, ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে বোনা পণ্য, বিভিন্ন মৌসুমী ফল, ঐতিহ্যবাহী পার্বত্য খাবার এ মেলার প্রধান আকর্ষণ। এ মেলাকার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর প্রচার ও বিপণন করে তাদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।তিনি আরও বলেন, এ মেলাকে কেন্দ্র করে পার্বত্য অঞ্চলে ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। পার্বত্য অঞ্চলের সাথে সমতলের বাসিন্দাদের যোগাযোগের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়েছে, দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। সকল সংস্কৃতির মাঝে যদি আমরা ঐক্যের বন্ধন সৃষ্টি করতে পারি তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের কথা ভাবে, দেশের শান্তির কথা ভাবে বলেই পার্বত্য অঞ্চলে দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক সংঘাত বন্ধ হয়েছে।সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মশিউর রহমান বলেন, পার্বত্য এলাকার মানুষের জীবন-সংস্কৃতি, পোশাক-পরিচ্ছদ, ইতিহাস-ঐতিহ্য বিষয়ক তথ্য সমতলের মানুষের মাঝে পরিচয় করিয়ে দেয়ার উদ্দেশে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার যে ঐতিহ্যবাহী সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে তা সমতল মানুষের কাছে তুলে ধরাই ছিল আমাদের এ প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য।উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ৪ দিনের পার্বত্য মেলায় ৯৭টি স্টল অংশ নেয়। চারদিনব্যাপী এ মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী ও ক্রেতার সমাগম ঘটে। রাজধানীতে পাহাড়ি পণ্যসামগ্রী পেয়ে সমতলের ক্রেতারা বেজায় খুশি। কেনাকাটার ধুম আর জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে পার্বত্য মেলা-২০২৪।