দেশের উন্নতির জন্য উদ্যোক্তা প্রয়োজন: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের উন্নতির জন্য উদ্যোক্তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তিনি বলেছেন, আমরা উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করি। আমাদের সরকারি-বেসরকারি, বিভিন্ন পর্যায়ে উদ্যোক্তা প্রয়োজন। তাদের দেশে রাখার পরিবেশ তৈরি করতে হবে কারণ দেশের উন্নতির জন্যই উদ্যোক্তা প্রয়োজন। ডা. বিধান রঞ্জন রায় বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ উদ্যোক্তারা স্বল্প শিক্ষিত। যারা উচ্চশিক্ষিত হন তারা বেশিরভাগ চাকরিমুখী। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় চাকরি ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারি না আমরা। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও কথাটা একই ভাবে প্রযোজ্য। তিনি বলেন, আমাদের কারিকুলাম বরাবর যেটা চলে এসেছে সেটা আমাদের সেই চাকুরি ভিত্তি শিক্ষাই দেয়। যে বিষয়টি আমরা অবজ্ঞা করেছি বিগত কারিকুলামে কয়েকটি পজিটিভ দিকও ছিল। যেমন প্রাক্টিক্যালি কাজ করে আয়ত্ত করা, যৌথভাবে কাজ করা এই প্রসঙ্গগুলো ছিল কিন্তু সেগুলো আমরা বর্জন করে ফেলেছি এর কারণ আমাদের মানসিক জড়তা। অভিভাবকরা মনে করেন আমাদের ছেলে মেয়েরা সেটাই করবে যেটা আমরা করে এসেছি। বাচ্চাদের শুধু পরীক্ষা দিতে হবে তাতে ভালো মার্কস পেতে হবে এটাই লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন, মানুষের জন্য স্পেসিফিক বিষয় হল তার কল্পনা উদ্ভাবনী। আমি মনে করি আমাদের কারিকুলাম এমন হওয়া উচিত যেখানে মানুষ মুক্ত চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ হবে, যেখানে উদ্ভাবনী চিন্তা উৎসাহিত হবে। সমাজের সকলে এ ব্যাপারে সচেতন হয়ে অংশ নিলে সরকারের জন্য এ কাজ সহজ হবে।২৩ নভেম্বর শনিবার ‘বাধা দূর করুন এবং সবাইকে স্বাগত জানান’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বাংলাদেশে ১৮-২৪ নভেম্বর ২০২৪ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব ইনোভেশন এন্ড এন্ট্রাপেনিউরশীপ এর আয়োজনে উদযাপিত গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রিনিউরশীপ উইক ২০২৪ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে ড্যাফোডিল প্লাজার ৭১ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘ইয়ুথ এন্ট্রপেনিউরমীপ সামিট’ এর মাধ্যমে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল এন্টারপ্রেনারশিপ নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার দক্ষতা বিশেষজ্ঞ মি. গুনজন দাল্লাকটি, মাইক্রোসফট বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউসুফ ফারুক, বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব উইমেনস এন্ট্রাপ্রিনিউিরস এর সভাপতি ড. রুবিনা হোসেন এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনোভেশন অ্যান্ড এন্ট্রাপেনিউরশীপ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গ্লোবাল এন্টারপ্রেনারশিপ উইক ২০২৪ এর ন্যাশনাল হোস্ট ও বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক কে এম হাসান রিপন।এ বছর গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রিনিউরশীপ উইক (১৮-২৪ নভেম্বর) বিশ্বের ২০০টি দেশ জুড়ে উদযাপিত হয়, যেখানে ৪০,০০০ এর বেশি ইভেন্ট এবং দশ মিলিয়ন মানুষ এই উদযাপনে অংশ নেয়। বাংলাদেশে, গ্লোবাল এন্ট্রপ্রিনিউরশীপ নেটওয়াক-বাংলাদেশ (এঊঘ বাংলাদেশ) ৫০টিরও বেশি অংশীদার সংস্থার সাথে ৫০০টির বেশি ইভেন্ট আয়োজন করে, যা সরাসরি ১ লাখ এবং ডিজিটালি ৩০ লাখ যুবকদের প্রভাবিত করে।গ্লোবাল এন্ট্রপ্রিনিউরশীপ নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (জেন বাংলাদেশ), জিইএন ক্যাম্পাস ঢাকা এবং নলেজভেল এর সহযোগিতায়, উদ্যোক্তা পরিবেশকে শক্তিশালী করতে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। গ্লোবাল এন্টারপ্রেনারশিপ নেটওয়ার্কের (জেন) অংশ হিসাবে, জেন বাংলাদেশ নতুন ও প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তাদের জন্য রিসোর্স, পরামর্শ এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করে তাদের সফলতার পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে যা উদ্ভাবন, কর্মসংস্থান এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।অনুষ্ঠানে গ্লোবাল এন্টারপ্রেনারশিপ উইক ২০২৪ উদযাপনে সহযোগী অংশীদারদের নিরন্তর সহায়তার জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) এবং চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (সিসিসিআই)- ব্যবসা এবং উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়। এছাড়াও, বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেড-কে ধন্যবাদ জানাননো হয় উদ্ভাবনী স্টার্টআপগুলোর বিকাশে আর্থিক সহায়তা প্রদান করার জন্য।আয়োজকদের পক্ষ থেকে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস-এর প্রতিও গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়, যারা দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য মূল্যবান পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা প্রদান করছে। সর্বশেষে, জেন গ্লোবাল লিডারশিপ-এর প্রতি তাদের প্রেরণা ও দিকনির্দেশনার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়, যা গ্লোবাল এন্ট্রপ্রিনিউরশীপ নেটওর্য়াক-কে একটি সত্যিকারের বৈশ্বিক আন্দোলনে পরিণত করেছে।