• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ১৩ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ০৯:২৬:৩১ (27-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বুধবার ১৩ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ০৯:২৬:৩১ (27-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

টাঙ্গাইলে লাল শাপলার অপার সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে মুগ্ধতা

মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: বর্ষাকাল বিদায় নিয়েছে কদিন আগে। প্রকৃতির বুকে শরতের হাতছানি জানান দিচ্ছে। আশ্বিনের শেষে প্রকৃতির রূপের পালা বদল হবে। বিল ঝিলে শাপলা শালুক তার রূপের বাহারের শেষ সৌন্দর্য বিলিয়ে বিদায় জানাবে। প্রকৃতির এমন নিয়তির এই ফাঁকে সুকৌশলে লাল শাপলা তার নিজের রূপের পসরা সাজিয়েছে লাল শাপলা বিলে। যেন শাপলার মোহনীয় সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করে। জলে ভাসা পাঁপড়ি দোলানো টুকটুকে লাল রং যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। অপার মুগ্ধতায় মন স্নিগ্ধতায় ভরে উঠে। ছোঁয়ে দিতে ইচ্ছে করে পাঁপড়িগুলো এপাশ ওপাশ। কিশোরী তার সিল্কি চুলের বেনিতে আপন করে নিতে চায়। প্রেয়সীর মেহেদি হাতের কিছুক্ষণ রেখে দিতে চায়, তার প্রিয় মানুষের মন লুফে নিতে। বিলের মাঝ দিয়ে সেলফি তোলে হৃদয় মন্দিরের সবটুকু হাসি উজাড় করে দিচ্ছে লাল শাপলা বিলে ।বলছিল টাঙ্গাইলের বাসাইল লাল শাপলা বিলের কথা। টাঙ্গাইল শহর থেকে ৮-১০ কৃমি পূর্ব দিকে বিলটির অবস্থান। শহর থেকে পিচঢালা পথ। যাওয়া যায় ভ্যান রিকশা অটো বাইক ও সিএনজিতেও। সময় খুব একটা লাগে না। বাসাইল হচ্ছে টাঙ্গাইলের একটি উপজেলার নাম।বাসাইল বিলে এক একর জমিতে ফুটে আছে লাল শাপলা। হাত ছানি দিয়ে ডাকছে। মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে প্রকৃতি প্রেমীদের। বিলটি পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকায় অবস্থিত।  বিলে একচেটিয়া লাল লাল শাপলা থাকার কারণে খ্যাতি পাচ্ছে লাল শাপলা বিল নামে। কোমল কখনও প্রখর বিকিরণে হেলিয়ে পড়ে শাপলা । ভোরের সূর্য উঠার আগেই লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসে নানা প্রান্তের প্রকৃতি প্রেমীরা। বাড়তি আকর্ষণ নজর কাড়ে বিলের দু'পাড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কাঁশফুল। কাঁশফুল সাদা শুভ্রতা প্রকৃতিকে আরো মোহনীয় করে তুলেছে। বিলে লাল শাপলা, পাড় প্রান্তে সাদা সাদা কাশফুল এ যেন রূপের মেল বন্ধন। বর্ষা শেষে শরতের আগমন বার্তা জানান দিচ্ছে । তবুও বর্ষার স্নিগ্ধতা এখনও অম্লান। জালের মতো ছড়িয়ে থাকা খালে-বিলের থই থই জলের ফুটে থাকা শাপলা ফুল দেখে। শরতের শিশির ঝরা  সকালে শুভ্র আকাশ আর প্রকৃতির সবুজ পাতার উপর হালকা কুয়াশার চিকচিক দৃশ্য।  এমনি সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন স্থান থেকে এ বিলের ধারে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।বিলে গিয়ে দেখা যায়, ভোরে দূর দূরান্ত থেকে শত শত প্রকৃতি প্রেমীরা ফুটে থাকা লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসছেন বাসাইলের এ বিলে। নানা বয়সের মানুষের আনাগোনা লক্ষণীয়। দেখা যায়, অনেকেই কাঁদা মারিয়ে শাপলা তুলে খোপায় গুঁজেছেন, আবার কেউ শাপলা তুলে ছবি তুলছেন। এ যেন লাল শাপলা ফুলের এক খণ্ড রাজ্য। সৌন্দর্য উপভোগই নয় এই লাল শাপলা হয়ে উঠেছে প্রান্তিক মানুষের জীবিকার উৎসও। এখান থেকে প্রতিদিন আহরোণ করা হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার শালুক। তবে বিলে নৌকা না থাকায় নানা ভোগান্তি পোহাতে হয় দর্শনার্থীদের।কয়েকজন দর্শনার্থী জানালেন, তারা সখীপুর থেকে এখানে লাল শাপলা দেখতে এসেছেন। দেখে অনেক ভালো লেগেছে তবে বিলে নৌকা থাকলে উপভোগের আনন্দটা কয়েকগুণ বেড়ে যেত।  কাঁদা হালকা পেড়িয়ে বিলে যেতে হয়।আবুল হাসান নামের একজন বেড়াতে আসা দর্শক জানালেন, লাল শাপলার এ বিলে তিনি প্রথম এসেছে।  শাপলা দেখে তার ভালো লেগেছে।  মুগ্ধ হয়ে গেছে । বিলের মাঝখানে যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকলে আরো ভালো হতো।ঘুরতে আসা আক্তার হোসেন বলেন, এখন লাল শাপলা দেখতে  দূরদূরান্ত মানুষ আসতেছে। বিনোদনের একটা জায়গা হয়েছে। আগে এখানে তেমন লোকজন আসতো না। তাররমতে , মৌসুমে নৌকাসহ পর্যটন উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা গেলে শাপলা বিল হতে বিনোদন কেন্দ্র। হতে পারে বহু মানুষের  কর্মসংস্থানের সুযোগ।বেড়াতে আসা এক শিক্ষার্থী আবু তাহের জানান, এতো লাল শাপলা তিনি এর আগে কখনো দেখিনি। বন্ধু বান্ধবদের সাথে এসেছে। হাজার হাজার লাল শাপলা ফুল ফুটেছে। প্রকৃতি যেন অন্যরকম সেজেছে। দেখতে খুবই ভালো  লাগছে। কাঁদা পাড়িয়ে ছবি তোলা অনেক কষ্ট।  নৌকার ব্যবস্থা থাকতো তাহলে আরও দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তো।বাসাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহরুখ খান জানান, বাসাইল উপজেলাটি ভৌগোলিক ভাবেই নীচু এলাকা। অনেক বিল রয়েছে। বছরে পাঁচ মাস পানি থাকে। ইতিমধ্যে লাল শাপলার বিলে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। লাল শাপলার বিল নিয়ে পরিকল্পনা আছে বলে জানালেন । তিনি জানান, বাসাইলের বাসুলিয়া বিলেও অনেক দর্শনার্থী আসে।