বালুরঘাট নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির সভাপতি বহিষ্কার
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার পৌর এলাকার জুগিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতার বালু ঘাট দখল করাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দিনভর গুলি বিনিময়, হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় পৌর বিএনপির ১৫ নং ওয়ার্ড সভাপতি মো. আমিরুল ইসলামকে সভাপতি পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার ও সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান (মজনু)কে সকল পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়েছে জেলা বিএনপি।১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির প্যাডে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারের স্বাক্ষরিত বহিষ্কারের নোটিশটি ছড়িয়ে পড়ে।সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বর্ণিত ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মহিদুল ইসলামের পরিচালিত ওয়ার্ড সংযুক্ত জুগিয়া বালুরঘাট থেকে এলাকাবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে অবৈধ পন্থায় বালুরঘাট নিয়ন্ত্রণ ও বালু উত্তোলনে সহযোগিতা করে, এলাকাবাসীর দাবির বিপরীতে অবস্থান নিয়ে সংগঠনের ভাবমর্যাদা নষ্ট করার সুস্পষ্ট অভিযোগে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির ১৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আমিরুল ইসলামকে তার সভাপতি পদ সহ সকল পর্যায়ে পথ থেকে বহিষ্কার করা হলো। অন্যদিকে একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাত, সংঘর্ষে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও জড়িত হয়ে জনমতে আতঙ্ক সৃষ্টি ও দলের মধ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রমাণ থাকায় ১৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান (মজনু) কে তার সাধারণ সম্পাদক পদ সহ সকল পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হল। একই সাথে ১৫ নং ওয়ার্ডের বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সকল প্রকার সাংগঠনিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলো।এ বিষয়ে জেলা বিএনপি সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কোন প্রকার অন্যায়কারীকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেয় না। কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বর্ণিত ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মহিদুল ইসলামের পরিচালিত ওই ওয়ার্ড সংযুক্ত জুগিয়া বালুরঘাট থেকে এলাকাবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে অবৈধ পন্থায় বালুরঘাট নিয়ন্ত্রণ ও বালু উত্তোলনে সহযোগিতা করে। এলাকাবাসীর দাবির বিপরীতে অবস্থান নিয়ে সংগঠনের ভাবমর্যাদা নষ্ট করার সুস্পষ্ট অভিযোগে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির ১৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আমিরুল ইসলামকে তার সভাপতি পদ সহ সকল পর্যায়ে পথ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান (মজনু)কে তার সাধারণ সম্পাদক পদ সহ সকল পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ১৫ নং ওয়ার্ডের বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সকল প্রকার সাংগঠনিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।বিএনপির ওয়ার্ড সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ক্যাডার জিকু, রাকিব ও রানাসহ অন্যরা বিএনপির পার্টি অফিসে হামলা চালায়। তারা বিএনপি নেতা মিজানুর রহমানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করেছে। আমার সঙ্গে মহিদুলের কোনো সম্পর্ক নেই। বালু ঘাট থেকে কোনো ভাগ খাই না।’শাহজাহান আলী সাজু বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মহিদুলের সঙ্গে ওয়ার্ড বিএনপির কিছু নেতা এক হয়ে বালু উত্তোলন করছিল। এলাকার লোকজন এক হয়ে তাদের বাধা দিলে অস্ত্রসহ হামলা চালায় মহিদুলের ক্যাডার বাহিনী। তারা এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে।কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গড়াই নদ খননের ফলে তোলা বালু স্তূপাকারে নদের পাড়ে রাখা হয়েছে। এই বালু এখন অপসারণের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নদের জুগিয়া ও গোপীনাথপুর মৌজায় রাখা বালুর স্তূপ সরানোর জন্য চলতি বছরের ১০ জুন মেসার্স মেহেদী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মহিদুল ইসলামকে সর্বোচ্চ ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা দরদাতা হিসাবে কার্যাদেশ দেয় পাউবো। এ কার্যাদেশে আগামী বছরের ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বালু অপসারণের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকে মহিদুল বালু অপসারণ করে বিক্রি করে আসছিলেন।কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, গত দু’দিন ধরে উত্তেজনা চলছে। অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। অস্ত্রধারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।