হাওরে ভুট্টার বাম্পার ফলন, তবে দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা
বাজিতপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল এখন সোনালি রঙে রাঙানো। গত কয়েক বছরে ধান চাষ কমিয়ে কৃষকরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকেছেন, যেখানে উৎপাদন খরচ কম লাভ বেশি এবং বন্যা কিংবা খরার ভয় নেই। এবারও ফলন হয়েছে বাম্পার। তবে দাম নিয়ে শঙ্কায় আছেন চাষিরা।রোদের ঝিঁকিমিকিতে হাওরের প্রান্তরে যেন মিটিমিটি হাসছে সোনালি ভুট্টার সারি। হাওরের অলওয়েদার সড়কের দুই পাশে দূর থেকে দেখলে মনে হয় রোদে শুকাতে দেওয়া হয়েছে একরাশ কাঁচা সোনা। কৃষক-কৃষাণীরা এখন ব্যস্ত তাদের স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে।কালের স্রোতে পাল্টে গেছে হাওরের কৃষকদের কৃষি-চাষ। একসময় যে জমিতে ধান আর বাদাম চাষ হতো, সেখানে এখন ভুট্টা চাষ হচ্ছে। এই অঞ্চলের কৃষকরা বরাবরই একটি ফসলের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। বোরো আবাদ করে উৎপাদিত ধান বিক্রয়ের অর্থ দিয়ে চলতো সারা বছর। কিন্তু আগাম বন্যা ও অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ না পেলে খুব একটা লাভের মুখ দেখা যেতো না।বর্তমানে দেশের পোল্ট্রি ও ফিড মিল খাতে ভুট্টার চাহিদা বেড়েছে, তাই হাওরের চাষিরা ধান ছেড়ে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন। কৃষকরা বলছেন, ভুট্টা চাষের সবচেয়ে বড় সুবিধা উৎপাদন খরচ কম, লাভ বেশি। বন্যা-খরার ভয় নেই তেমন একটা। বর্ষা শুরুর আগেই ফসল ঘরে তোলা যায়। এ বছর কিশোরগঞ্জে ১২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যেখানে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ২১০ মেট্রিক টন। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১২ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে।কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাদিকুর রহমান বলেন, এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এই সোনালি ফসল।এই ভুট্টা অনেকটাই দূর করেছে রবি শস্য নিয়ে হাওরের নদী পাড়ের কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। উঁকি দিচ্ছে সম্ভাবনার নতুন ভোর। তবে বাজারজাতকরণে কৃষকের স্বার্থ নিশ্চিত করা প্রয়োজন রয়েছে।