• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ভোর ০৫:৪৬:১১ (24-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ভোর ০৫:৪৬:১১ (24-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

সৈয়দপুরে রেশম চাষে স্বাবলম্বী হাজারো নারী পুরুষ

নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে কোন প্রকার পুঁজি লগ্নি ছাড়াই লাভবান হওয়ার কারণে হতদরিদ্র নারী-পুরুষের মাঝে রেশম গুটি চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দারিদ্র বিমোচনে ভূমিহীন, গৃহহীন নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টির লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের মাধ্যমে এই প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে।সৈয়দপুর রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের ম্যানেজার রেজাউল করিম বলেন, দারোয়ানীর একটি গ্রাম থেকে শুরু করে এখন এর বিস্তৃতি ঘটেছে নীলফামারীর ৬ উপজেলা এবং রংপুরের দুই উপজেলা তারাগগঞ্জ ও বদরগঞ্জ। এই কর্মমুখী প্রকল্পের ফলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে কয়েক হাজার হতদরিদ্র নারী-পুরুষের।নীলফামারীর সৈয়দপুরে কৃষি শ্রমিক ও দিনমজুরের সংখ্যা বেশি।  প্রান্তিক জনপদে এখনও রয়েছে প্রচুর বেকার নারী-পুরুষ। এদের অনেকের মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকলেও নাই কর্মসংস্থানের কোন ব্যবস্থা। এসব মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্র নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৯৮৯ সালে মাত্র ৩ জন চাষি নিয়ে শুরু করেন রেশম গুটি চাষ। পোকা দিয়ে রেশম গুটি চাষ, প্রথম দিকে ঘিন্নায় আগ্রহ দেখাতো না মানুষ। কিন্ত বর্তমানে চিত্র ভিন্ন। কয়েক হাজার নারী-পুরুষ গুটি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।প্রথমদিকে মানুষের অনাগ্রহে প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মীরা নিরুৎসাহিত না হয়ে চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। বাড়িবাড়ি যেয়ে নারী-পুরুষদের নিয়ে এসে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। পুরো প্রক্রিয়াটি তিনটি ধাপে-তুতগাছ লাগানো, পলু পালন ও গুটি তৈরির মাধ্যমে শেষ হয়। এই তিনটি প্রক্রিয়া পর্যন্ত সব ধরনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা করেন রেশম সম্প্রসারণ প্রকল্প।বলা যায়, বিপণনসহ শ্রম ও সামান্য জমি ছাড়া প্রায় সব সহযোগিতা পান চাষিরা। শুরুর ৬০০ কেজি গুটির জায়গায় এখন ২০ থেকে ২৫ হাজার কেজি গুটি উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া পোকার খাবারের জন্য মোট ১২০ বিঘা জমিতে ২ লাখ ৬০ হাজার তুত গাছ লাগানো হয়েছে।খাতামধুপুর ইউনিয়নের চাষি জসিম উদ্দিন জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে রেশম চাষ করেছেন। এখান থেকে তিনি আয় করবেন ৮০ হাজার টাকা। যা অন্য কোন ফসল চাষ করে পাওয়া যেত না। একই কথা বলেন, কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাষি আনিছুর রহমান। তিনিও এক বিঘা জমিতে রেশম চাষ করেছেন।তারাগঞ্জ উপজেলার চাষি কৃষ্ণা রানী ও সুবল দাস বলেন, প্রথমে রেশম চাষে তারা আগ্রহী ছিলেন না। পরে প্রশিক্ষণে এসে তাদের মনমানসিকতা পরিবর্তন হয়। শুরু করেন চাষ। অভাবের সংসারে এখন সচ্ছ্বলতা এসেছে বলে জানান তারা। রেশম চাষি আব্দুল জব্বার বলেন, তিনিও এখন রেশম চাষ করে ভালভাবে সংসার চালাচ্ছেন। তিনি সকলকে রেশম চাষে এগিয়ে আসার আহবান জানান।রেশম সম্প্রসারণ প্রকল্পের কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করছি, এই প্রকল্পের পরিধি ক্রমেই বৃদ্ধি পাবে। এর বিস্তৃতিতে এলাকায় দারিদ্র বিমোচনে সহায়ক হবে।খাতামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা পাইলট বাবু জানান, পরিত্যক্ত জমি, নদীর পাড়, পুকুরের পাড়, রাস্তার ধারে রেশম চাষ করা যায়। এটি অত্যন্ত লাভজনক চাষ। আমার ইউনিয়নে এ চাষ হওয়ায় চাষিদের ধন্যবাদ জানান তিনি।সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুবন জানান, রেশন চাষ লাভজনক। এটি খাতামধুপুর ইউনিয়নের ময়দান ডাঙ্গা এলাকায় শুরু করা হয়েছে। আমরা তাদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।