• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১লা আশ্বিন ১৪৩১ রাত ০১:৪৯:০১ (17-Sep-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১লা আশ্বিন ১৪৩১ রাত ০১:৪৯:০১ (17-Sep-2024)
  • - ৩৩° সে:

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে দুই বংশের সংঘর্ষে ১ জন নিহত, আহত অর্ধশত

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: ভৈরবে মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইকবাল (২৯) নামের একজন নিহত ও কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। নিহত ইকবাল উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামের সরকার বংশের ধন মিয়ার ছেলে।১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর গ্রামের কর্তাবাড়ি বংশ ও সরকার বাড়ির বংশের মধ্য পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় দুই পক্ষের শত শত মানুষ দেশীয় অস্ত্র  লাঠি, বল্লম, টেটাসহ ইটপাটকেল নিয়ে মাঠে নামে। দুই পক্ষের মধ্য কর্তাবাড়ির নেতৃত্ব দেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক এবং সরকার বাড়ির নেতৃত্ব দেন সাদেকপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সাফায়েত উল্লাহ।সংঘর্ষে সরকার বাড়ি পক্ষের লাদেন (২০), সাফিউদ্দিন (৬৫), হোসাইন (২০), ইয়াসিন (২৫), রাকিব (৩২), শাহ আলম (২৫), তোফাজ্জল (৩৫), হেলেনা বেগম (৩৪) আহত হয়েছেন। আহতরা ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্য তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। অন্যান্য আহতদের পার্শ্ববর্তী কুলিয়ারচর ও বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। তবে নিহতের প্রতিপক্ষ কর্তা বংশের আহতরা ভৈরব  হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেনি বলে জানা গেছে।জানা যায়, দুটি বংশের মধ্যে ৫৭ বছর ধরে চলমান শত্রুতায় এ পর্যন্ত ১০/১২ জন খুন হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অসংখ্য। এসব ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্য কমপক্ষে অর্ধশত মামলা এখনও চলমান। গত ঈদের পরের দিন কর্তা বাড়ির বংশের নাদিম সরকার (৫৫) সরকার বাড়ির লোকজনের হাতে নিহত হলে থানায় মামলা হয়। পরে মামলায় ৮৩ জনকে আসামী করা হয়। তারপর ৬৯ জন আসামী কয়েকদিন আগে কিশোরগন্জ আদালতে হাজিরা দিলে আদালতের বিচারক সবাইকে কারাগারে পাঠায়। গত কয়েকদিন আগে তারা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বাড়িতে এসে পুনরায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন যাবৎ টান টান উত্তেজনায় সংঘর্ষে শুরু হলে সরকার বাড়ির ইকবাল প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই আজকের সংঘর্ষ হয়। তবে সরকার বাড়ির লোকজনের দাবি, ‘আমরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নেয়ার পর বাড়ি আসলে তারা বাধা দিচ্ছিল। এ নিয়ে গত কদিন যাবত দুই পক্ষের উত্তেজনা চলমান থাকার পর শুক্রবার সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।মৌটুপি গ্রামের সরকার বাড়ির আনোয়ারুল হক ও আঙ্গুর মিয়া জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শুক্রবার কর্তা বাড়ির নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হকের নির্দেশে এই সংঘর্ষ বাঁধলে আমাদের বংশের ইকবাল মারা যায় ও আহত হয় ২০/৩০ জন। তারা কদিন যাবত চেষ্টা করছে হামলা চালাতে। আমরা প্রতিহত করতে গেলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।এ বিষয়ে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সরকার বাড়ির বংশের সাফায়েত উল্লাহ বলেন, গত ঈদের পরদিনের সংঘর্ষে কর্তা বাড়ির নাদিম নিহত হলে তাদের বংশীয় লোকজন আমার বংশের শতাধিক বাড়িঘর লুটপাট ভাংচুর করে জিনিসপত্র নিয়ে যায়। আমাদের লোকজন খুনের ঘটনায় পলাতক ছিল দেড় মাস। এখন তারা জামিনে আসলেও আমাদেরকে বাড়িঘরে উঠতে বাধা দেওয়ায় সংঘর্ষ হয়। শুক্রবার আমাদের প্রতিপক্ষের লোকজনের হাতে আমার বংশের ইকবাল খুন হয়েছে।কর্তা বাড়ির নেতা সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক বলেন, আমি বাড়িতে থাকি না। গত ঈদের পরদিন আমার বংশের নাদিমকে সরকার বাড়ির বংশের লোকজন হত্যা করে। দীর্ঘদিনের শত্রুতা রয়েছে তাদের সাথে। এখন তারা নাদিম হত্যার মামলায় জামিন পেয়ে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালাতে কদিন যাবত চেষ্টা করছে। শুক্রবার তারা হামলা চালালে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ হয়। শুনেছি, সরকার বাড়ির একজন মারা গেছে। তবে ঘটনায় আমার বংশের ২০/৩০ জন আহত হয়। ঘটনার সময় কীভাবে, কার আঘাতে সে মারা গেছে আমি জানি না।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার ফারিয়া নাজমুল প্রভা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ইকবাল নামের এক যুবককে হাসপাতালে আনা হলে আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পাই। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। এ ঘটনায় আমরা ৮ জন আহত রোগীর চিকিৎসা করেছি। তবে তিনজনের অবস্থা গুরুতর বলে তাদেরকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। অন্যদের চিকিৎসা চলছে বলে তিনি জানান।