শীতলক্ষ্যা নদীর চড় দখল, মার্কেট-রাস্তা নির্মাণ
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে গোসিংগা বাজারের পাশে চলছে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় ও চর দখলের মহাযজ্ঞ। নদীর পাড় দখল করে নির্মিত হয়েছে মার্কেট। জেগে উঠা চড়ের বুক চিড়ে হচ্ছে ইটের রাস্তা। খুঁটি পুঁতে, গাছ লাগিয়ে চলছে দখলের প্রক্রিয়া। নির্মিত হয়েছে খোলা বাজার। প্রকাশ্যে চলছে ক্লাবের ভবন নির্মাণ। দখলের মহাযজ্ঞে বেহাত হতে যাচ্ছে নদীর প্রায় দেড় একর বা সাড়ে চার বিঘা জমি।১৪ জুলাই রোববার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর জমিতে অবৈধ দখলের মহাযজ্ঞ চলছে। গোসিংগা ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে নদীর পাড়ে নির্মাণ করা হয়েছে বাজার। ফের ওই বাজারের পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা সীমানা প্রাচীর। নদীর চড়ের বুক চিড়ে নির্মিত হচ্ছে প্রায় ৫শ ফুট দীর্ঘ ইটের রাস্তা। রাস্তার পাশেই চড় দখল করতে পুঁতে রেখা হয়েছে খুঁটি। কেউ বা লাগিয়েছেন গাছ।গোসিংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নারী সদস্য রেহেনা খাতুনসহ আট-দশ ব্যক্তি নদীর পাড় দখল করে নির্মাণ করেছেন মার্কেট। ইউনিয়ন পরিষদের ভবনের দক্ষিণ পাশে নদীর জায়গায় নির্মিত হচ্ছে একটি ক্লাবের পাকা ভবন।নদীর পাড় ও চর দখলের প্রক্রিয়ায় স্পষ্ট যে দেড় একর বা প্রায় সাড়ে চার বিঘা জমি ঘিরে চলছে দখলের মহাযজ্ঞ। গোসিংগা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সূত্র মতে আর এস ৪৩৯২/৪৭৯৫ নম্বর দাগে ৫৮ শতাংশ এবং ৪৩৩৯/৪৭৯৫ নম্বর দাগে ৯৫ শতাংশ জমি এক নং খতিয়ানভুক্ত শিকস্তি (নদী থেকে জেগে উঠা) শ্রেণির ভূমি।এ বিষয়ে দখলকারী রেহেনা খাতুন বলেন, তিনি কিছু জমিতে দোকান নির্মাণ করেছেন। বন্দোবস্তের আবেদন করেছেন। আরো অনেকে এভাবে মার্কেট করেছেন।ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান (সাহিন) জানান, জনস্বার্থে স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের এক ভাগ আয়ের টাকা দিয়ে বাজার সম্প্রসারণ করেছেন। এছাড়া জনস্বার্থে নদীর চড়ে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থে রাস্তা নির্মাণ করেছেন। প্রশাসন না চাইলে রাস্তা সড়িয়ে ফেলা হবে।সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই সিকদার বলেন, ইতোমধ্যেই মাকের্ট নির্মাণকারী ৮/১০ জনের তালিকা উপজেলা ভূমি অফিসে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জানা গেছে চেয়ারম্যান নাকি জনস্বার্থে নদীর চড়ে রাস্তা করছেন।শ্রীপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল জানান, আমি সবেমাত্র শ্রীপুরে যোগদান করেছি। বিষয়গুলো আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান সারোয়ার মাহমুদ মোঠুফোনে জানান, এভাবে নদীর জমি দখল করার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলেছি। নদীর জমি দখল করে থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হব।