• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ১০:১৫:০৫ (24-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সকাল ১০:১৫:০৫ (24-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

শিবচর হাসপাতালে তিনমাসে সাপে কাটা ৯২ রোগী এসেছেন, সুস্থ হয়েছেন ৯১ জন

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি: মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত তিন মাসে ৯২ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হন। এদের মধ্যে ৯০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েই সুস্থ হয়েছেন বাড়ি যান। একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় অপর এক রোগীকে হাসপাতালে আনার পর পরই মারা যায়।ভর্তি হওয়া ৯২ জন রোগীর মধ্যে ১২ জন বিষধর সাপের দংশনে শিকার হয়েছিলেন, যাদের এন্টিভেনম দেয়া হয় বিনামূল্যে। শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদ বেষ্টিত মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার চরজানাজাত, কাঠালবাড়ি বন্দরখোলা এবং সন্ন্যাসীর চর ইউনিয়নসহ চরাঞ্চল ও নদ-নদীর তীরবর্তী এলাকায় চলতি বছরের প্রথম থেকেই রাসেলস ভাইপার সাপের প্রকোপ দেখা দেয়।গত জুলাই মাসের ১ তারিখে পাটজাগ দিতে গিয়ে উপজেলার চরজানাজাত এলাকার কৃষক সুলতান বেপারী(৫২) রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। দ্রুত তাকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিষধর সাপের কামড় বলে নিশ্চিত হন শিবচর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা। তাৎক্ষণিক মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসকেরা। এন্টিভেনম প্রয়োগের পর রোগী সুস্থ হয়ে উঠে।সাপের কামড়ের শিকার সুলতান বেপারী সুস্থ হয়ে উঠলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যপক সাড়া পড়ে। এরপর থেকে শিবচর ও আশেপাশের এলাকার সাপের কামড়ে আহত রোগীরা আসতে শুরু করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।গত ৭ জুলাই পদ্মাবেষ্টিত চরজানাজাতের মমিন শেখ নামের এক ব্যক্তি বিষধর সাপের কামড়ে আক্রন্ত হন। পরে সাপসহ (রাসেলস ভাইপার) রোগীকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। একই দিন রাত ১টার দিকে উপজেলার বাঁশকান্দি এলাকা থেকে সাপের কামড়ে গুরুতর আহত সজীব হাওলাদার নামের এক যুবককে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। এন্টিভেনম প্রয়োগে তারা উভয়েই সুস্থ হন। পরবর্তীতে আরও একাধিক রোগী এন্টিভেনম প্রয়োগ সুস্থ হয়ে উঠেন এই হাসপাতালে।সুলতান বেপারীসহ একাধিক রোগী জানান, শিবচর হাসপাতালে ভর্তি হবার ২/৩ দিনের মধ্যেই অনেক রোগী সুস্থ হয়েছেন। এখন সাপে কাটলেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চলে আসে আক্রান্তরা। আগে হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা হয়, অনেকেই জানতো না। তাছাড়া আগে হাসপাতালে ততটা গুরুত্বও দিতো না। বর্তমানে গুরুত্বসহকারে রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে।শিবচর উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত তিন মাসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ৯২ জন রোগী ভর্তি হন। এদের মধ্যে ১২ জন রোগী বিষধর সাপের কামড়ে আক্রান্ত ছিলেন। এন্টিভেনম প্রয়োগে ১১ জন রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন। এর মধ্যে গুরুতর অবস্থা হাসপাতালে আনার পর একজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া অন্যদের ২/১ দিন পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়।হাসপাতাল সূত্র আরও জানায়, নদ-নদী বেষ্টিত শিবচরে সাপের উপদ্রব বেশি থাকায় চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণ এন্টিভেনম রাখা হয়। সাপের কামড়ে আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে এলে এখানেই সঠিক চিকিৎসা সম্ভব। তাছাড়া চরাঞ্চলের রোগী এন্টিভেনম প্রয়োগে সুস্থ হবার পর সাপের কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছে।শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাতিমা মাহজাবিন বলেন, আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম রয়েছে। শেষ হবার আগেই আমরা চাহিদা দিয়ে থাকি। সাপের কামড়ে আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে যথাযথ চিকিৎসার মধ্য দিয়ে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। ওঝার কাছে না গিয়ে যতদ্রুত সম্ভব শিবচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী নিয়ে আসতে হবে। এ ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।