• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৬ই বৈশাখ ১৪৩২ বিকাল ০৪:৩৫:১৯ (19-Apr-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৬ই বৈশাখ ১৪৩২ বিকাল ০৪:৩৫:১৯ (19-Apr-2025)
  • - ৩৩° সে:

পঞ্চগড় সীমান্তে এবারও হচ্ছে না দুই বাংলার মিলনমেলা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: নববর্ষের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে দুই বাংলার মানুষ মিলিত হয় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে। সুখ-দুঃখের গল্পের সঙ্গে সামান্য উপহারে উপভোগ করেন দিন দুটিকে। কিন্তু গেল কয়েক বছরের মত এবারও সেই আনন্দের কাঁটাতারের মিলন মেলায় অংশগ্রহণ করতে পারছেন না পঞ্চগড়সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অপেক্ষায় থাকা মানুষজন।ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীসহ (বিএসএফ) উভয় দেশের সরকারের নির্দেশনা না থাকায় গত ৬ বছরের মতো এবারও বসছে না দুই বাংলার এই ভিন্ন আয়োজনের মিলনমেলা।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম। একই সঙ্গে ভিন্ন এই আয়োজন বন্ধ থাকায় সীমান্তের কাছে সর্বসাধারণের প্রবেশে নিরুৎসাহিত করেছেন এই কর্মকর্তা।জানা গেছে, সাধারণত পহেলা ও দ্বিতীয় বৈশাখে পঞ্চগড়ের অমরখানা, শুকানি, মাগুরমারি সীমান্তসহ বিভিন্ন সীমান্তের কাঁটাতারের পাশে প্রায় ৫-৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দুই বাংলার এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হতো। এ সময় দু’দেশের হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা ও ভাববিনিময় করতেন। তবে এবারও সেই অন্যরকম আনন্দ চোখে পড়বে না।ভৌগোলিক সীমারেখার বেড়াজালে বন্দি দুই বাংলার মানুষ চান আত্মীয়-স্বজনদের সান্নিধ্য। একটা সময় ছিল আত্মার সুতোয় বাঁধা বাংলাদেশ-ভারতের এসব বাঙালি সুযোগ পেলে পরস্পর মিলিত হতেন কাঁটাতারের বেড়ার কাছে। ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির আগ পর্যন্ত এ জেলা ভারতের জলপাইগুড়ির অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু দেশভাগের কারণে এখানে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজন দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও দু’দেশের নাগরিকরা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে যাতায়াতের সীমিত সুযোগ পেতেন। কিন্তু সীমান্ত এলাকায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার পর থেকে সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।দারিদ্র্যতার কারণে পাসপোর্ট করতে না পারায় উভয় দেশের অনেকের অনুরোধে বিজিবি ও বিএসএফের সম্মতিতে নববর্ষের দিন তারা কাঁটাতারের দুই ধারে এসে দেখা করার সুযোগ পেতেন। আর এতে করেই সৃষ্টি হতো সীমান্তের কাঁটাতারের মিলন মেলা।তবে বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালে পঞ্চগড় সীমান্তে দুই বাংলার কাঁটাতারের মিলনমেলা বন্ধ হয়। এর পর থেকে আর এই মেলা বসেনি। বিগত কয়েক বছর ধরে বৈশাখের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন সীমান্তে কাঁটাতারের দুই পাশে মিলনমেলা না বসলেও অপেক্ষা নিয়ে দূরে মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে।পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, ‘সীমান্তের কাঁটাতারের মিলন মেলা নিয়ে আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি।’এ বিষয়ে পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ একটা ঐতিহ্য। বিগত দিনে দেখা গেছে নববর্ষকে কেন্দ্র করে অনেকেই পঞ্চগড় সীমান্তের কাছে ছুটে যান ভারতের অভ্যন্তরে থাকা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে। তবে বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালে পঞ্চগড় সীমান্তে কাঁটাতারের দুই পাশের এই মিলনমেলা বন্ধ হয়ে যায়; যা এখনো বন্ধ রয়েছে। তার মাঝেও অনেক মানুষ বিষয়টি না জেনে উৎসাহ নিয়ে সীমান্তের কাছে ছুটে আসেন।’তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা তাদের নিরুৎসাহিত করছি। কারণ, এবারও বসছে না এ মিলনমেলা। সীমান্ত নিরাপত্তায় বিজিবি তৎপর রয়েছে। আশা করি, সাধারণ মানুষ নববর্ষকে কেন্দ্র করে সীমান্তে ছুটে যাবেন না। একই সঙ্গে সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করবেন না।’