• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ১০:৫৮:৪৮ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ১০:৫৮:৪৮ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

হকারের দখলে সিলেট সিটির ফুটপাত ও সড়ক

সিলেট প্রতিনিধি: দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছেন সিলেটের হকাররা। ফুটপাত দখলেই ক্ষান্ত হচ্ছেন না তারা, এখন মূল সড়কও তাদের দখলে। সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের নিষ্ক্রিয়তায় কারণে মূল সড়কের বেশির ভাগ জায়গা দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন হকাররা। বিশেষ করে সন্ধ্যা নামতেই সিটি করপোরেশন, প্রধান ডাকঘর অফিসসহ বন্দরবাজারের সড়কগুলো চলে যায় হকারদের দখলে। এতে যানজট লেগে থেকে ব্যস্ততম এই রাস্তায়। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নগরবাসী।সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নগর ভবনের মূল ফটকে অঘোষিত সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড, সেখানে মূল গেইট বন্ধ করে যাত্রী উঠানামা করছেন অটোরিকশা চালকরা। সারিবদ্ধ সিএনজির পাশেই পসরা সাজিয়ে বসে আছেন হকাররা। সবজি ওয়ালা থেকে শুরু করে মাছসহ নানা পণ্য নিয়ে হকারদের দৌরাত্ম্য নগরজুড়ে বিস্তৃতি লাভ করেছে। অন্যদিকে এসব এলাকায় মার্কেটের ব্যবসায়ীরা অস্থায়ী চটের ছাদ দিয়ে দখল করে আছেন ফুটপাতের অর্ধেক। ফলে এই এলাকায় যানজট সমস্যা এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে মেইন রোডে ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে। একপাশে নির্মাণ কাজের জন্য যানজট, ঠিক এর উলটো দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে কিনব্রিজের মুখ পর্যন্ত ফুটপাত ও রাস্তার অর্ধেক হকারদের দখলে। একই দৃশ্য সুরমা মার্কেট পয়েন্ট থেকে শুরু করে তালতলা পয়েন্ট পর্যন্ত। বিটিসিএল ভবনের পাশে মূল রাস্তায় ড্রেনের নির্মাণ কাজ চলছে। এর পাশ ঘেঁষেই ভ্যান নিয়ে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করছে হকাররা। ঠিক বিপরীতে পাশের ভ্যান নিয়ে সারিবদ্ধ হকার। এসব এলাকায় হকারদের কারণে মূল রাস্তা সংকুচিত হওয়ায় তীব্র হচ্ছে যানজট। ফলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রী সাধারণ।মধুবন মার্কেটের সামন থেকে শুরু করে জেলরোড পর্যন্ত সারিবদ্ধ হকার বসেন। এদিকে সিটি পয়েন্ট থেকে শুরু করে জিন্দাবাজার হয়ে একদম চৌহাট্টা পর্যন্ত হকারদের দখলে মূল রাস্তার অর্ধেক। শুধু নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টই নয়, পাড়া-মহল্লায় ছাপিয়ে গেছে হকারদের দৌরাত্ম্য। ফলে নগরজুড়ে জনভোগান্তি এখন চরমে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর হকার সমস্যা সমাধান করতে এবং ফুটপাত দখলমুক্ত করতে বিগত সময়ে হকার পুনর্বাসনের যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন বিদায়ী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। নগর ভবনের পেছনে জীর্ণ পাকা ভবন ভেঙ্গে হকারদের জন্য জায়গা করে দেন। হকারদের জন্য এখানে রয়েছে আলাদা শেড। কিন্তু এত ব্যবস্থা থাকার পরও অল্প কয়েকটি দোকান সেখানে বসে। বাকি সব হকার আগের মতোই সড়কে চলে এসেছে। প্রতিদিন তারা সড়কে বসে থাকে তাদের পসরা সাজিয়ে। ফলে হকারদের পুনর্বাসনের জন্য নগরীর লালদীঘির পাড়ে বিশাল হকার্স মার্কেট অনেকটা খালিই পড়ে থাকে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক হকার বলেন, রাস্তায় ব্যবসা করা সহজ নয়। কখন পুলিশ অভিযান চালায় ঠিক নাই। তাই পুলিশকে সামান্য দিয়ে ম্যানেজ করে চলতে হয়। পুলিশ সুযোগ না দিলে সড়কে বসে ব্যবসা কি করতে পারতাম? তবে পুলিশ বা সিসিক কর্তৃপক্ষ কঠোর হলে আমরা ব্যবসা করতে পারবো না।এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, আমি বয়স্ক মানুষ। তাই যখন তখন দৌড়াতে পারি না। রাস্তায় ব্যবসা করলে পুলিশকে ম্যানেজ রাখতে হয়। এরপরও মাঝে মাঝে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা অভিযানে বের হন, তখন কোনোভাবেই রক্ষা পাওয়া যায় না। তাই এখানেই পড়ে আছি।সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান রিপন বলেন, নগরীর ফুটপাত এমনিই দখলে। এখন রাস্তার দুপাশ দখলে নিয়েছে হকাররা। সেখানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্দ্বিধায় ব্যবসা করে যাচ্ছে তারা। ফলে একদিকে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, অন্যদিকে পথচারীদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।সর্বশেষ নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। মেয়র হিসেবে শপথ নিলেও এখনো দায়িত্ব নেননি। প্রবাসী হওয়ায় হকারদের জন্য সুবিধা বলে মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার নেতা। তাদের বক্তব্য, নতুন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান বেশির ভাগ সময় লন্ডনে থাকবেন, তাদের আর আরিফের মতো কেউ দৌড়াতে পারবেন না। স্মার্ট সিটি করার ঘোষণা দিলেও হকার উচ্ছেদের ব্যাপারে তার বক্তব্য এখনো পরিষ্কার হয়নি।সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, যতদিন আমার মেয়াদ আছে আমি ততদিন কাজ করে যাব। দায়িত্বে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। নতুন যিনি দায়িত্বে আসছেন, তিনি একই রকম কাজ করবেন আশা করি। মাঝখানে নির্বাচন ছিল, কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ছিল অভিযান, এ সুযোগে হকাররা আবার সড়ক দখল করে নিয়েছে। তবে আমি দায়িত্ব ছাড়ার আগের দিন পর্যন্ত নগরীকে সুন্দর রাখতে যা যা করণীয় করে যাব। এরই মধ্যে অভিযান হচ্ছে।এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ইলিয়াস শরিফ বলেন, হকার উচ্ছেদে বরাবরই সিটি করপোরেশনকে পুলিশ সহায়তা করছে। আমরাও চাই নগরী সুন্দর থাকুক।