বাচঁতে চায় নেছারাবাদে হেম্যানজিওমাস রোগে আক্রান্ত শিশু জুবায়ের
নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: পিরোজপুরের নেছারাবাদে পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র জুবায়ের আল মামুনের আকুতি ‘আমি বাছতে চাই সকলে আমাকে সাহায্য করলে বাছবো’। হেম্যানজিওমাস (রক্ত নালি টিউমার) বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে মেধাবী ছাত্র জুবায়ের আল মাহামুদ (১২)। তার বাবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম ১২ বছর ধরে দেশ-বিদেশে সন্তানের চিকিৎসা চালিয়ে আসলেও বর্তমানে অর্থ সংকটে চিকিৎসা চালাতে পারছেন না।সন্তানের জন্মগত এ রোগটি নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ডাক্তারদের পরামর্শে ভারতের ভেলোরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালে জমি-বাড়িঘর বিক্রি করেও রোগের কোনো উন্নতি হয়নি। ছোট বেলায় জিহ্বার রক্ত নালি টিউমারটি খুব ছোট থাকলেও জিহ্বাটি ক্রমেই বড় হয়ে প্রায় ৩ ইঞ্চি লম্বা হয়ে মুখ থেকে ঝুলে আছে। দিনদিন এটি আরও বড় হয়ে নিচের দিকে ঝুলে যাচ্ছে।সাদৃশ্য এ বিরল রোগটি কোমল ছাত্রটির জীবনকে অনিশ্চিত করে দিয়েছে। স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হয় মুখ আড়াল করে রুমাল দিয়ে। বর্তমানে রোগটি মারাত্মক রূপ ধারণ করায় তরল খাবার ছাড়া কিছুই খেতে পারছে না। প্রতিদিন জিহ্বা দিয়ে রক্তঝরায় ক্লাসে তার কাছে কেউ বসতে চায় না।গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে ছুটে এসে জোবায়ের বলে, আমি বাঁচতে চাই সকলে আমাকে সাহায্য করেন।পরিবার সূত্র জানান, ৩ বছর পর আবার ভেলোর চিকিৎসা নিতে যাওয়ার কথা থাকলেও সবকিছু হারিয়ে অর্থ অভাবে যেতে পারেনি। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আমিনুল এখন পথে-পথে ঘুরছেন। সন্তানের চিকিৎসার জন্য সবকিছু হারিয়ে তিনি বিনয়ের সাথে সকল মানুষের কাছে সন্তানের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য অবেদন করেন, যাতে ভারতের ভেলোরে চিকিৎসা নিতে পরেন।পিরোজপুরের নেছারবাদ উপজেলা মাগুর এলাকার ছারছীনায় তার বাড়ি। জুবায়ের নেছারাবাদের পূর্ব শর্ষিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি ছাত্র। শিশুটির জন্য সাহায্য পাঠাতে পারবেন এই নম্বরে- মোবাইল- ০১৭৫৩৮৫৬৯৭৬।স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, জুবায়ের শিশু শ্রেণি থেকেই আমাদের মেধাবী ছাত্র। সকলের সাহায্য পেলে সুচিকিৎসায় আল্লাহ তালা তাকে রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারেন।নেছারাবাদ হাসপাতালের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইস এ) আছাদুজ্জামান বলেন, এটি একটি জটিল রোগ। বাংলাদেশে এর চিকিৎসা নেই। এ রোগের নাম হেম্যাজিওমাস (রক্তনালী টিউমার)। এ রোগ অনেক শিশুর জন্ম থেকে আস্তে-আস্তে বড় হয়ে বিরল রোগের ধারণ করে। হেম্যাজিওমাস রোগ শুধু জিহ্বার না, মানুষের শরীরের যেকোনো স্থানে হতে পারে। রোগটি জন্মের ৭-১০ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা যায়। আবার অনেকের জন্ম থেকেই শুরু হয়। এর চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। খুব ন্দ্রত চিকিৎসা নেওয়া না নিলে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়তে পারে। তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞা ডাক্তার ভালো বলতে পারবেন।