আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল!
কক্সবাজার (কুতুবদিয়া) প্রতিনিধি: আজ ভয়াল সেই ২৯ এপ্রিল! ১৯৯১ সালে এদিনে এক মহাপ্লাবনকারী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড হয়ে যায় কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপকূল এলাকা। এতে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। অসংখ্য মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। নিশ্চিহ্ন হয় গাছপালা-ঘরবাড়ি ও মারা যায় অসংখ্য গবাদিপশু। বেড়িবাঁধ না থাকার কারণে এ ধরনের বিপর্যয় ঘটে। কিন্তু এ ঘটনার ৩৩ বছর পার হলেও এখনো নির্মিত হয়নি স্থায়ী বেড়িবাঁধ।১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল রাতেই কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপকূলের মানুষের জন্য ছিল এক ভয়ানক রাত। ঘণ্টায় ২৪০ কিমি গতিবেগে বাতাস আর প্রায় ২০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস রাত প্রায় ১২টা নাগাদ উপকূলে আছড়ে পড়ে হারিকেনের শক্তিসম্পন্ন প্রবল এক ঘূর্ণিঝড়। কুতুবদিয়ার ওপর দিয়ে ১২ থেকে ২০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানে। এতে কুতুবদিয়াসহ লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল কক্সবাজার, মহেশখালী, চকরিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, সীতাকুন্ড পতেঙ্গাসহ উপকূলীয় এলাকা। বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।উপকূলীয় এলাকায় প্রাণ হারায় মোট ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। সবচেয়ে বেশি মানুষ ও অসংখ্য গবাদিপশু মারা যায় কুতুবদিয়ায়। নিখোঁজ হয় অসংখ্য মানুষ। দ্বীপের এমন কোনো বাড়িঘর নেই যেখানে মানুষ মারা যায়নি। বছর ঘুরে দিনটি এলে কান্নার রোল পড়ে স্বজন হারা বাড়িতে।১৯৯১ সালের পর ৩৩ বছর পার হলেও নির্মাণ করা হয়নি স্থায়ী বেড়িবাঁধ। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণের আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। এ দিনটির স্মরণে নানা সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে উপকূলের মানুষ।কুতুবদিয়া বড়ঘোপ আজম কলোনির বাসিন্দা ভুক্তভোগী মিনু আরা, মোস্তাক, শাহাব উদ্দিন বলেন, আমরা ছেলেমেয়ে আট সন্তান হারিয়ে নিঃস্ব। ২৯ এপ্রিল এলে আমাদের সেই ভয়াবহতার রাতের কথা মনে হয়ে ভয়ে কেঁপে উঠি।উপকূলীয় ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আকবর খান বলেন, ১৯৯১ এর ঘূর্ণিঝড়ের সচিত্র খবর সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে দেখে শিউরে ওঠে গোটা বিশ্ব। সাহায্যের হাত বাড়ান দেশি-বিদেশিরা। দিনটির স্মৃতি কুতুবদিয়া উপকূলবাসীর কাছে দুঃসহ বেদনার। তবে এখনো লন্ডভন্ড হওয়া কুতুবদিয়া মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি। কারণ ৩৩ বছর পরেও একটা স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মিত হয়নি উপকূলে।