নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিন ঝিমিয়ে পড়া ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম আবারও সচল হতে শুরু করেছে গত ফেব্রুয়ারি থেকে। নতুন নতুন উদ্যোগকে সামনে রেখে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে নিরাপদ ও পর্যটকদের জন্য স্বস্তিদায়ক করে তুলতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে।
ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ২০ জন হারিয়ে যাওয়া শিশুকে উদ্ধার এবং অন্তত ২৫ জন অপরাধীকে গ্রেফতারের মাধ্যমে পর্যটকদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরে আনছেন তারা। তারাবির নামাজের সময় বিশেষ টহল, হিজড়াদের উৎপাত এবং ভাড়ায় লকার ও মোটরসাইকেলের মতো সুযোগ সুবিধা চালু হওয়ায় পর্যটকরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
২৪ ঘণ্টা দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশ, কক্সবাজার রিজিয়ন ট্যুরিস্ট সূত্রে জানা যায়, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ১৫০ জনের বেশি সদস্য ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি রাশিয়ান পর্যটক মিস মনিকা কবিরসহ অনেকের হারানো মোবাইল ও মানিব্যাগ উদ্ধার করে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার, ওয়াটার রেসকিউ টিম এবং নারী স্কোয়াড গঠন করা হয়েছে। আমরা পর্যটকদের জন্য একটি হেল্পলাইন চালু করার পরিকল্পনা করছি, যেখানে তারা যেকোনো সমস্যা বা অভিযোগ জানাতে পারবেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, তারাবির নামাজের সময় শহরের কয়েকটি রাস্তা নীরব হয়ে গেলে সেখানে ছিনতাইকারীদের হাত থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করতে বিশেষ টহল দিচ্ছে পুলিশ।
হিজড়াদের উৎপাত বন্ধ, সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে হিজড়াদের উৎপাত বন্ধে ট্যুরিস্ট পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে, যা পর্যটকদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। হিজড়াদের কারণে অনেক পর্যটক হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ তাদের সৈকতে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। পর্যটকরা ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা হিজড়াদের হয়রানি বন্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা এবং পর্যটন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন। ভাড়ায় লকার ও মোটরসাইকেলের মতো সুযোগ সুবিধা চালু হওয়ায় পর্যটকরা তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র নিরাপদে রাখতে পারছেন এবং সহজে সৈকত ও শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতে পারছেন।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও ট্যুরিস্ট পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, নিরাপত্তা জোরদার হলে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা জানান, আগে সৈকতে গেলে ছিনতাই, মাদক সেবনকারীদের আনাগোনা ও বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হতে হতো। কিন্তু ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতায় এখন তারা নিরাপদ বোধ করছেন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ট্যুরিস্ট পুলিশকে সব ধরনের সহযোগিতা করছে। পর্যটন নগরীকে নিরাপদ ও আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available