বিপ্লব তালুকদার, খাগড়াছড়ি: ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়তই পর্যটকদের আগমন ঘটে খাগড়াছড়িতে। আর এ আগমনকে স্বাগত জানিয়ে খাগড়াছড়ির বিনোদন স্পটগুলো নানান রঙে সেজে প্রকৃতিপ্রেমীদের হাতছনি দিয়ে ডাকছে। আঁকাবাঁকা, উঁচু-নিচু ঢেউ তোলা সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে কালো পিচের সর্পিল রাস্তা ভ্রমণে মন কাড়ে সকলের। মাঝখানে সমতলভূমি চারদিকে ঢেউ তোলা পাহাড়ের দেয়াল, দিগন্ত ছোঁয়া সবুজের সমারোহ, চেঙ্গী নদীর পাড়ে শরতের কাশফুল, চন্দ্র সূর্যের রুপালি স্পর্শ হাতছানি দিয়ে ডাকে। যেখানে আকাশ ছুঁয়েছে মাটিকে আর পাহাড়ের বুকভেদ করে পূর্ণিমার চাঁদ উঠে। সে প্রকৃতির রাণী হলো খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা। চট্টগ্রাম হতে এক/দেড় ঘণ্টা আসলেই দেখা মিলবে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলা আর ঢাকা হতে পাঁচ/ছয় ঘণ্টা পর থেকে দেখা মিলে রামগড় উপজেলার।
আর এখানে প্রবেশ করলেই দেখা যায় দু’পাশ জুড়ে রয়েছে অসংখ্য সবুজ গাছপালা, পাহাড়, বনের জীববৈচিত্র। রাস্তার দু’ধারে বনের পাশে দেখা যায় নানা প্রজাতির প্রাণী।
এখানে রয়েছে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রহস্যময় সুরঙ্গ, জেলা পরিষদ পার্ক, পানছড়ি অরণ্য কুটির, দেবতা পুকুর, তৈদু ছড়া ঝরনা, চা বাগান, পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, বাগাইহাট ১০নং ঝর্ণা (দীঘিনালা), হাতিমাথা পাহাড়, রিছাং ঝর্ণা, বিজিবির জন্মভূমি (রামগড়), জল পাহাড় (মাটিরাঙা), রাবার ড্যাম (পানছড়ি)। জেলা সদরের নিউজল্যান্ডের সবুজ সমারোহ মন কাড়ে সকলের। এছাড়াও বিভিন্ন সৌন্দর্য দেখতে দেখতে মনজুড়ে যাবে আপনার। শহর থেকে একটু দূরে স্বস্তির নির্মলের জন্য, মনকে সতেজ করার জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ হতে আসতে শুরু করছে অসংখ্য পর্যটক। শুধু তাই নয়, দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রী, বিচারপতি, কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, পর্যটক চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ির সৌন্দর্য উপভোগ করে ঘুরে গেছেন। যারা একবার এ সৌন্দর্য উপভোগ করে গেছেন বারবার শীত আসলেই তাদের মন আবার ফিরে আসতে চায় এ খাগড়াছড়িতে। বারবার মনেহয় খাগড়াছড়ি যেন তাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র: অপূর্ব সৌন্দর্য দর্শনীয় স্থান খাগড়াছড়ি আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র। ১০০০ ফুট উঁচু আলুটিলা পাহাড়ের ওপর এই পর্যটন কেন্দ্র থেকে পুরো খাগড়াছড়ি শহর দেখা যায়। পর্যটন কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে দেখবেন আকাশ পাহাড়ের গায়ে মিশে গেছে। পূর্ণিমার চাঁদ উঠার সময় এই পর্যটন কেন্দ্রে পূর্ব আকাশের দিকে তাকালে মনে হবে পাহাড় থেকেই জন্ম হচ্ছে চাঁদের। পর্যটন কেন্দ্রের পাশে চেঙ্গী নদী পর্যটকদের চোখ জুড়িয়ে দেয়। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে রয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বিশ্রামের জন্য পাকা ছাউনি, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, সড়ক ও জনপথ বিভাগের রেস্ট হাউজ আর বৌদ্ধদের উপাসনালয় আলোক নবগ্রহ ধাতু চৈত বৌদ্ধবিহার।
রহস্যময় সুরঙ্গ: শুধু বাংলাদেশেতো বটেই পৃথিবীর অন্য কোনো দেশেও এ রকম প্রাকৃতিক সুড়ঙ্গ পথের খুব একটা নজির নেই। রহস্যময় ও আকষণীয় দর্শনীয় স্থান হচ্ছে আলুটিলা পাহাড়ের পাদদেশের এই গুহা। প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি সুড়ঙ্গ পথ পাহাড়কে এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত ভেদ করেছে। চারদিকে পাহাড়ের দেয়াল বেষ্টিত গুহাটির দৈর্ঘ্য ১০০ মিটার। ঘুটঘুটে অন্ধকার এই গুহার উপর থেকে ঝির ঝির শিরশির করে আশা পানি পা ধুইয়ে দেয় পর্যটকদের। গুহার ভেতর প্রবেশ করতে হয় মশাল নিয়ে। পর্যটন কেন্দ্রেই ৫-১০ টাক দিয়ে পাওয়া যায় এই মশাল। গুহার প্রবেশদ্বার পর্যন্ত রয়েছে পাকা সিঁড়ি। আজব এই গুহার সৃষ্টি রহস্য এখনো অজানা। উপমহাদেশের একমাত্র প্রাাকৃতিক এ সুড়ঙ্গ জেলার প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।
রিছাং ঝর্ণা: আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র থেকে ২ কিলোমিটার দূরে এই ঝর্ণাটি। আলুটিলা পাহাড়ের পাদদেশেই প্রকৃতির নিপুণ কারুকাজে গড়া এই ঝর্ণার পানি আঝোর ধারায় ঝরছে ৩০-৩৫ হাত উপর থেকে। এখানে পাশাপাশি রয়েছে দুটি ঝর্ণা। ঝর্ণা দুটিকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিদিন পিকনিক করতে আসে আনন্দপিপাসু পর্যটকরা। স্থানীয় মারমা স¤প্রদায়ের ভাষায় এর নাম হয়েছে রিছাং ঝর্ণা। রি অর্থ পানি আর ছাং অর্থ গড়িয়ে পড়া। স্থানীয় ত্রিপুরা স¤প্রদায়ের ভাষায় এই ঝর্ণাকে বলা হয় তেরাং তৈ কালাই। অর্থাৎ খাড়া পাহাড়ের পানি। এই ঝরনার একটু নিচে ‘নিউ ঝর্ণা’ নামে আরো একটি ঝর্ণা রয়েছে।
জেলা পরিষদ পার্ক: খাগড়াছড়ি জেলার পর্যটন শিল্পে নতুন সংযোজন জেলা পরিষদ পার্ক। শহরের খুব কাছাকাছি জিরো মাইল সংলগ্ন ২২ একর ভুমিতে এই পার্ক। জেলা পরিষদ পাকের্র অন্যতম আকর্ষণ রাঙ্গামাটির আদলে তৈরি কৃত্রিম ঝুলন্ত সেতু। প্রতিদিনই শত শত পর্যটক ভিড় জমায় এই ঝুলন্ত সেতু দেখার জন্য। এখানে পিকনিক করার জন্য সুবিধা সম্বলিত রেষ্ট হাউজ রয়েছে। এছাড়াও এখানে আসলে উঁচুনিচু পাহাড়ের গা ঘেঁষে সারিসারি ফলের বাগান যেকোন পর্যটকের মন কাড়বেই।
দেবতা পুকুর: খাগড়াছড়ির আরেকটি দর্শনীয় স্থানের নাম নুনছড়ির দেবতা পুকুর। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা দেড় হাজার ফুট। খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে খাগড়াছড়ি মহালছড়ি সড়কের নুনছড়ি নামক স্থানে এর অবস্থান। দেড় হাজার ফুট উপরে পাহাড়ের চুড়ায় অবস্থিত ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২০০ মিটার প্রস্থ এই পুকুরে ১২ মাস একই সমান পানি থাকে। এত উপরে সৃষ্ট এই পুকুরে ১২ মাস পানি থাকায় স্থানীয় আদিবাসীরা মনে করে এই পুকুর কোন দেবতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অনেকে মনে করে পুকুরে আছে গুপ্তধন আর দেবতারা তাই পাহাড়া দিচ্ছে। পুকুরের পাড়ে রয়েছে বিশাল আকৃতির কয়েকটি পাথর। এই পাথরকে ঘিরেও কৌতুহলের কমতি নেই পর্যটকদের।
তৈদুছড়া ঝর্ণা: খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে তৈদুছড়া ঝর্ণা। দীঘিনালা সদর থেকে প্রায় ৬ কিঃ মিঃ দুরে ঝর্ণাটির অবস্থান। এ ঝর্ণাকে ঘিরে রয়েছে আরো ৩টি ছোট ঝর্ণা এবং ২টি মনোমুগ্ধকর জলপ্রপাত। সব মিলিয়ে প্রায় ৪ কিঃ মিঃ এলাকা নিয়ে আকর্ষণীয় এক পর্যটন স্পট। ঝর্ণাটির নাম তৈদুছড়া ঝর্ণা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা আসেন এই ঝর্ণা দেখতে।
সাজেক ভ্যালি: দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা সাজেক ইউনিয়ন ভারতের মিজোরাম রাজ্য সন্নিহিত প্রাকৃতিক রূপে রূপময় ও অপার সম্ভাবনার জনপথ সাজেক ভেলী। সেই সাজেকের সৈন্দর্যের লীলা ভূমি রুইলুই ও কংলাক পাহাড়। এই দুই পাহাড় সমুদ্র পৃষ্টা থেকে প্রায় দুই হাজার সাত শত ফুট উপরে। এ পাহাড়ের চুড়া থেকে মিজোরামের লুসাই পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য, আকাশ-পাহাড়ের মিতালি ও শুভ্র মেঘের খেলা দেখে বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়বে যে কোন পর্যটক। এক সময় সাজেক যাওয়া ছিল অনেকটা স্বপ্ন। সেনা বাহিনীর ১৯ ইসিবি’র সুবাধে বছর কয়েক আগে সাজেক পর্যন্ত রাস্তা হয়েছে। সে সাথে বদলে যেতে শুরু করেছে সাজেকবাসীর জীবন চিত্র।
সাজেক ভ্যালি নয়নাভিরাম দুই জায়গার নাম রুইলুই ও কংলাক পাহাড় যা সাধারণ পর্যটকদের কাছে সাজেক নামে পরিচিত। এই দুই জায়গা থেকে একই ভাবে সূর্যোদয় ও সূর্যোস্ত এক সাথে অবলোকন করা যায়। পাহাড়ের ভাঁজে-ভাঁজে শুভ্র মেঘের খেলা সত্যি অপূর্ব। দেশের সর্ব বৃহৎ জেলা রাঙ্গামাটি সর্ববৃহৎ উপজেলা বাঘাইছড়ি উপজেলার এক ইউনিয়ন সাজেক এবং এটি দেশের সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন। লোক সংখ্যা মাত্র হাজার দশেক। সাজেকের রয়েছে,ঢেউ খেলানো অসংখ্য উচ্চু-নিচু পাহাড় বেষ্টিত হৃদয়গ্রাহী সবুজ বনানী পূর্ণ। সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে নয়নাভিরাম নানান দৃশ্য। রাস্তার দু’ধারে-চোখে পড়বে আদিবসীদের বসত বাড়ী বিচিত্রময় জীবন ধারা।
পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র: জেলার দিঘীনালা সড়কের আড়াই মাইল নামক স্থানে এই গবেষণা কেন্দ্র। ভিতরে নানা জাতের বিভিন্ন বাগান গাছগাছালি, বট বৃক্ষ, বাগানের একটু ভিতরে একটি লেক এবং লেকের ওপর ছোট সেতু সব মিলিয়ে এক মনোরম পরিবেশ। শীতে এই লেকে হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমন ঘটে। লেকের পারে এসে দাঁড়ালে কিছক্ষণের জন্য আপনার মনে হতে পারে রাঙ্গামাটির লেকের পারে আছেন। লেকে ঘুরতে পর্যটকদের জন্যে রয়েছে বোট।
শতবর্ষী পুরোনো বটবৃক্ষ: মাটিরাঙ্গা উপজেলার খেদাছড়ার কাছাকাছি এলাকায় এ শতবর্ষী পুরোনো বটবৃক্ষ অবস্থিত। এ প্রাচীন বটবৃক্ষ শুধু ইতিহাসের সাক্ষী নয় এ যেন দর্শনীয় আশ্চযের্র কোন উপাদান। এ গাছের বয়স নিরূপনের চেষ্টা করা একেবারেই বৃথা। পাঁচ একরের অধিক জমির উপরে এ গাছটি হাজারো পর্যটকের কাছে দারুণ আকর্ষণীয়। শতবর্ষী এই বৃক্ষ দেখতে হলে খাগড়াছড়ি শহড় থেকে বাসে করে মাটিরাঙ্গা বাজার আসতে হবে। সেখান থেকে ২.৫০ কি.মি. পায়ে হেঁটে অথবা মোটর বাইকে করে যেতে হবে।
হাতির মাথা আকৃতির পাহাড়: প্রকৃতির আরো এক রহস্য হাতির মাথা আকৃতির পাহাড়। খাগড়াছড়ি পানছড়ি সড়কের পেরাছড়া গ্রামে অবস্থিত পাহাড়টিকে দেখতে ঠিক হাতির মাথার মতো। কয়েকটি ছোট ছোট পাহাড় পার হয়ে ৩০-৩৫ ফুট উচ্চতার এই পাহাড়টিতে উঠতে হয় বাঁশের সিড়িঁ বেয়ে। এই বাঁশের সিঁড়িতে উঠা মানে হাতির শুরের উপর ওঠা। তারপর সামনে চলা মানে শুর বেয়ে হাতির মাথায় অর্থাৎ পাহাড়ে ওপরে উঠা। পাহাড়ে উঠার পর দুপাশে কয়েক শত ফুট গিরিখাত। পর্যটকদের মনে একটু ভয়ের সঞ্চার হতে পারে। পাহাড়ে উঠার পর দেখা যায় প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্য।
পানছড়ি অরণ্যকুটির: জেলার পানছড়ি উপজেলায় নির্মিত হয়েছে এই শান্তি কুটির। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধমূর্তি। যা দেখার জন্য প্রতিদিনই ভিড় করছে শত শত পর্যটক।
ঝর্নাটিলা ও বিরাশি টিলা: জেলার পানছড়ি-তবলছড়ি সড়কের গৌরাঙ্গ পাড়া এলাকায় ঝরনাটির অবস্থান। এই ঝরনার পানিতে ভেসে আসে চিংড়ি মাছ। পাহাড়ের পাথরগুলোতে প্রকৃতি যেন নিজের হাতে নকশা করে রেখেছে। এই পাহাড় ও দেয়ালের একটু দূরেই রয়েছে বিরাশি টিলা। এই টিলার উপরে উঠলে ভারতে ত্রিপুরা রাজ্য দেখা যায়। এই পাহাড়ের সাথে ৮২টি টিলারও সংযোগ রয়েছে।
ভগবান টিলা: মাটিরাঙা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এই ভগবান টিলা। খাগড়াছড়ি সবচেয়ে বেশি উচ্চতার এই পাহাড়টির উচ্চতা ১৬০০ ফুট। নিবিড় অরণ্যের এই পাহাড়ে উঠলে ভারত ও বাংলাদেশ একই সঙ্গে দেখা যায়। এই পাহাড়ের কোনো এক জায়গায় ছবি তুললে ওয়াশ করানোর পর তা কঙ্কাল হয়ে যায়। তবে সেই নির্দিষ্ট জায়গাটি চিহ্নিত বা এর সত্যতা আজো রহস্যই জন্ম দেয়। এই টিলায় যেতে হলে তাইন্দং বিডিআর ক্যাম্প থেকে অনুমতি নিয়ে যেতে হয়।
মানিকছড়ি রাজবাড়ি: সারা দেশে রাজা প্রথা চালু না থাকলেও তিন পার্বত্য জেলায় এখনো আছে ঐতিহ্যবাহী রাজ প্রক্রিয়া। খাগড়াছড়ি চট্টগ্রাম সড়কের মধ্যবর্তী মানিকছড়িতে মারমা রাজার রাজবাড়ি তৎকালীন পার্বত্য জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। রাজার মূল্যবান সিংহাসন, মূল্যবান অস্ত্রশস্ত্র ও অনেক প্রাচীন স্মৃতি রয়েছে এখানে। এই রাজবাড়ি এবং তাৎকালীন মং রাজার স্বাধীনতা যুদ্ধে যথেষ্ট অবদান ছিল।
বিজিবির জন্মভূমি রামগড়: খাগড়াছড়ি জেলার অন্যতম প্রাচীন সীমান্ত শহর রামগড়। এ শহর থেকেই বিডিআর বা বর্তমানে বিজিবির যাত্রা শুরু হয়। তাই রামগড়কে বলা হয় বিজিবির জন্মভূমি। এখানে রয়েছে অনেক স্মৃতিবিজড়িত স্থান, স্থাপনা, সীমান্ত বিভক্তকারী ফেনী নদী। পর্যটকদের মন কাড়ে নিমিষেই। রয়েছে কৃত্রিম লেক, ঝুলন্ত সেতু, বোটানিক্যাল গার্ডেন, মনোমুগ্ধকর ফুলের বাগান। সব মিলিয়ে মনে হবে এ যেন এক স্বগর্রাজ্য।
রামগড় সীমান্তের চা বাগান: খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় সীমান্তের গা ঘেঁষে খাগড়াছড়ি ফেনী সড়কের দুই ধারে গড়ে উঠেছে বিশাল চা বাগান। এই চা বাগান খাগড়াছড়ি পর্যটনকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। প্রতিদিন দলে দলে পর্যটক ও পিকনিক পার্টির ভিড় জমে এই চা বাগানে। বিশাল এলাকাজুড়ে এই চা বাগানে আসলে পর্যটকরা বুঝতেই পারবে না তা সিলেট আছেন না খাগড়াছড়িতে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো: শহিদুজ্জামান বলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাটি দেখতে খুবই মনোমুগ্ধকর। এখানে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জেলায় অনেক গুলো পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র। এটিসহ সব পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে আমরা নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছি। পর্যটকরা আমাদের এখানে এসে যেন স্বাচ্ছন্দ্যে বেড়াতে পারে সে জন্য আমরা সব ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। পর্যটকদের জন্য ২০-২৫টি হোটেল, রিসোর্ট তৈরি আছে। ভিআইপিদের জন্য জেলা সার্কিট হাউস, উন্নয়নবোর্ড রেস্ট হাউজ, পর্যটন মোটেলসহ আরও কিছু রিসোর্ট সদা প্রস্তুত। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য খাগড়াছড়িতে টুরিস্ট পুলিশের ব্যবস্থা রয়েছে। যারা বিশেষভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকেন। আশা করি পর্যটকরা এখানে এসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available