রাঙামাটির কাউখালীতে তৃতীয় লিঙ্গের শিলাকে গলা কেটে হত্যা
রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটি কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়াতে তৃতীয় লিঙ্গের শিলাকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের নিজ বাসা থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।হিজড়া শিলার বাবার বাড়ি চট্টগ্রাম হাটহাজারীতে বলে জানা গেছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিলা তৃতীয় লিঙ্গের হওয়াতে চট্টগ্রাম হাটহাজারী বাবার বাড়ি হওয়ার পরও নিজ বাড়িতে থাকতেন না। অনেক আগে থেকে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নে বসবাস করতেন। শিলা উপজেলার তৃতীয় লিঙ্গের লিডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন।উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা উত্তোলন করতেন শিলা। তবে চার-পাঁচ বছর আগে শিলা সার্জারি করে শারীরিক পরিবর্তন ঘটানোর পর থেকে নিজে টাকা তুলতেন না। টাকা তোলার দায়িত্ব আরেক হিজড়াকে দিয়ে নিজে বিভিন্ন রকম স্টেজ শো করতেন।স্থানীয়রা আরও জানান, শিলা সার্জারী করে শারীরিক পরিবর্তন করানোর পর স্থানীয় এক ছেলেকে বিয়ে করেন। কিন্তু ছেলেটি মাদকাসক্ত হওয়াতে বনিবনা না হওয়ায় ডিভোর্সের বিষয়টি আদালত অবধি গড়ায়। এর পর থেকে মাঝে মাঝে সেই স্বামী আসতেন বাসায়।তবে বেশ কিছুদিন ধরে শিলা বেতবুনিয়াতে থাকতেন না, বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতেন। মাঝে মাঝে বাড়িতে আসলে রাতে তার বাসায় অপিরিচিত ছেলেদের নিয়ে মাদকের আড্ডা বসাতেন। ২ ফেব্রুয়ারি রাতে ১১টার পর অপরিচিত ৫ লোককে বাসায় ডুকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। তবে তারা কখন বের হয়েছে সেটা কেউ দেখিনি বলে জানা গেছে।সোমবার বিকেলে শিলার বাড়ির পাশে থাকা আরেক হিজড়া তার কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে সবাইকে খবর দেন। এর পর সবাই দরজা খুলে দেখতে পান, তার গলাকাটা মরদেহ বিছানায় পড়ে আছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, শিলা নামে এক তৃতীয় লিক্ষের (হিজড়া) ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে কাউখালী থানা পুলিশ। এটি একটি হত্যাকাণ্ড। আমরা বেশ কিছু আলামত জব্দ করেছি। তবে ধারণা করা হচ্ছে রাতে হিজড়া শিলার বাসায় মাদকের পার্টি হচ্ছিলো। তার মরদেহের পাশে মাদক সেবনের আলামত পাওয়া গেছে।প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে রাতে কয়েকজন ব্যক্তি সহ শিলা মাদকের পার্টি করছিলো। কোনো এক সময় তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার গলায় ও পেটে কাটার আলামত পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্ত ও আইনি কাজ শেষে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।