• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বিকাল ০৫:২৩:৪২ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বিকাল ০৫:২৩:৪২ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

রাতের আঁধারে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বেতাগী প্রেসক্লাবের ভবন

বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার বেতাগীতে রাতের আঁধারে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রেসক্লাবের ভবন। লুটে নেওয়া হয়েছে  ইট, সুরকি ও রড। অভিযোগের তীর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল সিকদারের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন ও বরগুনা জেলা প্রশাসক এবং ইউএনও‘র কাছে এর প্রতিকার চেয়েছেন সাংবাদিকরা।জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর শনিবার রাতের আঁধারে শারদীয় দুর্গোউৎসবের জাতীয় বন্ধের সময় বেতাগী পৌর শহরস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন বেতাগী প্রেসক্লাবের ভবন গুঁড়িয়ে তার ইট, সুরকি ও রড লুটে নেওয়া হয়। এতে অন্তত ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।এর প্রতিবাদে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ঝড় উঠে। এ ঘটনার পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল সিকদারের বোধদয় না হওয়ায় এবং তার সাথে একাধিকবার মুঠেফোনসহ নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে না পাওয়ায় অবশেষে স্থানীয় সাংবাদিকরাও সোচ্চার হন। ১৪ অক্টোবর সোমবার বিকেলে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলমের সাথে বেতাগী প্রেসক্লাবের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে এর প্রতিকার দাবি করেন, এ সময় তিনি এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।সোমবার সকাল থেকে এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত উপজেলা সহকারী কমিশনারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাক্ষাৎ মেলেনি। অবশ্য নাম না প্রকাশের শর্তে উপজেলা ভূমি অফিসের এক কর্মচারি জানান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল সিকদারের পদোন্নতি হওয়ায় তিনি শনিবার জাতীয় বন্ধের দিনেও রাত অবধি এ উপজেলায় শেষ কর্মদিবস করে ৬ মাসের প্রশিক্ষণে ঢাকায় চলে যান।এর আগে রোববার দুপুরে বেতাগী প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয় সভা ডেকে এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন প্রেসক্লাবের জায়গায় গণমাধ্যম কর্মীরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন এবং পরবর্তীতে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় গিয়ে অভিযোগ তুলে ধরেন।প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন সাপ্তাহিক বিষখালী পত্রিকার সম্পাদক আব্দুস সালাম সিদ্দিকী, বেতাগী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুল ইসলাম মন্টু, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লায়ন শামীম সিকদার, সহ-সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আবুল বাসার খান, বেতাগী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন খান, দপ্তর সম্পাদক অলি আহমদ, দৈনিক গণকণ্ঠের প্রতিনিধি প্রভাষক শাহাদাত হোসেন, দি কান্ট্রি টুডের প্রতিনিধি আরিফ সুজন, দৈনিক আমাদের সময় প্রতিনিধি সজল মাহামুদ, দৈনিক আজকের দর্পনের প্রতিনিধি খাইরুল ইসলাম মুন্না, বিশ্বমিডিয়ার প্রতিনিধি ইমরান হোসেন প্রমুখ।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বাজার থেকে স্বাভাবিকভাবে লোকজন চলে যাওয়ার পর ঐদিন রাতে উপজেলা ভূমি অফিসের জনৈক কর্মচারী পাহারায় থেকে লোক লাগিয়ে ভারী ভেকু মেশিন দিয়ে প্রেসক্লাবের ভবন ভেঙে তছনছ করা হয়।স্থানীয় সাংবাদিকরা জনান, ১৯৮৫ সালে বেতাগী প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীণ সময়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক, থানা নির্বাহী অফিসার, খাদ্য উপমন্ত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় বেতাগী খাসকাচারি মাঠের পূর্বপাশে জায়গা বাছাই করে। সেখানে প্রাথমিক পর্যায় একটি কাঠের ঘর উত্তোলন করা হয়। সেখান থেকেই স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সহায়তা প্রদান বিশেষ করে মহান ভাষা দিবসে সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে সকল কর্মসূচি পালন করতেন।এক পর্যায়ে দুই তলা বিশিষ্ট প্রেসক্লাবের পাকা ভবন নির্মাণ কাজে হাত দেওয়া হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনকালে তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য, বরগুনা জেলা প্রশাসক, থানা নির্বাহী অফিসার, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।বেতাগী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম সিদ্দিকী বলেন, ভবন পাকা করার পরেও তখনকার সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ কিংবা কোনো ধরনের বাধা দেওয়া হয়নি। এটা কি প্রশাসনের বৈধতা প্রদান ও সম্মতির অংশ নয়? তার পরেও যদি প্রশাসনের সরকারি কাজে জমির প্রয়োজন হয়, তা সাংবাদিকদের ডেকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেত। রাতের আঁধারে না করে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে যেভাবে ভবনের কাজ শুরু করা হয়েছে সে ভাবেই করা যেতো।বেতাগী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন খান অভিযোগ করেন, ভবনের নির্মাণ কাজে দীর্ঘসময়ের প্রয়োজন ও সম্পন্ন না হওয়ায় বেতাগী পৌরসভার পক্ষ থেকে কাজ সম্পন্নকরণে একটি টেন্ডারও দেওয়া হয়। যা এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় গত ১২ অক্টোবর দিবাগত রাতের আঁধারে প্রেসক্লাবের ভবনটি সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল সিকদার ভেঙ্গে দিয়েছেন।বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক আহমদ এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তিনি যতটুকু জেনেছেন রাতের আঁধারে নয়, বিকেল থেকেই ভবনটি ভাঙা শুরু হয়। পরে তা অপসারণে রাত পর্যন্ত গড়িয়েছে। এর পরিত্যাক্ত মালামাল উদ্ধার করে তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আর যা যা করা দরকার এ বিষয়ে তিনি সব কিছুই করবেন।

জেলার ইতিহাস


দর্শনীয় স্থান