পীরগঞ্জে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ
রংপুর ব্যুরো: রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ধর্মদাসপুর আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগের বৈধতা ও স্বাক্ষর জাল জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।জানা গেছে, উপজেলার খেজমতপুর এমাজিয়া দাখিল মাদ্রাসা কতৃর্পক্ষ বিগত ১৯৯৬ সালের ২৪ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন কর্তৃপক্ষ সহকারী শিক্ষক হিসেবে মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডলকে নিয়োগ প্রদান করেন। পরবর্তীতে উক্ত শিক্ষক ১ মে ১৯৯৬ সালে এমপিওভুক্ত হন। যার ইনডেক্স নং: জ-৩৮৯৯১২। কিন্তু ওই শিক্ষককে নিযোগ প্রদানের সময়ে বিধি অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা সকল বিভাগে ২য় বিভাগসহ স্নাতক পাশ হওয়ার কথা থাকলেও সে বিধি মানা হয়নি। অথচ, উক্ত শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাস্তবে ১৯৮৯ সালের দাখিল পরীক্ষার ফলাফল ২য় বিভাগ, ১৯৯১ সনের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফলাফল ৩য় বিভাগ এবং ১৯৯৩ সনের স্নাতক পাশ পরীক্ষার ফলাফল ৩য় বিভাগ ছিল। এ ছাড়া বিধি অনুয়ায়ী নিয়োগ প্রদানের সময়ে বিএড পাশের যোগ্যতা থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তিনি নিয়োগ প্রাপ্তির পর ২০০০ সালে বিএড পাশ করেন।এদিকে বিগত ২৯ জুন ২০১১ সালে মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডল উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানে ইস্তেফা পত্র প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় ৩০ জুন ২০১১ উপজেলার ধর্মদাসপুর আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্বের ইনডেক্সেই সহকারী শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্ত হন। উক্ত শিক্ষক ২০১২ সালে ধর্মদাসপুর আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এমপিওভুক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত খেজমতপুর এমাজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে বহাল না থেকেও নিয়মিত উপস্থিতি স্বাক্ষর দেখিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বেতন ভাতাদি উত্তোলন করেছেন।এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য মোনাজ্জল হোসেন জানান, শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডল আমার নাম ভাঙ্গিয়ে ও স্বাক্ষর জাল করে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ওই মাদ্রাসার নন এমপিওভুক্ত এবতেদায়ী শাখার প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে শিক্ষা উপদেষ্টা, মহাসচিব মাদ্রাসা অধিদপ্তর ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন, যা আমার অজানা। এছাড়াও ওই শিক্ষক গাইবান্ধা জেলার সাদ্যুল্লাপুর উপজেলার মধ্যপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারের স্বাক্ষর জাল করে ওই মাদ্রাসার রুহুল আমীন নামের শিক্ষকের ইস্তফা পত্র ও ছাড়পত্র নিজ হাতে লিখে তার ইনডেক্স নম্বর ব্যবহার করে অন্য এক প্রতিষ্ঠানের রুহুল আমিন নামের একজনের এমপিওভুক্ত করেন, যা পরবর্তীতে ধরা পড়ে।তিনি আরও জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ নানা শিক্ষা দপ্তরে ৩ বছর পূর্বের ওই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর কম্পিউটারের মাধ্যামে স্ক্যান করে অভিযোগ দায়ের করেন ওই শিক্ষক। তার অভিযোগে জনৈক মমদেল নামের এক ব্যক্তির স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে। অথচ, সে ব্যক্তি গত ৩ বছর পূর্বেই মারা গেছেন।অভিভাবক ও এলাকাবাসী জানায়, উক্ত শিক্ষক প্রভাবশালী হওয়ার কারণে মাদ্রাসায় নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কতৃর্পক্ষ তার বিরুদ্ধেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ মন্ডলের সঙ্গে কথা হলে বলেন, এক শ্রেণির মানুষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।