• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ দুপুর ০২:৪৭:১৯ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ দুপুর ০২:৪৭:১৯ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

ঘর দেয়ার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে তিন কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে ভুয়া এনজিও

রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার ও জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের দুই হাজার মানুষের কাছ থেকে ঘর দেওয়ার কথা বলে  প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে  ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এন্টারপ্রাইজ (IDE) নামের একটি ভুয়া এনজিও।জানা যায়, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের নিমাইমারী গ্রামে দুটি রুম সাত মাস আগে ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেন কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার ফিল্ড অফিসার রেজাউল করিম রেজা, একাউন্টস অফিসার সাজু আহমেদ, ম্যানেজার মো. রনি আহমেদ ও অডিট ম্যানেজার কামরুজ্জামান।এরপর তারা অফিসে বিভিন্ন গ্রাম থেকে ১৩ জন কর্মী নিয়োগ দেন, যাদের মাধ্যমে থ্রি কোয়ার্টার ঘর ও শিশু ভাতার কার্ড দেয়ার কথা বলে চর আমখাওয়া ও ডাংধরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন অফিসের লোকজন।  ভুক্তভোগী মালা খাতুন বলেন, ‘আমি ভিক্ষা করে খাই। সেই অফিসের কর্মী পারভীনের কথা শুনে অনেক কষ্ট করে ৪৫ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু এখন শুনি অফিসের লোক নাকি পালাইয়া গেছেগা। এখন আমি কী করবো, আমার সব শেষ, সব নিয়া গেলো।’অন্য ভুক্তভোগী আলামিন বলেন, ‘স্থানীয় মো. বকতিয়ার (বক্তো মেম্বার) এর কথা শুনে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছি পনেরো হাত ঘরের জন্য। আমায় শুধু খাম দিছে, এখন শুনি কোম্পানি নাকি পলাইয়া গেছেগা।‘ওই অফিসে কর্মরত স্থানীয় আসমাউল হুসনা নামে এক কর্মী বলেন, ‘বিভিন্ন গ্রাম থেকে আমাদের ১৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকার মধ্যেই আমাদের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছিল। আমাদের মূল কাজ ছিল, গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষকে ঘর ও শিশু ভাতার কার্ডের নাম দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে অফিসে জমা দেওয়া। বিশ হাত ঘরের জন্য অফিস নির্ধারিত  ৪০ হাজার টাকা ও শিশু ভাতার জন্য ৭৭৫ টাকা করে অফিসে জমা দিয়েছি আমরা।’তিনি আরও বলেন, ‘অফিসের নির্ধারিত টাকার চেয়েও অনেক কর্মী মানুষের কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়েছে।’অনুসন্ধানে জানা যায়, এই অফিসের প্রায় সব কাজ অলিখিতভাবে পরিচালনা করতো মো. বকতিয়ার (বক্তো মেম্বার)। এই বিষয়ে উনার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে এই অফিসের কর্মী হিসেবে কাজ করতো। ডাংধরা  ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান ও চর আমখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া এই অফিসের একটি কাগজে সাইন দিয়েছে। যেটা আমরা দেখে বিষয়টিকে সত্যি ভেবে মানুষের কাছ থেকে টাকা এনে অফিসে জমা দিয়েছি।’তিনি আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যানরা যেহেতু বিষয়টি জানে তাই কোন সমস্যা হবে না বলে ভেবেছি আমরা।’এই বিষয়ে ডাংধরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে আমার কাছে কিছু মানুষ অভিযোগ করেন, এই অফিস থেকে ঘর দেওয়ার নামে ৪৫-৫০ হাজার টাকা নিচ্ছে। আমি তাদের ডেকেছিলাম, তাদের কাজ সঠিক আছে কিনা জানার জন্য। পরে আমি ও চর আমখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া মিলে তাদের কাছে জানতে পারি ২০ হাত ঘরের জন্য ৪০ হাজার টাকা অফিস নিয়ে থাকে। তখন আমরা ১৫ হাত ঘরের জন্য একটা আবেদন দেই। কিন্তু এখন শুনতেছি সেই কোম্পানি পালিয়ে গিয়েছে।এ ছাড়া রাজীবপুর উপজেলার আলফাজ বলেন, ‘আমি রিং সেলাব তৈরি করে ব্যবসা করি। ওই এনজিও‘র ম্যানেজার রনিসহ কয়েকজন লোক এসে নয় লক্ষ টাকার মাল বাকি নেয়, টাকার জন্য চাপ দিলে পরে চার লক্ষ টাকা পরিশোধ করে। আর বাকি টাকার জন্য চাপ দিলেও আজ না কাল তালবাহানা করলে আমি কোনো উপায় না পেয়ে রাজীবপুর থানায় একটি অভিযোগ করি।’এ ব্যাপারে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, ‘এই এনজিও'র ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

জেলার ইতিহাস


দর্শনীয় স্থান